সুপ্রভাত ডেস্ক »
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় রাতে রাজধানী নয়াদিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেসে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দেশটির প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা মনমোহন সিং। তার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, হঠাৎ করেই নিজ বাড়িতে চেতনা হারিয়ে ফেলেছিলেন কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা মনমোহন সিং। হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসকদের সকল প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তার চেতনা ফেরানো যায়নি। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা ভারতে। শোক জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, বিরোধী দলীয় নেতা রাহুল গান্ধীসহ রাজনীতিকরা। ১৯৩২ সালে অবিভক্ত ভারতের পাঞ্জাবে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৪৮ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ। ১৯৫৭ সালে স্নাতক। এর পরেই, ১৯৬২ সালে ডক্টর সিং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নাফিল্ড কলেজ থেকে অর্থনীতিতে ডি. ফিল পান।
তাকে ভারতের অর্থনৈতিক সংস্কারের জনক হিসেবে অভিহিত করা হয়। তার বই ‘ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট ট্রেন্ডস অ্যান্ড প্রসপেক্টক্স ফর সেল্ফ সাসটেন্ড গ্রোথ’ ছিল ভারতের অন্তর্মুখী বাণিজ্য নীতির প্রাথমিক পর্বের সমালোচনামূলক বিশ্লেষণ। রাজস্বের বিশাল ঘাটতি গোটা দেশকে পঙ্গু করে দেয়ার মতো জায়গায় নিয়ে গিয়েছিল। সেই সংকট থেকে ভারতকে বের করে এনেছিলেন ড. মনমোহন সিং। শুধু দেশের অর্থনীতিকে রক্ষা করেননি, পৌঁছে দিয়েছিলেন মজবুত জায়গায়।
এর আগে কোন খাতে কতটা উৎপাদন হবে তা ঠিক করতো সরকার। সিমেন্ট, মোটরগাড়ি থেকে শুরু করে প্রতিটি খাতে সরকারি নিয়ন্ত্রণ ছিল। ফলে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে থমকে গিয়েছিল ভারতীয় শিল্পের বৃদ্ধি। এই আমলাতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণের জাল ছিন্ন করে শিল্পের বৃদ্ধিকে উৎসাহ দিয়েছিলেন ড. মনমোহন সিং।
শিথিল করা হয়েছিল বিদেশি বিনিয়োগের ওপর বিধিনিষেধ। ৫১ শতাংশ পর্যন্ত ইকুইটি শেয়ারের জন্য বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে উঠে গিয়েছিল সরকারি অনুমোদনের প্রয়োজনীয়তা। এছাড়া, ১৮টি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র বাদে বাকি সব খাতের জন্য বাতিল করা হয়েছিল শিল্প লাইসেন্স।
নিজের উপর ভরসা ছিল মনমোহন সিংয়ের। নিজের অর্থনীতি জ্ঞানের ওপর ছিল আস্থা। তাই ১৯৯১ সালের বাজেট বক্তৃতায় তিনি দৃঢ় কণ্ঠে বলেছিলেন, সময়োপযোগী কোনো ধারণাকে পৃথিবীর কোনো শক্তি থামাতে পারে না। আরও বলেছিলেন, দেখতে হবে যাতে প্রত্যেক ভারতীয় সুস্থ ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারে।
রাজনৈতিক জীবনে ড. সিং ১৯৯১ সাল থেকে রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন। ১৯৯৮–২০০৪ সাল পর্যন্ত তিনি রাজ্যসভায় বিরোধী দলীয় নেতা ছিলেন। ২০০৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর ২২ মে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন মনমোহন সিংহ এবং ২০০৯ সালের ২২ মে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয়বারের জন্য শপথ নেন।
আন্তর্জাতিক



















































