বেড়েছে সবজি ও মুরগির দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক »
বাজারে চাল, ডাল, পেঁয়াজ, মাছ, মাংস সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও দাম কমতির কোন সুখবর নেই। আবার বাড়ছে সবজির দামও।
বৃহস্পতিবার নগরীর রেয়াজউদ্দিন ও বকসিরহাট কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে শীত ও গ্রীষ্মকালীন সবজির। কিন্তু কয়েকমাস ধরে নিম্নমুখী থাকলেও গতকাল দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। বাজারে বেগুন, টমেটোসহ কয়েকটি সবজি দাম স্থিতিতে থাকলেও সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সকল সবজির দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা। বাজারে প্রতি কেজি শসা আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ২০ থেকে ৩০ টাকা। আর ঝিঙ্গে, করলা, কাকরোল, পটল বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৯০ টাকা। আর গত সপ্তাহে যে মানের আলু বিক্রি হয়েছি ৫০ টাকা তা কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা। আর দেশি গোল আলু বিক্রি হয়েছে কেজিতে কেজি ৮০ টাকা যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৬০ টাকায়।
বাজারে আসা ক্রেতা বেসরকারি কর্মকর্তা মো. জমির উদ্দিন বলেন, বাজারে সবকিছুর দাম বাড়তি। সরকারের নির্ধারিত দরে কোন কিছুই মিলছে না। পত্রিকায় লেখালেখি হলে আমরা দুয়েকটা অভিযান দেখি। বাজার তদারকিতে রয়েছে বেশ ঘাটতি। যার কারণে ব্যবসায়ীরা যে যার মতো করে দামে বিক্রি করছে।
মাংসের বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত কয়েকদিন তাপপ্রবাহের কারণে ব্রয়লার ও লেয়ার মুরগির দাম কিছুটা কমলেও গতকাল সকাল থেকে আবারও বাড়ছে দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে ১০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে গতকাল ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২১০ টাকা আর সোনালি মুরগি ৩৫০ টাকা কেজিতে। দেশি মুরগি বিক্রি হয়েছে ৫৮০ থেকে ৬২০ টাকা। আর ঈদের পর কয়েকদিন গরু ও খাসির মাংসের দাম কমতির দিকে থাকলে গতকাল কেজিপ্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়ে গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ৮০০ থেকে ৯৫০ টাকায়। আর খাসির মাংস ১ হাজার ১০০ টাকায়।
এদিকে দীর্ঘদিন চড়া থাকা মাছের বাজারের কোন সুখবর মিলছে না। বাজারে প্রায় সকল মাছের দাম বাড়তি। ২৫০ থেকে ৩০০ টাকার নিচে কোন ধরনের মাছই পাওয়া যাচ্ছে না।
গতকাল বাজারে মাঝারি সাইজের তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হয়েছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকা। বড় পাঙ্গাস ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। চাষের রুই মাছ ৩২০ টাকা, কাতলা ৩৫০ টাকায়, পাবদা ৩৫০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, ইলিশ ৬০০ থেকে ১ হাজার টাকা। তাছাড়া চিংড়ি সাইজভেদে বিক্রি হয়েছে ৬০০ থেকে ১২০০ টাকা।
এদিকে অত্যধিক গরমে নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি ও চাহিদা কম থাকায় গত কয়েক সপ্তাহ ধরে স্থিতিতে রয়েছে ডিমের বাজার। গতকাল প্রতি ডজন ফার্মের সাদা ডিম বিক্রি হয়েছে ১১০ টাকা আর লাল লেয়ার ডিম ১২০ টাকা।
ব্যবসায়ীরা বলেন, পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় ডিমের আড়তে দাম কমতির দিকে।
এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে সকল ধরনের চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ২ থেকে ৫ টাকা। মোটা ও মাঝারি মানের চাল বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৫৮ টাকা। আর সরু মানের চিকন চাল বিক্রি হয়েছে ৬২ থেকে ৭৫ টাকায়। আর গত সপ্তাহে চড়া হওয়া ডালের বাজার রয়েছে স্থিতিতে। বাজারে নেপালী মসুর ডাল ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা যা দুই সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছিল ১৩০ টাকার নিচে। আর ১১০ টাকার মসুর বিক্রি হয়েছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। মুগ ডাল ১৭০ থেকে ১৮৫ টাকা। আর ১০ টাকা বেড়ে অ্যাংকর ৮০ থেকে ৯০ টাকা।
এছাড়া মসলাজাত পণ্য পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, আদা ও রসুন ২০০ টাকার উপরে। আর ভোজ্যতেল পাম অয়েল বিক্রি হয়েছে ১৪৫ টাকা, সয়াবিন ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা।
রেয়াজউদ্দিন বাজারের মুদি ব্যবসায়ী এম মোহাম্মদ সওদাগর বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে সকল মুদি পণ্য স্থিতিতে থাকলে কিছুটা বাড়তির দিকে চাল, ডাল ও আদা-রসুনের বাজার। পাইকারি বাজারে এসব পণ্যের দাম বেড়েছে। আর প্রশাসনের এসব নিত্যপণ্যের বাজারে তদারকি করতে হবে। নয়তো পাইকাররা সিন্ডিকেট করে আরও দাম বাড়াবে।