সুপ্রভাত ডেস্ক »
আফগানিস্তানের চলমান পরিস্থিতি তাসখন্দ থেকে পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ। কাবুলে ১৯৭৯ সনের পর থেকে বাংলাদেশের কোনো দূতাবাস না থাকায় তৃতীয় কোনো দেশ থেকে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি মনিটর করছে বাংলাদেশ।
বর্তমানে উজবেকিস্তানের রাজধানী তাসখন্দ থেকে আফগান পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছেন সেখানকার রাষ্ট্রদূত জাহাঙ্গীর আলম। তিনি এই প্রতিনিধিকে বলেন, ঢাকায় আফগান দূতাবাসের মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় খোঁজখবর রাখছে। আমি তাসখন্দ থেকে যা পাই তা ঢাকাকে অবহিত করছি। মিশনে একটি হটলাইন চালু করা হয়েছে। ই-মেইল নম্বরও দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের সোর্স মারফত কিছু খবরাখবর পাচ্ছি। যেসব বাংলাদেশি সেখানে কর্মরত ছিলেন তাদের ব্যাপারেও আমরা খোঁজ-খবর রাখছি। বিশেষ করে, এনজিও কর্মিদের ব্যাপারেও আমরা খোঁজ রাখছি। চারজন বাংলাদেশি জেলে আছেন। আমরা তাদের মুক্ত করার চেষ্টা করছি। উজবেকিস্তান আফগানিস্তানের সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে।
সম্প্রতি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ওয়েবিনারে অংশ নিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার ভ্রাতৃপ্রতিম রাষ্ট্র আফগানিস্তানে শান্তির পতাকা উড়ছে, এমনটাই দেখতে চায় বাংলাদেশ। আমরা চাই, কাবুলের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হোক। তালিবানের পুনরুত্থানে সেখানে দূতাবাস রয়েছে এমন দেশগুলো বিচলিত। তাদের নাগরিক এবং কূটনীতিকদের অবিলম্বে কাবুল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অনেক দেশ সরাসরি তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিয়ে গেছে। বাংলাদেশের যেহেতু দূতাবাস নেই সে কারণে কূটনীতিকদের নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা নেই।
বিশ্বের বৃহত্তম এনজিও ব্র্যাকের কয়েক হাজার কর্মী সেখানে কর্মরত রয়েছেন। ২০০২ সন থেকে সংস্থাটি সেখানে শিক্ষা, কারিগরি ও স্বাস্থ্য প্রকল্পে কাজ করে যাচ্ছে। ১৪টি প্রদেশের ৯৫টি এলাকায় রয়েছে ব্র্যাকের নেটওয়ার্ক। বাংলাদেশের এই নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে ব্র্যাকের তরফে সরকারের কাছে কোনো অনুরোধ জানানো হয়নি এখন পর্যন্ত। এ সম্পর্কে রাষ্ট্রদূত জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, আমাদের কাছে কোনো অনুরোধ আসলে আমরা অবশ্যই বিবেচনা করবো।
ওদিকে ব্র্যাক জানিয়েছে, আফগানিস্তান থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক সেনা প্রত্যাহার শুরুর পর থেকে দেশটিতে ক্রমবর্ধমান সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে ব্র্যাক তার কর্মীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নিয়েছে। আফগানিস্তানে কর্মরত কর্মীদের ঝুঁকি নিরসন করে তাদের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনাল, জানিয়েছেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক শামেরান আবেদ।
গত ১৯ বছরের বেশি সময় ধরে দেশটিতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কমিউনিটির উন্নয়ন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত সহায়তা, মানবিক সহায়তা এবং খাদ্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত সেবা দিয়ে আসছে ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনাল। দেশটির দশটি প্রদেশে প্রায় তিন হাজার ব্র্যাক কর্মী কাজ করছেন। এদের মধ্যে ১২ জন বাংলাদেশিসহ প্রবাসী ১৪ জনকে নিজ নিজ দেশে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। প্রবাসী কর্মীদের মধ্যে তিনজন বাংলাদেশিসহ ৫ জন ছুটিতে দেশটির বাইরে ছিলেন। যাদের আফগানিস্তান ফিরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। বাকি ৯ জন বাংলাদেশির মধ্যে তিনজন দেশটি থেকে আজ শুক্রবার বিমানযোগে রওনা দিয়েছেন এবং বাকি ৬ জনের আগামী ২২ তারিখের মধ্যে রওনা দেওয়ার কথা রয়েছে।
সূত্র : ভিওএ