করোনা পরিস্থিতি জীবনযাত্রা স্বাভাবিক ও মানুষের ভোগান্তি কমাতে দোকান-পাট খোলা রাখা ও নগরে গণপরিবহন চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে শপিংমল, দোকানপাট চালুর কথা বলা হয়েছে। সুতরাং মানুষকে সচেতন হয়ে, স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে জীবন-জীবিকার সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে সচেষ্ট হতে হবে।
বাজারে ভোগ্যপণ্য এখন যথেষ্ট, রমজানকে সামনে রেখে বাড়তি চাহিদার বিবেচনায় নিত্যপণ্য বিপুল পরিমাণে আমদানি করা হয়েছে বলে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, তারা দাম বাড়ার আশঙ্কা নেই বলেও আমাদের প্রতিবেদকের কাছে বলেছেন।
তাছাড়া টিসিবি নগরীর ৩৫টি স্পটে তুলনামূলক কমদামে নিত্যপণ্য বিক্রি করছে। মানুষ লাইন ধরে টিসিবির পণ্য কিনছে, রমজানের সারা মাস টিসিবির বিক্রি অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়েছে। বাজার স্বাভাবিক থাকায় ক্রেতাদের অতিরিক্ত পণ্য কিনে মজুদ করার প্রবণতা পরিহার করতে হবে, লকডাউন ঘোষণার আগে মানুষ যেভাবে পণ্য কেনায় অস্থির হয়েছে তাতে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর সুযোগ পেয়েছেন। উচ্চবিত্ত কিংবা মধ্যবিত্তরা তাদের আর্থিক সক্ষমতার কারণে বেশি জিনিস কিনে বাজারকে যদি অস্থির করে তোলেন তা হলে নি¤œবিত্তরা মূল্যবৃদ্ধির চাপে পড়ে যান। চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেছেন, বন্দরে আরো পণ্য খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। প্রতিদিনই দাম পড়ছে, তাই দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই বলে তিনি জানিয়েছেন। তিনি ব্যাংকিং সময় কম হওয়ায় সমস্যা হচ্ছে বলে জানান। আমরা মনে করি প্রতিবার রমজান এলে নিত্যপণ্যের বাজারে যে অস্থিরতা দেখা দেয়, বর্তমান করোনা পরিস্থিতির মতো জাতীয় দুর্যোগের তা হবে না বলে জনগণ আশা করে। তবে ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন বলেন, রমজানের আগেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তিনি বাজার মনিটরিং যথাযথ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে সরকার লকডাউনের মধ্যে শপিংমল, দোকান পাট খুলে দেয়ায় এবং নগর এলাকায় গণপরিবহন চালু হওয়ায় জীবিকা ও অর্থনীতি গতিশীল থাকবে। তবে মানুষ যদি স্বাস্থ্যবিধি না মানে, পণ্য কিনতে হামলে পড়ে কিংবা গাদাগাদি করে যানবাহনে চলাচল করে তাহলে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞ ও স্বাস্থ্যবিদ্যগণ। এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনকে কঠোরভাবে বিধিবিধান প্রয়োগে সচেষ্ট থাকতে হবে। করোনায় মৃত্যু ও সংক্রমণ অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়েছে সুতরাং এ ক্ষেত্রে সকলেরই দায়িত্ব পালনে যথাযথ ভূমিকা নিতে হবে। গণপরিবহনে এবং শপিংমল, সকল ধরণের দোকানে স্যানিটাইজার ব্যবহার, নিয়মিত স্প্রে, ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই মাস্ক পরিধান, ভিড় পরিহার-এসব বিষয়ে কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। পরিবহন মালিক-শ্রমিক ও ব্যবসায়ী সংগঠনকে এসব বিষয়ে মনিটরিং করতে হবে জনস্বার্থেই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা ভাইরাস থেকে মানুষের জীবনরক্ষায় ভবিষ্যতে আরো কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার আভাস দিয়েছেন, এই সতর্কবাণী সকলকে বিবেচনায় নিতে হবে। সকলে যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে, টিকা নেন, সরকারের নির্দেশনা অনুসরণ করেন তবে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে পারে।
মতামত সম্পাদকীয়