বেড়িবাঁধ ভাঙে কেন জবাব দেবে কে

নির্মাণের বছর না-যেতে ভাঙনের মুখে বাঁশবাড়িয়া বেড়িবাঁধ

উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দারা বছরের অধিকাংশ সময়ই বৈরী প্রকৃতির সঙ্গে এক ধরনের লড়াই করে টিকে থাকে। ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবকালেও দেখা যাচ্ছে শত শত মানুষ সত্যি সত্যি বুক-পিঠ দিয়ে জলোচ্ছাসের দুরন্ত ঢেউকে থামিয়ে ভেঙে পড়া বেড়িবাঁধ রক্ষা করার চেষ্টা করছে। এমন দৃশ্য অনেকের কাছে নতুন হলেও পরিস্থিতিটা নতুন নয়। বছরে কয়েকবার উপকূলীয় ও নদীভাঙন এলাকার মানুষদের এই পরিস্থিতিতে পড়তে হয় এবং প্রতিবারই তাদের এমন করে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করতে হয়। বছরের যে কোনো সময় ঘূর্ণিঝড় হোক, প্রথম যে খবরটি আমরা পাই তা হলো জোয়ার বা জলোচ্ছাসে বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। মনে হতে পারে ভেঙে যাওয়ার জন্যই বুঝি বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও মেরামত করা হয়।
চকরিয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক মাতামুহুরী নদীর তীর সংরক্ষণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। পাউবোর সংশ্লিষ্টদের গাফিলতির সুযোগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন নিম্নমানের কাজ করায় মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে ডাম্পিং করা বেশিরভাগ সিমেন্ট, বালু মিশ্রিত বস্তা। এতে তীর সংরক্ষণ কাজের সুফল নিয়ে চরম অনিশ্চতায় দিন কাটাচ্ছেন নদীর তীরবর্তী জনপদের বাসিন্দারা।

জানা গেছে, চলতি ২০২৪ সালের জুন মাসে অর্থাৎ মাত্র দুইমাস আগে চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের বাঘগুজারা রাবার ড্যাম লাগোয়া মুন্সিঘোনা এলাকায় চারশত মিটার এলাকায় মাতামুহুরী নদী তীর সংরক্ষণ কাজ শেষ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৬ হাজার বস্তা সিমেন্ট বালুমিশ্রিত ব্যাগ ডাম্পিং করার মাধ্যমে মাতামুহুরী নদীর তীর সংরক্ষণ কাজে বান্দরবান পানি উন্নয়ন বোর্ড বরাদ্দ দিয়েছেন প্রায় ৮০ লাখ টাকা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতোমধ্যে জুন মাসে কাজ বুঝিয়ে দিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পাউবো থেকে কয়েক দফায় বিল উত্তোলন করে নিয়েছে। এরইমধ্যে গত আগস্ট মাসে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে মাতামুহুরী নদীতে নেমে আসা দু’দফা পাহাড়ি ঢলের পানিতে নিচে নেমে গেছে ডাম্পিং করা বেশিরভাগ বালুভর্তি বস্তা। এই অবস্থায় অবশিষ্ট থাকা অংশের কাজও নদীতে তলিয়ে যাবার উপক্রম হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।

কাজের তদারকিতে নিয়োজিত ঠিকাদার দুর্গা দাশ মুঠোফোনে মাতামুহুরী নদীর তীর সংরক্ষণ কাজে কিছুটা অনিয়ম হয়েছে বলে স্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমরা অনিয়ম করেছি, তখন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা কোথায় ছিল। কাজ তদারকির দায়িত্ব তো ওনাদের ছিল।
এসব অনিয়মের তদন্ত হোক। এভাবে অনিয়ম ও দুর্নীতি করে দেশ ও জনগণের ক্ষতি করছে যারা তাদের অবশ্যই জবাবদিহির মধ্যে আনতে হবে।