বাজার অস্থির করলে কঠোর ব্যবস্থা

আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা

হঠাৎ করে পেঁয়াজ ও আলুর দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়াসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে মহানগর ও উপজেলাগুলোতে প্রয়োজনে সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য অবৈধভাবে মজুদ কিংবা এসব পণ্যের কৃত্রিম সংকটের মাধ্যমে দাম বাড়িয়ে বাজার অস্থির করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জেল-জরিমানার পাশাপাশি কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রয়োজনে পণ্য জব্দ, আড়ত ও দোকান সিলগালা করে দেয়া হবে।

গতকাল রোববার সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক (ডিসি)ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান সভায় সভাপতিত্ব করেন।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা পুলিশ সুপার এস.এম শফিউল্লাহ বিপিএম (সেবা), সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ, জেলার ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম সরওয়ার কামাল দুলু, চেম্বার পরিচালক অহিদ সিরাজ চৌধুরী স্বপন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল মান্নান, উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বজন কুমার তালুকদার (রাঙ্গুনিয়া), একেএম এহেছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল (রাউজান), তৌহিদুল হক চৌধুরী (আনোয়ারা), চৌধুরী মো. গালিব সাদলী (বাঁশখালী), ফারুক চৌধুরী (কর্ণফুলী), উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, প্রতিনিধি ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা।

সভায় ডিসি বলেন, পেঁয়াজ ও আলুর দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় তা রোধে তাৎক্ষণিক জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে চট্টগ্রামে এসব পণ্যের পাইকারি বাজার চাকাতাই-খাতুনগঞ্জ ও পাহাড়তলী বাজারে অভিযান পরিচালনা করার ব্যবস্থা করা হয়। তাছাড়া উপজেলাগুলোতে সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ  দেয়া হয়। সকল উপজেলাতে ইউএনও কর্তৃক সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট বাজারগুলোতে অভিযান পরিচালনা করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

সভায় উপস্থিত জনপ্রতিনিধি ও চেম্বার অব্ কমার্সের প্রতিনিধিসহ সকলের মতামতের ভিত্তিতে সকল আমদানীকারকদের নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে একটি সভা আহ্বান করে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

সভায় মালিমিডিয়ার মাধ্যমে নভেম্বর মাসের খাতওয়ারি অপরাধ চিত্র তুলে ধরেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. মামুনুর রহমান।

জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ব্যবস্থা নিয়ে হঠাৎ পেঁয়াজ আলুসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে ব্যবসায়ীমহল কর্তৃক রক্ষিত স্ব-স্ব গুদাম বা গোডাউনের হালনাগাদ তথ্য প্রদানের জন্য একটি ‘গণবিজ্ঞপ্তি’ প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নির্দেশনা দেয়া হয়। গণবিজ্ঞপ্তি প্রচারের পর সুনির্দিষ্ট গোডাউন বা গুদাম ব্যতীত অন্য কোন জায়গায় এসব পণ্যের গুদামজাত করার তথ্য পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে জেলসহ শাস্তির আওতায় আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে মর্মে হুশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়। জেলা প্রশাসক ভোক্তাদের এসব পণ্য ১-২ কেজির অধিক কিনে সংকট সৃষ্টি না করার জন্য অনুরোধ করেন।

এ প্রসঙ্গে ৮-বিজিবির কমান্ডিং অফিসার বলেন, ব্যবসায়ী মহল হতে গুদামের প্রাপ্ত তালিকার বাইরে অন্য কোন স্থানে গুদামজাত করছে কিনা সেটা গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে তদারকি করা হবে।

সভায় জেলা পুলিশ সুপার বলেন, চেম্বার অব্ কমার্স কর্তৃক ব্যবসায়ীদের নিয়ে সভা আহ্বান করে প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিকারীদের চিহ্নিত করার ব্যবস্থা নেয়া যায়। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা রয়েছে, এছাড়া আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার কার্যক্রম চলমান থাকবে বলে সভায় অবহিত করেন তিনি।  বিজ্ঞপ্তি