সুপ্রভাত ডেস্ক »
রাশিয়া ও ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে যুক্তকারী কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কের্চ সেতু এক বিস্ফোরণে আংশিক ধসে পড়েছ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাশিয়ার জাতীয় সন্ত্রাসবিরোধী কমিটি জানিয়েছে, শনিবার স্থানীয় সময় ভোর ৬টা ৭ মিনিটে একটি মালবাহী ট্রাকে বিস্ফোরণ ঘটে, এতে ক্রিমিয়ার পথে থাকা একটি ট্রেনের জ্বালানিবাহী সাতটি ট্যাংকার ওয়াগনে আগুন ধরে যায়।
তারা জানায়, এ ঘটনায় সড়ক সেতুর দুটি অংশ আংশিক ধসে পড়েছে, কিন্তু কৃষ্ণ সাগর ও আজভ সাগরকে সংযোগকারী কের্চ প্রণালীর ওপরের খিলান ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। সেতুর এই খিলানের নিচ দিয়েই দুই সাগরের মধ্যে জাহাজ চলাচল করে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্রিমিয়ার গভর্নর সের্জেই আকসাইওনোভ বলেছেন, সড়ক সেতুটির একপাশের অংশ অক্ষত আছে, কিন্তু ক্ষতি পর্যালোচনার জন্য যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসা বিভিন্ন ছবিতে সেতুর একটি অংশে আগুন জ্বলতে ও সেখান থেকে ঘন ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
পরে রাশিয়ার জরুরি মন্ত্রণালয় আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়েছে বলে জানিয়েছে, খবর বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্সের।
টুইটারে ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মিখাইলো পোদোইলাত একটি বার্তা পোস্ট করে বলেন, এ ঘটনা ‘শুরু’ মাত্র; কিন্তু বিস্ফোরণের জন্য ইউক্রেইনীয় বাহিনীগুলো দায়ী, এমন কিছু বলা থেকে বিরত থাকেন।
তিনি লিখেছেন, “অবৈধ সবকিছু অবশ্যই ধ্বংস করতে হবে, যা কিছু চুরি করা হয়েছে অবশ্যই ইউক্রেইনকে ফেরত দিতে হবে, দখলকৃত সব এলাকা থেকে রাশিয়াকে হটাতে হবে।”
বার্তা সংস্থা তাস ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেশকভকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, কের্চ সেতুর ঘটনা তদন্তে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রাষ্ট্রীয় একটি কমিশন গঠনের নির্দেশনা দিয়েছেন।
২০১৪ সালে ইউক্রেইনের ক্রিমিয়া কে রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়ার পর দেশটির পরিবহন নেটওয়ার্কের সঙ্গে উপদ্বীপটিকে যুক্ত করার লক্ষ্যে ২০১৮ সালে এ সেতুটি চালু করা হয়। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উদ্বোধন করা ১৯ কিলোমিটারের এ সেতুটি রাশিয়ার দীর্ঘতম।
এটি এখন ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় খেরসন অঞ্চলের অধিকাংশ অংশের নিয়ন্ত্রণে থাকা রুশ বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহ রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
ইন্টারফ্যাক্সের দেওয়া উদ্ধৃতিতে ক্রিমিয়ান রিপাবলিকের স্টেট কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ভ্লাদিমির কনস্ট্যান্টিনভ বলেন, “ইউক্রেনীয় ধ্বংসকারীরা তাদের রক্তাক্ত হাত নিয়ে ক্রিমিয়ান সেতুতে পৌঁছতে সক্ষম হয়েছে। তারা এখন গর্ব করতে পারে। তাদের ২৩ বছরের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে তারা ক্রাইমিয়ায় মনোযোগ কাড়ার মতো কিছু করতে ব্যর্থ হয়েছে, কিন্তু (এখন) তারা রাশিয়ার সেতুর ক্ষতিগ্রস্ত করতে সক্ষম হয়েছে।”
তবে এই ক্ষতি ‘খুব গুরুতর কিছু নয়’ আর দ্রুতই তা মেরামত করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ইউক্রেইনের জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা কাউন্সিলের প্রধান ওলেক্সি দানিলোভ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জ্বলতে থাকা সেতুটির একটি ভিডিওর পাশে সাবেক হলিউডের তারকা মেরিলিন মনোরোর একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন যেখানে অভিনেত্রী গাইছেন ‘হ্যাপি বার্থডে মিস্টার প্রেসিডেন্ট’।
শুক্রবার পুতিনের ৭০তম জন্মদিন ছিল।
সূত্র : বিডিনিউজ