নিজস্ব প্রতিবেদক :
নগরে আপন বড়ভাইয়ের শিশু সন্তানকে খুনের ঘটনায় গ্রেফতারের পর পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন চাচা জসিম উদ্দিন রাজু। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নগরের ডবলমুরিং থানার হাজীপাড়া এলাকায় বড়ভাই মো. রাশেদের স্ত্রীর সাথে ঝগড়ার জেরে তার ছেলে মেহেরাবকে (৩) জবাই করে নৃশংসভাবে খুন করে চাচা রাজু।
ডবলমুরিং থানার ওসি সদীপ কুমার দাশ জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বড়ভাইয়ের তিন বছর বয়সী শিশুসন্তান মেহেরাবকে খুন করে তার চাচা জসিম উদ্দিন রাজু। এ ঘটনার পর মঙ্গলবার রাত সাড়ে তিনটার দিকে আগ্রাবাদ ঝর্নাপাড়া এলাকায় গ্রেফতার করতে গেলে অভিযুক্ত চাচা রাজু ও তার সহযোগীদের সঙ্গে পুলিশের বন্দুকযুদ্ধ হয়। ওই বন্দুকযুদ্ধে জসিম আহত হয়। পরে তাকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত মো. জসিম উদ্দিন রাজু আগ্রাবাদ হাজীপাড়া এলাকার মনির আহমেদের ছেলে।
ওসি সদীপ জানান, মেহেরাবের মা নিলু আক্তারের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে তার ছেলে মেহেরাবকে গলা কেটে খুন করে জসিম উদ্দিন রাজু। এ ঘটনায় নিলু আক্তার বাদি হয়ে ডবলমুরিং থানায় মামলা করেন।
ওসির দাবি, গভীর রাত সাড়ে তিনটার দিকে নগরীর পশ্চিম ঝর্নাপাড়া জোর ঢেবারপাড় এলাকায় জসিম ও তার সহযোগীদের উপস্থিতির কথা জানতে পেরে অভিযানে যায় পুলিশ। এ সময় তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে আহত অবস্থায় জসিমকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয় পুলিশ। সেখানে বুধবার ভোর ৫টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
ওসি আরও দাবি, গোলাগুলিতে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (পশ্চিম) এএএম হুমায়ুন কবির, ওসি সদীপ কুমার দাশ নিজে, পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ জহির হোসেন এবং দুই উপ-পরিদর্শক (এসআই) অর্ণব বড়ুয়া ও মুহাম্মদ হেলাল উদ্দিন আহত হয়েছেন।
ঘটনাস্থল থেকে দেশে তৈরি একটি এলজি, পাঁচ রাউন্ড কার্তুজ, খুনে ব্যবহৃত একটি বিদেশি ছোরা এবং ৮৭৫ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে ।
পুলিশ জানায়, নিহত জসিম একজন পেশাদার ছিনতাইকারী ও মাদক বিক্রেতা। তার বিরুদ্ধে পুলিশ সদস্য খুন-ছিনতাইসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১৩টি মামলা আছে। ২০১৪ সালের ১৩ জানুয়ারি জসিম ও তার সহযোগীরা মিলে আগ্রাবাদ এলাকায় সিএমপির পুলিশ সদস্য নায়েক ফরিদউদ্দিনকে ছুরিকাঘাতে খুন করে। ২০১৮ সালের ১৪ মে আগ্রাবাদ হাজীপাড়া এলাকার খোরশেদ হত্যা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। জামিনে বেরিয়ে জসিম আবারও বেপরোয়া হয়ে ওঠে।