বাজারদর : কাঁচামরিচ-ধনেপাতার দামে ডাবল সেঞ্চুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক

সপ্তাহের ব্যবধানে বেশিরভাগ সবজির দাম কিছুটা কমলেও ডাবল সেঞ্চুরিতে কাচাঁমরিচ ও ধনে পাতার বাজার। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে চড়া দরের মধ্যে স্থিতিতে থাকা মাছ, ব্রয়লার, গরুর মাংস ও ডিমের বাজারে এ সপ্তাহেও কোন ধরনের পরিবর্তন হয়নি। বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর অন্যতম কাঁচাবাজার রেঁয়াজউদ্দিন বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়। বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহে কাঁচামরিচ কেজিপ্রতি ১২০ থেকে ১৩৫ টাকা পর্যন্ত বিক্ষি হলেও গতকাল তা বিক্ষি হয়েছে ১৬০ থেকে ২০০ টাকা। আর যে মানের ধনেপাতা গত সপ্তাহে বিক্ষি হয়েছিল ১২০ টাকা তা বিক্ষি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা। বাজার করতে আসা মো. আল আমিন বলেন, সবজির দাম কিছুটা কমলেও মাছ, মাংস, আদা, রসুনসহ মুদি পণ্যের দাম কমেনি। বরং ঈদের আগেই সবকিছুর দাম বাড়াচ্ছে। গতবছরও ঈদকে ঘিরে ব্যবসায়ীরা কাঁচামরিচের দাম বাড়িয়েছিল। এবারও তা দেখা যাচ্ছে। কয়েকদিন আগে যে কাঁচা মরিচ ১০০ টাকায় বিক্ষি করছিল তা আজকে ২০০ টাকা। কাঁচামরিচ ও ধনেপাতার দামের বিষয়ে ব্যবসায়ীরা জানান, কালবৈশাখীর কারণে নওগাঁ, রাজশাহী, জয়পুরহাটের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয় তাই মরিচ গাছ নষ্ট হয়েছে। এ কারণে সরবরাহে ঘাটতি থাকায় বাজারে কৃত্রিম সংকট দেখা দেয়। এজন্য মরিচ ও ধনে পাতার দাম বেড়েছে। এদিকে সপ্তাহ দুয়েক আগেও প্রায় সকল সবজির দাম শতকের কাছাকাছি পৌঁছালে ও গতকাল বাজারে কিছুটা কমতির দিকে দেখা যায়। বাজারে টমেটো ৪০ টাকা, গাজর ৬০ থেকে ৮০ টাকা, সকল ধরনের বেগুন ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা, শসা ৬০ টাকা, উচ্ছে ৬০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, কাঁকরোল ৪৫ টাকা, পেঁপে ৪৫ টাকা, মুলা ৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, ধুন্দল ৬০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা, বরবটি ৪৫ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্ষি হয়েছে। সে হিসেবে প্রায় সবজির
দাম কেজিপ্রতি কমেছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। এদিকে ব্রয়লার মুরগির দামও সামান্য কমেছে। বড় সাইজের বা বেশি ওজনের ব্রয়লার মুরগি ১৯০ থেকে ২০০ টাকা। তবে চড়া দরের মধ্যে এ সপ্তাহেরও স্থিতিতে রয়েছে সোনালি ও দেশি মুরগির দাম। বাজারে সোনালি মুরগি বিক্ষি হয়েছে ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকা আর দেশি মুরগি ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চড়া হওয়া ডিমের বাজারে কোন পরিবর্তন আসেনি। বাজারে লাল ফার্মের ডিম বিক্ষি হয়েছে ডজন প্রতি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। আর সাদা ফার্মের ডিম বিক্ষি হয়েছে ১৫০ টাকা। হাঁসের ডিম ২২০ টাকা। ঈদের আগে থেকে চড়া গরু ও খাসির মাংসের দাম স্থিতিতে থাকলেও মহিষের মাংসের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ১০০ টাকা। গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৭৫০ থেকে ৯৫০ টাকা আর খাসির মাংস ১ হাজার ১০০ টাকা। এদিকে কেজিপ্রতি ১০০ টাকা বেড়ে মহিষের মাংস বিক্ষি হয়েছে ৭৫০ থেকে ৯৫০ টাকা। অন্যদিকে সমুদ্রের মাছ ধরা বন্ধ থাকলেও বাজারে পর্যাপ্ত মাছের যোগান রয়েছে, কিন্তু সে অনুযায়ী দামের কোন পরিবর্তন আসেনি। বরং সপ্তাহের ব্যবধানে সমুদ্রের মাছের দাম কিছুটা বেড়েছে। দেশি মাছের দাম রয়েছে স্থিতিতে। বাজারে ইলিশ মাছ কেজি ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা, রুই মাছ ৩৮০ থেকে ৫০০ টাকা, কাতল মাছ ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা, কালিবাউশ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, চিংড়ি মাছ ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, রুপচান্দা ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা দরে পর্যন্ত বিক্ষি হয়েছে। এছাড়া দেশি চাষের কই মাছ ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, শিং ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, মাগুর ৩০০ টাকা, পাবদা ৪০০ টাকা। খুচরা দোকানে নতুন দেশি রসুন ২০০ টাকা, চায়না রসুন ২২০ টাকা, চায়না আদা ২৬০ টাকা, ভারতীয় আদা ২৬০ দরে বিক্ষি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে চায়না আদার দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকা। প্যাকেট পোলাওয়ের চাল ১৫৫ টাকা, খোলা পোলাওয়ের চাল মানভেদে ১১০ থেকে ১৪০ টাকা, ছোট মসুরের ডাল ১৪০ টাকা, মোটা মসুরের ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৬০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৮০ টাকা, খেসারি ডাল ১২০ টাকা, বুটের ডাল ১১৫ টাকা, ডাবলি ৮০ টাকা, ছোলা ১০০ টাকা দরে বিক্ষি হচ্ছে। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৪৭ টাকা, কৌটাজাত ঘি ১ হাজার ৩৫০ টাকা, খোলা ঘি ১ হাজার ২৫০ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১৪৫ টাকা, খোলা চিনি ১৩০ টাকা। ময়দা দুই কেজি প্যাকেট ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১৩০ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকা।