বিশ্বখ্যাত অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির এনথ্রোপলজি বিভাগের প্রফেসর ড. মাইকেল কেইথ বলেছেন, এশিয়ার মহানগরগুলোর চরিত্র ইউরোপ বা আমেরিকার তুলনায় ভিন্ন। এর মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে। এ শহরগুলো দিন দিন আরো বড় হয়ে উঠছে। জনসংখ্যার চাপ ক্রমাগত বাড়ছে। কয়েক বছরেই এসব শহরের বেশ কয়েকটিতে জনসংখ্যা মিলিয়নের বেশি ছাড়িয়ে যাবে। একইসাথে বাড়ছে বায়ু দূষণ, পরিবেশ তার বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে।
জলাবদ্ধতা বা বন্যার মতো সমস্যাও বাড়ছে। ফলে, এই শহরগুলোর পরিকল্পনা নিয়ে আরো বেশি মনোযোগী হয়ে উঠতে হবে। এ অঞ্চলে ভবিষ্যতের শহর কেমন হবে, তা নিয়ে ভাববার এখনই সময়।
ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটি (ইডিইউ) স্কুল অব লিবারেল আর্টসের ইংরেজি বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে প্রথম দিনের কী-নোট স্পিকারের বক্তব্যে এসব কথা বলেছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই গবেষক। ১৬ নভেম্বর সকাল ১১টায় ‘অসমোসিস- ইন্টারডিসিপ্লিনারি অ্যাপ্রোচেস ইন হিউম্যান সায়েন্সেস’ শীর্ষক এই কনফারেন্সের উদ্বোধন হয়। চল্লিশ জন গবেষকের প্রবন্ধ উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে দ্বিতীয় বারের মতো আয়োজিত এ কনফারেন্স।
এতে প্রধান আলোচক হিসেবে নাগরিক ও জাতিগত সমস্যা, রিফিউজি সংকট এবং নগর ব্যবস্থাপনা বিষয়ের গবেষক ড. কেইথ আরো বলেন, নৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে আমাদের নাগরিক বিভিন্ন সমস্যাকে নতুন করে দেখার প্রয়োজন। জাতি ও বর্ণ বর্তমানে বিশ্বব্যাপী নতুন সংকট হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
জাতিগত পরিচয়ের আবহমান মাপকাঠিগুলো ক্রমশ গ্রহণযোগ্যতা হারিয়ে এ সমস্যার সমাধানে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে এতদিনকার নির্ধারিত মানদন্ডগুলো নিয়ে সমাজ বিজ্ঞানীদের পাশাপাশি সাধারণের পর্যায়েও ভাবতে হবে।
ইডিইউর প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান সাঈদ আল নোমান বলেছেন, গবেষণাই ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির মূল ফোকাস। এ ক্ষেত্রটিতে ইডিইউর আগ্রহ ও অবদান উচ্চশিক্ষা অঙ্গনে নতুন করে প্রকাশিত হবে এ সম্মেলনের মাধ্যমে।
আমাদের ফ্যাকাল্টি মেম্বার ও শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বাংলাদেশে গবেষণায় আগ্রহীদের সুযোগ করে দিতে এ আয়োজন করেছে ইডিইউ।
ইডিইউ উপাচার্য প্রফেসর মুহাম্মদ সিকান্দার খান বলেন, কোনো একটি বিষয়কে জ্ঞানের বিভিন্ন শাখা ও ধারার দৃষ্টিকোণ থেকে প্রশ্ন করার মধ্য দিয়েই গবেষণার প্রথম ধাপ সূচিত হয়।
বিভিন্ন সম্মেলনে সর্বজনবিদিত পন্ডিত ও গবেষকদের উপস্থাপিত প্রবন্ধ থেকে নবীনরা এ পথে এগিয়ে যাবার পাথেয় খুঁজে পায়। ইডিইউর এই সম্মেলন আয়োজন বাংলাদেশের গবেষণা অঙ্গনে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান।
স্কুল অব লিবারেল আর্টসের অ্যাসোসিয়েট ডিন মুহাম্মদ শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে এতে ইডিইউর শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রথম দিনের প্লেনারি সেশনের স্পিকার ছিলেন প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. মোহিত উল আলম। এ কনফারেন্সে প্রায় ৫০টির অধিক প্রবন্ধ উপস্থাপন হবে।
ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির পাশাপাশি প্রবন্ধ উপস্থাপন করছেন ডমিনিকান রিপাবলিকের অটোনোমাস উইনিভার্সিটি অব সান্টো ডমিঙ্গো, ভারতের প্রশান্ত চন্দ্র মহালনবিশ মহাবিদ্যালয়, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিং সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি, বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, সেন্ট্রাল উইমেন ইউনিভার্সিটি, প্রাইম ইউনিভার্সিটি, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি নাটোর, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ নেভি কলেজ ও ইয়ং পাওয়ার ইন স্যোশাল এ্যাকশান (ইপসা) এর শিক্ষক ও গবেষকবৃন্দ।
কনফারেন্সের দ্বিতীয় দিনের কী- নোট স্পিকার থাকবেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের ইংলিশ এন্ড হিউমেনিটিজ বিভাগের প্রফেসর কায়সার হক এবং প্লেনারি সেশনের স্পিকার থাকবেন ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. মাহমুদ হাসান খান। বিজ্ঞপ্তি