ভয়ের কিছু নেই, ঘাবড়ালে চলবে না: প্রধানমন্ত্রী

৫% প্রণোদনা পাচ্ছেনসরকারি কর্মচারীরা

সুপ্রভাত ডেস্ক
‘সময়ে সময়ে কালো মেঘ’ দেখা গেলেও সবাইকে অভয় দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভয়ের কিছু নেই। সমস্যা এলেও তা মোকাবিলা করতে হবে। রোববার জাতীয় সংসদে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সমাপনী বক্তব্যে তিনি সবাইকে ‘ঘাবড়ে’ না যেতে এসব কথা বলেন।
অনেক বাধা-বিপত্তি, কোভিড ১৯ ও ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতির প্রভাব মোকাবিলা করে সামনে এগিয়ে যেতে সরকারের দৃঢ় মনোবলের কথাও তুলে ধরেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি এখানে এটুকু বলবো- এখানে ভয়ের কিছু নেই। সময়ে সময়ে সমস্যা তো আসেই। এ সমস্যা দেখে ঘাবড়ালে চলবে না। এটা মোকাবেলা করতে হবে।’ দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কেউ বাস্তবায়ন করার মতো নেই বলেও জানান তিনি। কোনো ধরনের ভয় না পেতে সবাইকে অভয় দিয়ে জনগণের উদ্দেশ্যে সংসদ নেতা বলেন, ‘সময়ে সময়ে কালো মেঘ দেখা যায়। কথায় বলে ‘মেঘ দেখে কেউ করিস নে ভয়, আড়ালে তার সূর্য হাসে। হারাশশীর হারা হাসি অন্ধকারে ফিরে আসি’। ’এসময় সংসদে সদস্যরা টেবিল চাপড়ে প্রধানমন্ত্রীকে সমর্থন জানান। বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্যটাই হচ্ছে- আমাদের দেশটাকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে চাই। আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াইতে চাই। পর মুখাপেক্ষী হতে চাই না। ভিক্ষা করে চলতে চাই না। আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসবে মাথা উঁচু করে চলতে চাই। মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি। সে বিজয়ী জাতি হিসেবে দেশকে আমরা এগিয়ে নিতে চাই।এত বাধা, এত প্রতিরোধ, এত সমালোচনা, এত কিছু হচ্ছে। কিন্তু আমাদের অর্থনীতির চাকা যেন সচল থাকে তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি।’ কোভিড ১৯ ও ইউক্রেন যুদ্ধ না থাকলে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যেত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা এতদিনে অনেক দূর, অনেক উঁচু আসনে অধিষ্ঠিত হতে পারতাম।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা তো অনেক রকমের কথা শুনি। আজকেই এ সরকার ফেলে দেবে। কালকেই এটা করবে, ওটা করবে। আজকে যে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে মর্যাদা পেলাম, এটা আওয়ামী লীগ যদি ক্ষমতায় না আসে, এটা বাস্তবায়ন করবে কে?
‘আমাকে একটা লোক দেখান, সেটা করতে পারবে? নিঃস্বার্থভাবে দেশের জন্য কাজ করবে একটি মানুষ দেখান। সেরকম কোনো নেতৃত্ব আপনারা যদি দেখাতে পারেন আমার কোনো আপত্তি নেই।’
বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে এমন আশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘কিন্তু আমরা জানি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে দেশকে উন্নীত করতে হলে আমাদেরকেই দরকার। তাই আমি জনগণকে যেয়ে বলব- বারবার তারা ভোটে আমাদের নির্বাচিত করেছে। দেশের সেবা করতে পেরেছি বলে আজকে দেশটা উন্নয়নের এ ধারায় নিয়ে আসতে পেরেছি, দারিদ্রের হার কমাতে পেরেছি। বেকারত্বের সংখ্যা মাত্র ৩ ভাগ, ডিজিটাল পদ্ধতি হয়েছে আমাদের ফ্রিল্যান্সাররা কাজ করছে। ছয় লাখ ফ্রিল্যান্সার ঘরে বসে উপার্জন করছে। কাজেই আমরা পিছিয়ে থাকব না, আমরা এগিয়ে যাব।” বিকালে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিকালে সংসদে অধিবেশন শুরু হয়। মাগরিবের নামাজের বিরতির পর সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বক্তব্য রাখেন। এসময় বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ উপস্থিত ছিলেন। খবর বিডিনিউজ ও বাংলাট্রিবিউন।
সরকারি চাকরিজীবীদের বিশেষ প্রণোদনা দেওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
সরকারি চাকরিজীবীরা বিশেষ বেতন (বিশেষ প্রণোদনা) হিসেবে মূল বেতনের ৫ শতাংশ পাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অর্থমন্ত্রীকে নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সমাপনী আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রী এ সময় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘সরকারি কর্মচারী যারা আছে, তাদের বিশেষ বেতন হিসেবে মূল বেতনের ৫ শতাংশ এই আপৎকালীন সময়ে প্রদানের বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাচ্ছি। অর্থমন্ত্রী আশা করি এ বিষয়টি গ্রহণ করবেন। আমরা ৫ শতাংশ মূল বেতন বিশেষ প্রণোদনা হিসেবে তাদের দেবো।’