বাজারে বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক »

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও কারফিউয়ের কারণে আগস্টের শুরুতে নিত্যপণ্য সরবরাহে ঘাটতি ছিল। এর ফলে প্রায় সকল পণ্যের দাম বেড়ে যায়। গত সপ্তাহে দুদিন দাম একটু কমলেও গতকাল থেকে শাকসবজি, মাছ, মাংস, ডিমসহ প্রায় সকল পণ্যের দাম বাড়তির চিত্র দেখা যায়।
বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর অন্যতম কাঁচাবাজার রেয়াজউদ্দিন ও বকসিরহাটে ঘুরে দেখা যায়, সব ধরনের সবজির দাম বাড়তি। পটল, পেপে, ঢেড়স, বরবটির মতো গ্রীষ্মকালীন সবজি ৮০ টাকার নিচে বিক্রি হয়নি। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। কাঁচামরিচ ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল তা এখন ১৪০ টাকা। গোল আলু ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল তা ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে মুন্সিগঞ্জের আলু ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায়।
বাজার সম্পর্কে সবজি বিক্রেতা মো. রুবেল বলেন, ‘গত সপ্তাহে সবজির দাম কিছুটা কমলেও এ সপ্তাহে দাম বাড়তি। আড়তদারেরা বাড়তি বিক্রি করলে আমাদের করার কিছু থাকে না।’
পাল্লা দিয়ে বেড়েছে আদা, রসুন ও পেঁয়াজের দাম। বাজারে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে আদা ও রসুন বিক্রি হয়েছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায়। আর কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা।
ব্যবসায়ীরা বলেন, আমদানি সংকটের কারণে আদা, রসুন ও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।
এদিকে সবজির পাশাপাশি ডিম ও মুরগির দামও কিছুটা বাড়তি দেখা যায়। ডিম বিক্রি হচ্ছে ডজন ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা। বড় সাইজের ব্রয়লার ১৬০ টাকা ও মাঝারি সাইজের ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। চড়া দরের মধ্যে কোন পরিবর্তন আসেনি গরুর মাংসের দরে। গরু ও মহিষের মাংস বিক্রি হয়েছে কেজি ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকা। খাসির মাংস ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা।
মুরগি ব্যবসায়ী মো. কামাল উদ্দিন বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগির দাম কিছুটা বাড়তি। সরবরাহ ভালো থাকলেও পোল্ট্রি খামারিরা দাম বাড়াচ্ছে।
এদিকে সমুদ্রের মাছের সরবরাহ বাড়লেও দামে কোন পরিবর্তন আসেনি। কেজি ২০০ থেকে ৩০০ টাকার নিচে কোন মাছ বাজারে বিক্রি করছে না। ১২০ থেকে ১৪০ টাকার লইট্যা মাছ বিক্রি হয়েছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা। ১৫০ থেকে ১৭০ টাকার পাঙ্গাস ও তেলাপিয়া বাজারে বিক্রি করছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা। মাইট্যা ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা, পোয়া ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, রুই-কাতলা ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা। পাবদা বিক্রি হচ্ছে মানভেদে কেজি ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা। মৃগেল ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, টেংরা ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, চিতল ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা।
মাছ ব্যবসায়ী কমল দাস বলেন, আড়তে মাছের দাম বাড়তি। তার মধ্যে বাজার যোগান অনুযায়ী সমুদ্রের মাছ পর্যাপ্ত নয়। তাই চাষের মাছের উপর প্রভাব পড়েছে। এদিকে মাছ চাষিরা দাম বাড়িয়েছে। যার ফলে দামে প্রভাব পড়ছে না।
বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে সকল ধরনের চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা। নাজির ও মিনিকেট মানের সরু চাল বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। পাইজাম ও লতা মানের মাঝারি চাল বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। আর স্বর্না ও ইরি মানের চালের দাম কোন পরিবর্তন আসেনি। এই চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৫ টাকায়।
অপরদিকে অপরিবর্তিত রয়েছে প্রায়সব মুদিপণ্যের বাজার। বাজারে ছোট মসুর ডাল ১৪০ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৬০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৮০ টাকা, খেসারি ডাল ১২০ টাকা, বুটের ডাল ১১৫ টাকা, ডাবলি ৮০ টাকা, ছোলা ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা, খোলা সয়াবিন ১৪৭ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১৪৫ টাকা, খোলা চিনি ১৫০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১৩০ টাকা।