নিজস্ব প্রতিবেদক »
হাজারো দ্বীনদার আহলে বায়তপ্রেমী মানুষের অংশগ্রহণে বেশ প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে দশ দিনব্যাপী শাহাদাতে কারবালা মাহফিল। নগরীর জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ প্লাজায় গতকাল সোমবার পঞ্চম দিনের মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে দেশি-বিদেশি আলোচক ও ইসলামী চিন্তাবিদরা আহলে বায়তে রাসুলের উপর বক্তব্য রেখেছেন।
বক্তারা বলেন, মানবতার মুক্তির দিশারী মহানবী (দ.) দেড় হাজার বছর আগেই সতর্ক করে বলেছেন, শেষ জমানায় আমার উম্মতেরা তিয়াত্তোর ভাগে বিভক্ত হবে। একটি সম্প্রদায় ব্যতীত অন্য সকল গোষ্ঠীই পথভ্রষ্ট ও জাহান্নামি। আর আহলে সুন্নাত ওয়াল জমাআতের ওপর যারা প্রতিষ্ঠিত তারা ছাড়া সকলেই বিপথগামী ও পথভ্রষ্ট। আজকে ফেতনা ফাসাদের যুগে বিশ^ মুসলমানদের মুক্তি ও নাজাতের একমাত্র প্লাটফর্ম হচ্ছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত।
গতকালের মাহফিলের সভাপতিত্ব করেন শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রধান পৃষ্ঠপোষক এবং পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সমাজসেবক সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। প্রধান অতিথি ছিলেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মুহাম্মদ ফরিদুল হক খান। তিনি বলেন, ‘ইসলামে সন্ত্রাস জঙ্গিবাদের কোনো স্থান নেই। যারা ইসলামের নামে নিরপরাধ মানুষকে খুন হত্যায় মেতে ওঠে তারা ইসলামের দুশমন ও মানবতার শত্রু। সকল সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ও জঙ্গিবাদীদের প্রতিহত করতে দেশবাসীকে দৃঢ় প্রত্যয় গ্রহণ করতে হবে।’
বিদেশি আলোচক ছিলেন আল্লামা সাখাওয়াত হোসাইন বারকাতি (কালকাতা, ভারত)। তিনি বলেন, ‘প্রিয় নবী (দ.) ও আহলে বায়তে রাসূলের (দ.) মর্যাদা সমুন্নত করেছেন স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক। সকল নবী রাসূল সাহাবা নিষ্পাপ ও সমালোচনার উর্ধ্বে এটাই হচ্ছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের আক্বিদা।’
সভাপতির বক্তব্যে সুফি মিজানুর রহমান বলেন, ‘আহলে বায়তে রাসূলের (দ.) শান মর্যাদা তুলে ধরা এবং ইসলামের নামে গর্জে ওঠা বাতিল গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করতে ১৯৮৬ সন থেকেই চট্টগ্রাম জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে শাহদাতে কারবালা মাহফিলের সূচনা করেন বরেণ্য আলেমে দ্বীন আল্লামা মুহাম্মদ জালাল উদ্দীন আলকাদেরী (রহ.)। আমি শুরু থেকেই নিজেকে এ মাহফিলের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে পেরে ধন্য ও গর্বিত। হয়তো এটাই আখিরাতে আমাদের নাজাতের উসিলা হতে পারে।’
নবী করিম (দ.) এর ইলমে গায়েব ও হযরত ইমাম হোসাইনের (রা.) শাহাদাত বিষয়ে আলোচনা করেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত বাংলাদেশের চেয়ারম্যান শায়খুল হাদিস আল্লামা কাযী মঈন উদ্দিন আশরাফি। তিনি বলেন, ‘যাঁরা অদৃশ্য বিষয়ের ওপর জ্ঞান রাখেন তাদেরকেই বলা হয় নবী-রসূল। যারা ইলমে গায়েব মানে না তারা পথভ্রষ্ট। আলেম দাবিদার হয়ে নবী-রাসূল- ওলীদের শানে যারা কটূক্তি করে তাদের ব্যাপারে আমাদের সজাগ থাকতে হবে।’
আলোচক ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক আল্লামা ড. মুহাম্মদ জাফর উল্লাহ, জমিয়তুল ফালাহর পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ আহমদুল হক। অতিথি ছিলেন আঞ্জুমান ট্রাস্টের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ মহসিন, গাউছিয়া কমিটি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান পেয়ার মোহাম্মদ, প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, ইফা বিভাগীয় পরিচালক বোরহান উদ্দিন মো. আবু আহসান ও ব্যাংকার আহমদুল হক, শাহজাদা ইহসানুল করিম ইছাপুরী।
উপস্থিত ছিলেন মহফিলের প্রধান সমন্বয়ক পিএইচপি ফ্যামিলির পরিচালক মোহাম্মদ আলী হোসেন সোহাগ, খোরশেদুর রহমান, সিরাজুল মুস্তফা, মুহাম্মদ সাইফুদ্দিন, জাফর আহমদ সওদাগর, ভাটিয়ারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যন মুহাম্মদ নাজিম উদ্দীন, প্রফেসর কামাল উদ্দিন আহমদ, আব্দুল হাই মাসুম, দিলশাদ আহমদ, শাহেদ করিম, ছালামত উল্লাহ, এস এম শফি, গাজী ইদ্রিচ চেয়ারম্যান, মাহাবুবুল আলম, মনসুর সিকদার, আব্দুর রহমান, মাইনুদ্দীন মিঠু, ফরিদ মিয়া, শাহাব উদ্দিন, জহির উদ্দিন, খোরশেদ আালী চৌধুরী, নাজিব আশরাফ প্রমুখ।
এছাড়া মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের শীর্ষস্থানীয়সহ সর্বস্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন দরবারের সাজ্জাদানশীন, আওলাদবৃন্দ, বিভিন্ন মাদ্রাসার আলেমগণ উপস্থিত ছিলেন।
আজ ৬ষ্ঠ দিবস থেকে মসজিদের নিচতলায় পর্দা সহকারে মহিলাদের মাহফিলে অংশগ্রহণের ব্যবস্থা থাকবে।