সুপ্রভাত ডেস্ক »
দীর্ঘ দুই মাস চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেন অভিনেত্রী শারমিন আঁখি (২৭)। আইসিইউ থেকে সুস্থ হয়ে ফেরায় সৃষ্টিকর্তাসহ চিকিৎসকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে ছাত্রপড় দেওয়া হয় তাকে।
তবে মানসিকভাবে অভিনেত্রী এখনো পুরোপুরি সুস্থ নন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, এসব ঘটনা থেকে পরিত্রাণ পেতে এখনই সবাইকে সজাগ হতে হবে।
বার্ন ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, শরীরের ৩৫ শতাংশ দগ্ধ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন শারমিন। সঙ্গে শ্বাসনালীও দগ্ধ হয়। তাকে কয়েকদিন আইসিইউতেও রাখা হয়। সব মিলিয়ে দীর্ঘ দুই মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর গতকাল তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হলো।
তিনি আরও বলেন, অনেকটা যুদ্ধ করেই তাকে সুস্থ করে তুলেছেন আমাদের চিকিৎসকরা। এজন্য আমরাও অনেক আনন্দিত। তবে এমন সব ঘটনা থেকে পরিত্রাণ পেতে আমাদের এখনই সজাগ হতে হবে। নইলে এমন ঘটনার শিকার আমাদের হতেই হবে।
এসময় ঘটনার বর্ণনা দিয়ে অভিনেত্রী শারমিন আঁখি সাংবাদিকদের বলেন, এখনো আমার সেইদিনকার ঘটনা বারবার চোখে ভেসে ওঠে। আমি যখন শুটিংয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম; কস্টিউম পরার আগে ওয়াশরুমে যাই। সেখানে লাইট চালু করতেই চোখের সামনে বারবার স্পার্ক হতে দেখি। এর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই নীল আগুনের লাভার মতো চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হলে আমি আমার হাত দিয়ে মুখ ঢাকি। তখন আমার হাতের চামড়া চটচট করে ফুটছিলো। বিস্ফোরণে ওয়াশরুমের দরজা, ভেতরের সবকিছু তছনছ হয়ে যায়। আমি ছিটকে বাইরে এসে পড়ি।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর নানানভাবে কুৎসা রটানো হচ্ছিলো যে, আমি ওয়াশরুমে ধূমপান করার সময় সেখানে বিস্ফোরণ হয়। যেটা একদমই সত্য নয়। সেখানে জমে থাকা কোনো গ্যাস থেকেই এই বিস্ফোরণ হতে পারে।
ঘটনাটি পরিকল্পিত কি-না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে এই অভিনেত্রী বলেন, আমি সেরকম কিছু মনে করছি না। আমার কাছে মনে হচ্ছে, এটি একটি দুর্ঘটনা।
সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরলেও নিজের জন্য কাউন্সেলিং প্রয়োজন বলে জানান শারমিন আঁখি।
এসময় তার স্বামী নির্মাতা রাহাত কবির সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার পর প্রথম ২০ দিন শুটিং হাউজ মালিক আমাদের সঙ্গে একবারের জন্যও যোগাযোগ করেনি। তার উচিৎ ছিলো, প্রথমদিনই হাসপাতালে আসা। কিন্তু আসেননি।
গত ২৮ জানুয়ারি দুপুর ২টার দিকে মিরপুর-১১, কালশি রোড অ্যাপেক্স শো-রুমের পাশের একটি শুটিংস্পটে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ওইদিন সন্ধ্যায় অভিনেত্রী শারমিন আঁখিকে বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। আগুনে তার দুই হাতের সম্পূর্ণ, দুই পা, মুখমন্ডল ও মাথার একপাশসহ শরীরের ৩৫ শতাংশ দগ্ধ হয়।