বিলুপ্ত বেপরোয়া চবি ছাত্রলীগ

অছাত্র ও বহিষ্কৃতদের হল ছাড়ার নির্দেশ

চবি প্রতিনিধি

কোন্দল-মারামারি-গ্রুপিংসহ নানা কারণে বেপরোয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগ। সর্বশেষ গতকাল সাংবাদিক পিটিয়ে আবারও আলোচনায় এসেছে। এছাড়া ছাত্রলীগের দফায় দফায় সংঘর্ষের কারণে কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

গতকাল রোববার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ভেরিফাইড পেইজে দেওয়া কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।

২০১৯ সালের ১৪ জুলাই শাখা ছাত্রলীগের দুই সদস্যের কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। কমিটিতে পরিসংখ্যান বিভাগের ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষের রেজাউল হক রুবেলকে সভাপতি ও মার্কেটিং বিভাগের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের ইকবাল হোসেন টিপুকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার আড়াই বছর পর বিলুপ্ত করা হলো।

কমিটি গঠনের পর দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন, বগি রাজনীতির সংস্কৃতি বন্ধ করে হলভিত্তিক রাজনীতি চালু করা, অনুষদ কমিটি গঠনসহ নানা প্রতিশ্রুতি দেন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক। তবে এসব প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে না পারলেও এ কমিটি বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে পত্রিকার শিরোনাম হয়েছে বছর জুড়ে।
নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, সাড়ে তিন বছরে একটি বর্ধিত সভা করতে পারেনি এই কমিটি। হল ও অনুষদ কমিটির আশ্বাস দিয়ে পার করেছে বছরের পর বছর।

বারবার আলোচনায় চবি ছাত্রলীগ

কখনও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে গিয়ে আন্দোলন, কখনও নিজেদের কমিটির জন্য ক্যাম্পাস অবরুদ্ধ, কখনও আবার নিজেদের গ্রুপ-উপগ্রুপের কোন্দলে সংঘাত- এ নিয়েই চলছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের এ ধরনের আচরণে শঙ্কিত সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
তুচ্ছ ঘটনায় কয়েকদিন ধরে সাতবার সংঘাতে জড়িয়ে আবারও আলোচনায় এসেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গত ১৪ বছরে শৃঙ্খলাভঙ্গ ও বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকায় ছাত্রলীগের অন্ততঃ ১৯০ জনকে বহিষ্কার করেছে, যদিও তাতে অপরাধ থামেনি।

এদিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের লাগাম টেনে ধরা সময়ের দাবি বলে মত প্রকাশ করেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন। গত শুক্রবার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এর মুঠোফোনে ফোন করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংঘর্ষের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বিশৃংখলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান সুজন।

এ সময় সুজন বলেন, অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্যি যে ছাত্রলীগের সে গৌরবময় ইতিহাসকে ভূলুণ্ঠিত করছে কতিপয় ছাত্রনেতারা। কারণে অকারণে তুচ্ছ কারণে কয়দিন পর পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশকে বিষাক্ত করে তুলছে তারা। বছরের পর বছর ধরে পড়ালেখার নামে ক্যাম্পাসে অবস্থান করে ক্যাম্পাসকে তাদের স্বার্থ হাসিলের ঠিকানা হিসেবে পরিণত করেছে। তাদের এহেন আচরণে দল ও সরকার চরমভাবে বিব্রত।

অছাত্র ও বহিষ্কৃতদের হল ছাড়ার নির্দেশ

বিভিন্ন সময় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে যারা বহিষ্কারাদেশের আওতায় রয়েছে এবং ২০১৪-১৫ সেশন বা তার আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ভর্তি হওয়া যেসব শিক্ষার্থীদের ছাত্রত্ব ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদেরকে হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
গতকাল রোববার সন্ধ্যায় চবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কেএম নুর আহমদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।