নিজস্ব প্রতিবেদক >>
করোনা সংক্রমণ রোধে মাঠে কাজ করছে প্রশাসন। এদিকে স্বাস্থ্যবিধি না মানা ও অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়া থেকে কোনোভাবে রুখে দেওয়া যাচ্ছে না নগরবাসীকে। কোন না কোন অজুহাতে বের হচ্ছেন তারা।
দিন দিন করোনা ভাইরাস শনাক্তের হার বেড়ে চলেছে। করোনা রোগীতে হাসপাতাল পূর্ণ। খালি নেই আইসিইউ সিটও। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্বিগুণ হারে বাড়ছে জরিমানার সংখ্যা।
গতকাল সোমবার নগরঘুরে দেখা গেছে, নগরীর বেশিরভাগ এলাকায় বসানো হয়েছে যৌথ বাহিনীর চেকপোস্ট। লকডাউন মানতে মানুষকে বাধ্য করার চেষ্টা করে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা। সরকারি নির্দেশনা পালনে বৃষ্টির মধ্যেই রেইনকোট পরে এবং ছাতা মাথায় রাস্তায় চেকপোস্ট বসিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। রাস্তায় অযথা বের হতে দেখলে জানতে চাওয়া হচ্ছে ঘর থেকে বের হওয়ার কারণ। সঠিক কারণ দেখাতে না পেরে অনেকে গুনছেন জরিমানা। আটকে রাখা হচ্ছে ব্যক্তিগত পরিবহন। কেউ কেউ ভুয়া ডাক্তারি পরামর্শপত্র নিয়ে বেরিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নতুন করোনা রোগী ভর্তির জায়গা নেই হাসপাতালগুলোতে। আইসিইউ বেডের অপেক্ষায় রয়েছে অনেক রোগী।
সারাদিন নগরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ১৮ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, বিআরটিএ’র ২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। নগরীতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে দোকানপাট ও শপিংমল খোলা রাখা, অপ্রয়োজনে রাস্তায় ঘুরাফেরা করা, ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যতীত রাস্তায় বের হাওয়াসহ বিভিন্ন অপরাধে ২১৮ মামলায় ১ লাখ ২৭ হাজার ৮শ’ টাকা অর্থদণ্ড আদায় করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত ও মনিটরিং কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগিতা করেন সেনাবাহিনী, র্যাব, আনসার, বিজিবি ও পুলিশ সদস্যগণ।
জানা গেছে, নগরের বন্দর, পতেঙ্গা ও ইপিজেড এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রেজওয়ানা আফরিন অভিযান পরিচালনা করে ২৮ মামলায় ৭ হাজার ২শ’ টাকা অর্থদণ্ড আদায় করেন। অন্যদিকে চকবাজার, বাকলিয়া ও কর্ণফুলী এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আতিকুর রহমান ৫ মামলায় ১৬ হাজার টাকা অর্থদণ্ড আদায় করা হয়। পাশাপাশি আকবরশাহ, বায়েজিদ, হালিশহর ও পাহাড়তলী এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুরাইয়া ইয়াসমিন ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নূরজাহান আক্তার সাথী ১৭ মামলায় ৯ হাজার ৬শ’ টাকা, খুলশী, চাঁন্দগাও ও পাঁচলাইশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হুছাইন মুহাম্মদ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মামুন ১৬ মামলায় ২২ হাজার ৭৫০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। চকবাজার, বাকলিয়া ও কর্ণফুলী এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহিদা ফাতেমা চৌধুরী ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খিন ওয়ানু ১২ মামলায় ৩ হাজার ১শ’ টাকা, চাঁন্দগাও, পাঁচলাইশ ও খুলশী এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাজিব হোসেন ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্লাবন কুমার বিশ্বাস ২২ মামলায় ১৪ হাজার ৩৫০ টাকা অর্থদণ্ড আদায় করেন।
শাহ্ আমানত সেতু, মইজ্জারটেক এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন বিআরটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শান্তনু কুমার দাস ১৯ মামলায় ৪ হাজার ৬শ’ টাকা অর্থদণ্ড আদায় করেন। অন্যদিকে বাকলিয়া, চকবাজার, চাঁন্দগাও, পাঁচলাইশ, হালিশহর, পাহাড়তলী, লালখান বাজার এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে চসিক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মারুফা বেগম নেলী ১৯ মামলায় ৪ হাজার ৬শ’ টাকা অর্থদণ্ড আদায় করেন।