নিজস্ব প্রতিবেদক »
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার আমেজ লেগেছে ঘরে ঘরে। পূজায় নতুন সাজে মেতে উঠতে চাই নতুন বাহারি পোশাক। রঙিন পোশাকের খোঁজে তরুণ-তরুণী ভিড় করছে এলাকাভিত্তিক কাপড়ের দোকানে। এছাড়া অনলাইেেন চলছে ব্যাপক কেনাকাটা।
করোনার ক্রান্তিকালে সময়ের পরিক্রমায় বদলে গেছে মানুষের জীবন শৈলী। দূরের মার্কেট থেকে বিমুখ ক্রেতারা। কর্মব্যস্ত যুগে মার্কেটে গিয়ে দেখেশুনে জামা-কাপড় কেনার প্রচলনটা অনেকাংশে লোপ পাচ্ছে। সহজলভ্য হিসেবে বেঁচে নিয়েছেন অনলাইন শপিং কিংবা এলাকাভিত্তিক কাপড়ের দোকানগুলোকে। যার ফলে মার্কেট বা শপিংমলে পূজার ভিড় চোখে পড়ছে না।
নগরের বিভিন্ন মার্কেট-শপিংমলে সরেজমিনে দেখা যায় এমন চিত্র। পূজাকে সামনে রেখে ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন রঙের শাড়ির পসরা সাজিয়েছেন অভিজাত মার্কেট ও বিপণি বিতানগুলোর দোকানিরা। কিন্তু অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছরে বিকিকিনি কিছুটা মন্দা চলছে বলে জানিয়েছেন দোকানিরা। তবে মার্কেট থেকে কেনাকাটা করছেন পরিবারের কর্তারা।
মাসের শুরুতে বেতন পেয়ে পরিবারের জন্য শপিং করে নিয়েছি। দশমীতে বাড়ি ফিরবো, তার আগেই পরিবারের সকলের পূজার বাজার পৌঁছে দিতে হবে বলে জানালেন সুনীল সেন।
বিভিন্ন শপিংমল ঘুরে তেমন ভাল কোন জামা না পাওয়ায় অনলাইন শপিং থেকে নিজে এবং স্বামীর জন্য পুজার কাপড় অর্ডার করেছেন সুমি বিশ্বাস। বাসা কোতোয়ালী এলাকায় হলেও মার্কেটে না গিয়ে এসেছেন দেওয়ানজী পুকুর পাড় এলাকায় গড়ে উঠা কাপড় ও প্রসাধনীর দোকানে। টুকিটাকি কেনাকাটা সেরে নিচ্ছেন বলে জানান তিনি। এলাকাভিত্তিক এসব কাপড়ের দোকানে ভিড় দেখা যায়। দোকানগুলোতে বেশ জমে উঠেছে বিকিকিনি। ক্রেতারাও বেশ খুশি মনে বাসার পাশে দোকানগুলো থেকে কিনে নিচ্ছেন পছন্দের সব প্রসাধনী এবং জামা-কাপড়।
বুটিক ফ্যাশন হাউসগুলোতে পূজাকে কেন্দ্র করে পোশাকে এসেছে বাহারি ডিজাইন। তবে শোরুমের চেয়ে অনলাইন অর্ডার বেশি পড়ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রযুক্তির বহুবিধ ব্যবহারে মার্কেটের বদলে জায়গা করে নিয়েছে অনলাইন শপিং। হাতে হাতে স্মার্টফোন থাকায় ঘরে বসে ক্লিকেই কিনে নিচ্ছেন পছন্দের জিনিস। সময় বাঁচাতে ও নানা ছাড়ের লোভে পূজার বাজার হোক বা ঈদের হোক- তা এখন অনলাইন শপিং অনেকটাই জায়গা দখল করেছে। এতে অতিরিক্ত শ্রম দিতে হচ্ছে না শপিংয়ের জন্য। ঘরে বসে হোম ডেলিভারির মাধ্যমে পেয়ে যাচ্ছেন পছন্দের পণ্য। নিজের পছন্দের পোশাকের পাশাপাশি পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্য কেনাকাটা চলছে অনলাইনে। তবে বয়োজ্যষ্ঠ সদস্যদের কাছে অনলাইনের চেয়ে মার্কেট-শপিংমলগুলো গুরুত্ব বেশি পাচ্ছে।
এদিকে বিভিন্ন মার্কেট এবং শপিংমলের ব্যবসায়ীরা ক্ষোভের সাথে জানান, সরকারকে আয়কর দিয়ে ব্যবসা করতে বসে আমাদের বিকিকিনিতে ধস নেমেছে অনলাইন শপিং প্ল্যাটফর্মের জন্য। কিন্তু এসব অনলাইন ব্যবসায়ীরা সরকারকে কত টাকা আয়কর দেয় তা প্রশ্ন রেখেছেন অনেকেই।
চকবাজার সাফা আমিন শপিং মলের লেডিস জোন দোকানের মলিক মোক্তার আহমেদ আজাদ বলেন, ‘নতুন মার্কেট হিসেবে পূজার বাজারে ভাল বিকিকিনি হয়েছে।’ এতেই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি।
নগরের বৃহৎ পাইকারি বাণিজ্যকেন্দ্র টেরিবাজারের কাপড় ব্যবসায়ী আরিফ খান শাকিল বলেন, ‘প্রতি বছর পূজায় জমজমাট বিকিকিনি হয়। কিন্তু করোনাকালে তা অনেকটা কমে গেছে। যদি কয়েক বছর আগের কথা বলি- পূজার সন্নিকটে এই সময়ে ব্যস্ত সময় পার হতো, বর্তমানে অনেকটা বসে বসে দিন পার করছি।’
বিকিকিনি অনলাইন ও এলাকাভিত্তিক দোকানে
পূজার বাজার