নিজস্ব প্রতিবেদক:
ব্যবসায়ী আবদুর রহিম। পরিবার নিয়ে চট্টগ্রামে থাকেন। কিন্তু সন্তানদের পড়ালেখার কথা ভেবে ঢাকায় শিফট হতে চান। কিন্তু কোথায় যাবেন? তাঁর প্রথম পছন্দ উত্তরা এলাকায়। সন্তানদের পড়ালেখা মিলিয়ে দারুণ একটি পরিবেশ গড়ে উঠেছে এই এলাকায়। চট্টগ্রামের পাঁচতারকা হোটেল র্যাডিসনে চলমান রিহ্যাব ফেয়ারে এসে উত্তরায় ‘রুপায়ণ সিটি’র সন্ধান পেয়ে সেখানেই আগামীর আবাস গড়তে চান তিনি। আর তা নিয়ে দেখা গেল রুপায়ণ সিটির স্টলে নিয়োজিত মার্কেটিংয়ের প্রতিনিধিদের কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য জেনে নিচ্ছেন।
রুপায়ণ সিটি কেন- এই প্রশ্নের উত্তরে আবদুর রহিম বলেন, ‘দেশের সর্বপ্রথম স্যাটেলাইট সিটি হতে যাচ্ছে রুপায়ণ সিটি। সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র্য এক সিটি হবে রুপায়ণ। উন্নত নাগরিক সুযোগ-সুবিধার সব উপাদান এখানে থাকবে। আর ঢাকায় আগামীর যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম মেট্রোরেলের স্টেশন (দিয়াবাড়ি) এই সিটির সাথে লাগোয়া। এছাড়া ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের রোডও এই সিটির পাশ দিয়ে যাচ্ছে। সব দিক বিবেচনায় এই সিটিকে আদর্শ মনে হচ্ছে।’
আবদুর রহিমের কাছ থেকে রুপায়ণ সিটি সম্পর্কে কিছু জানার পর আরো কিছু জানার কৌতূহল নিয়ে কথা হয় রুপায়ন সিটি স্টলের সেলস এক্সিকিউটিভ নাজমুল হাসানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘রুপায়ণ সিটি হবে আগামীর নিরাপদ বসবাসের জায়গা। এখানে শুধু একটি ভবন বা ফ্ল্যাট নয়। প্রায় ৪৫ একর এলাকা নিয়ে গড়ে উঠা রুপায়ন একটি স্বতন্ত্র সিটি হিসেবে গড়ে উঠবে। পুরো এলাকার ৬৩ শতাংশ জায়গা উন্মুক্ত থাকছে। এছাড়া স্কুল-কলেজ, আধুনিক শপিংমল, খেলার মাঠ, সুইমিং পুল, বিশাল ওয়াকওয়ে, কিডস জোনসহ উন্নত জীবন যাপনের সব উপাদান থাকবে এই সিটিতে।’
কথা বলে জানা যায়, রুপায়ণ সিটিতে বর্তমানে চার পর্যায়ে কাজ চলছে। এরমধ্যে আবাসিক অ্যাপার্টমেন্টে প্রথম পর্যায়ে রয়েছে ‘রুপায়ণ গ্র্যান্ড’ ও চতুর্থ পর্যায়ে রয়েছে ‘রুপায়ণ ম্যাজেস্টিক’। এছাড়া তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছে ‘রুপায়ণ ম্যাক্সাস’, যা বাণিজ্যিক স্থাপনা এবং শপিংমল হিসেবে ব্যবহৃত হবে। সবচেয়ে লাক্সারিয়াস ডুপ্লেক্স অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে দ্বিতীয় পর্যায়ে ‘রুপায়ণ স্কাইভিলা’য়। ৭ দশমিক ৯২ একর জায়গায় গড়ে তোলা ‘রুপায়ণ গ্র্যান্ডে’ ২১টি ভবনে ৫৪০টি অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে। রুপায়ণ গ্রান্ডের প্রায় ৬০ শতাংশ কাজ ইতিমধ্যে শেষ। আবাসিক অ্যাপার্টমেন্টের মধ্যে রুপায়ণ ম্যাজেস্টিক প্রায় শতভাগ শেষ। কিছুদিনের মধ্যে ৫ দশমিক ১৩ একরের এ প্রকল্পের ১১টি ভবনের ৩১৫টি অ্যাপার্টমেন্ট হস্তান্তর করা হবে।
আবাসিক অ্যাপার্টমেন্টের পাশাপাশি রয়েছে বাণিজ্যিক ও শপিংমলের জন্য রুপায়ন ম্যাক্সাস নামের পৃথক আরেকটি জোন। এখানে রয়েছে শপিংমল, ফুডকোর্ট, সিনেপ্লেক্স, এমিউজমেন্ট ও অ্যাংকর শপ। এছাড়া বাচ্চাদের খেলার জন্য রয়েছে বিশাল জগত।
৮ ভবনে ২৬০টি স্কাইভিলা (ডুপোøক্স বাড়ি)
রুপায়ন সিটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় অফার হলো স্কাইভিলা। ১০ তলার আটটি ভবনে ২৬০টি স্কাইভিলা অ্যাপার্টমেন্ট তৈরি করা হচ্ছে। এসবের সাথে প্রতিটি টাওয়ারে থাকছে ওই ভবনে বসবাসকারীদের জন্য পৃথক সুইমিং পুল। দুটি ফ্লোর নিয়ে একটি ডুপ্লেক্স (স্কাইভিলা) গড়ে তোলা হলেও প্রতিটি ডুপ্লেক্স মনে হবে একেকটি পৃথক বাড়ি। কখনোই মনে হবে না এটি কোনো ভবনের দুটি ফ্লোর। বিশেষ এই স্কাইভিলা দেশের আবাসনে অন্যতম আকর্ষণ।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় রুপায়ণ সিটির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুবুর রহমানের কাছে। তিনি বলেন, ‘স্কাইভিলার ডিজাইন এমনভাবে করা হয়েছে যাতে প্রতিটি স্কাইভিলাতে বসবাসরত অধিবাসীরা মনে করেন তিনি পৃথক একটি বাড়িতে রয়েছেন। এই স্কাইভিলার ডিজাইনার এজন্য আন্তর্জাতিক পুরস্কারও পেয়েছেন।’
জানা যায়, শুধু স্কাইভিলা জোনের জন্য পৃথক স্কুল ও খেলার মাঠ, সুপার শপ কমপ্লেক্স, কমিউনিটি ক্লাব ও মসজিদ রয়েছে। অর্থাৎ এক জোনের চাপ যাতে অপর জোনে না পড়ে সেজন্যই সুযোগ সুবিধাগুলো পৃথকভাবে করা হয়েছে।
রুপায়ণ গ্রুপের বক্তব্য
একটি স্বতন্ত্র সিটি তৈরি করার পরিকল্পনা আসা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রুপায়ণ সিটির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘উত্তরার এ এলাকায় ৪৫ একর জায়গা নিতে আমাদের চেয়ারম্যান স্যারের ১৬ বছর সময় লেগেছে। ২০১৬ সালে জায়গা নেয়া শেষ হওয়ার পর আমরা প্রকল্পের মাস্টারপ্ল্যান এবং ডিজাইন সম্পন্ন করে কাজ শুরু করি। শিগগিরই আমরা প্রকল্প হস্তান্তর শুরু করবো। আমাদের চারটা পর্যায়ের সবগুলোতেই কাজ চলছে।’
এ ধরনের আবাসিক এলাকা দেশে আর নেই উল্লেখ করে মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ব্যক্তি উদ্যোগে একটি স্বতন্ত্র আধুনিক সিটি গড়ে তোলা অসাধ্য কাজ। আর এই অসাধ্য কাজটি এখন আমাদের চোখের সামনে। এখানে চারটি জোন থাকলেও পুরোটি একটি সিটি। প্রায় দশ হাজারের বেশি মানুষকে ধারণ করার সুযোগ সুবিধা এখানে রয়েছে। উন্নত জীবন যাপনের সব রকমের উপাদান রয়েছে।’
চট্টগ্রামের মানুষকে টার্গেট করে রিহ্যাব ফেয়ারে এলেন কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশের বিজনেস হাব হলো চট্টগ্রাম। চট্টগ্রামের অনেকে সেকেন্ড হোম হিসেবে আমাদের রুপায়ণ সিটিকে বেছে নিতে পারে। একইসাথে যারা পরিবার নিয়ে সন্তানদের পড়ালেখার কথা চিন্তা করে ঢাকায় শিফট হতে চান তারাও রুপায়ন সিটিতে তাদের আবাস গড়ে তুলতে পারেন।
চট্টগ্রামে এ ধরনের সিটি গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে কিনা জানতে চাইলে মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ইতিমধ্যে চট্টগ্রামের নেতৃস্থানীয় অনেকে আমাদের কাছে প্রস্তাবনা দিয়েছেন রুপায়ণ সিটির আদলে চট্টগ্রামেও একটি সিটি গড়ে তুলতে। আমাদের আগামীর পরিকল্পনায় চট্টগ্রামও রয়েছে।’
উল্লেখ্য, দেশের আবাসন শিল্পে রুপায়ণ গ্রুপ অন্যতম। মানসম্মত আবাসন নিশ্চিতে কাজ করছে এই শিল্পগ্রুপ। তবে রুপায়ণ সিটির মাধ্যমে তারা দেশের আবাসন শিল্পে একটি মাইলস্টোন।