নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার :
গত চারদিনে শ্রাবণের অবিরাম বর্ষণে অচল হয়ে পড়েছে কক্সবাজারের জনজীবন। বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে শহর ও শহরতলির নিম্নাঞ্চল। ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ। আমবস্যার প্রকোপে সাগরের পানি বৃদ্ধি ও উত্তাল থাকায় শত শত নৌযান উপকূলে ভিড়িয়ে রেখেছে জেলেরা। ফলে দুর্দিন চলছে জেলে পরিবারগুলোতে। জেলেরা গত কয়েকদিন সাগরে মাছ ধরতে না যাওয়ায় বাজারে সামুদ্রিক মাছের দাম বৃদ্ধি ও সংকট দেখা দিয়েছে।
গত শনিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত চারদিনের ভারীবর্ষণে কক্সবাজার শহর ও শহরতলির বেশির ভাগ পাড়া-মহল্লায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। নিচু এলাকাগুলো এখন হাঁটুপানিতে নিমজ্জিত। কোথাও-কোথাও ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির পানি জমে আছে। এতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ছেন দিনমজুর ও নিম্নআয়ের মানুষেরা।
কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সমিতিপাড়া, নাজিরারটেক, কলাতলী, পেশকারপাড়া, বাজারঘাটা, ফুলবাগ সড়ক, বড়বাজার, টেকপাড়া, নুনিয়ারছড়া, এসএমপাড়া, ঝিলংজার ডিককুল, মুহুরীপাড়া, লারপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে আছে। কোথাও-কোথাও পানিবন্দি হয়ে আছে অনেক পরিবার। সড়কগুলোতে জলাবদ্ধতায় ব্যাহত হচ্ছে যানচলাচল।
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রতিটি ড্রেনের সংযোগ খালের মুখ পানিতে থই থই করছে। কিছু কিছু জায়গায় পলিথিন, ময়লা-আবর্জনার স্তূপের কারণে নালার পানি প্রবাহে বিঘœ ঘটছে। তবে বিভিন্ন এলাকায় নিজ উদ্যোগে ড্রেন পরিষ্কার করাসহ জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করতে দেখা গেছে স্থানীয়দের।
জাসদ কক্সবাজার জেলা সভাপতি নইমুল হক চৌধুরী টুটুল অল্পবৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সম্পর্কে তার ফেসবুকওয়ালে লিখেছেন, গতকালের টানা কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে বিশ্বের দীর্ঘতম বালুকাময় সুমদ্র সৈকতখ্যাত পর্যটননগরী কক্সবাজারের অন্যতম হোটেল-মোটেলজোন কলাতলী সড়কটি সাগরের পানির সাথে সংযুক্ত হয়ে গেল বুঝি। বাস্তবে তা নয়, এটা সামান্য বৃষ্টির ফলমাত্র। এ শহর রক্ষার জন্য কোনো কর্তৃপক্ষ আছে কী?
কনজ্যুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ক্যাব এর কক্সবাজার জেলা সভাপতি মো. কাউছার জানান, শহরের বিভিন্ন ড্রেন সংস্কারের জন্য খনন করা হয়েছে আজ থেকে প্রায় ৬ মাস আগে। কিন্তু অদ্যাবধি কোনো ড্রেনের সংস্কার কাজ শেষ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। তাই সামান্য বৃষ্টি হলেই কাদাপানি জমে থাকে পুরো শহরে।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার পৌরমেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, এখন শহরের বেশির ভাগ এলাকায় রাস্তাঘাট ও ড্রেনের নির্মাণকাজ চলমান আছে। এ কারণে অনেক জায়গায় সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ একটু বেশি বেড়েছে। শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাস পর এমন দুর্ভোগ আশা করি আর থাকবে না।