বাংলাদেশকে ১০টি রেল ইঞ্জিন উপহার দিল ভারত
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. জয়শংকর এবং রেল, শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল সোমবার ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ১০টি ব্রডগেজ লোকোমোটিভের বাংলাদেশের উদ্দেশে যাত্রা সূচনা করেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন রেলপথ প্রতিমন্ত্রী অঙ্গদি সুরেশ। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে আব্দুল মোমেন লোকোমোটিভগুলো গ্রহণ করেন।
ভারত সরকারের অনুদান সহায়তায় এই লোকোমোটিভগুলির হস্তান্তর, ২০১৯ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে করা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি পূরণ করে। ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রয়োজনীয়তা অনুসারে লোকোমোটিভগুলিকে যথাযথভাবে পরিবর্তন করা হয়েছে। এই লোকোমোটিভগুলি বাংলাদেশে যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেনের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে সহায়তা করবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. জয়শংকর পারস্পরিক বিশ্বাস ও শ্রদ্ধার ভিত্তিতে রচিত ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার কালোত্তীর্ণ সম্পর্কের গভীরতার কথা তুলে ধরেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. জয়শংকর বলেন, আমি বাংলাদেশের কাছে ১০ টি ব্রডগেজ লোকোমোটিভ হস্তাস্তর অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পেরে আনন্দিত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রগতিশীল দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে আমাদের দুই দেশের সম্পর্কের ‘ সোনালী অধ্যায়’ রচনা চলমান রয়েছে।
তিনি বলেন, চলমান কোভিড মহামারী আমাদের সামগ্রিক সহযোগিতার গতি স্তিমিত করতে পারেনি। ২০২০ সালের মে মাসে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন ও বাণিজ্য সম্পর্কিত প্রোটোকলটিতে দ্বিতীয় সংযোজন স্বাক্ষরের ফলে প্রোটোকল রুটের সংখ্যা ৮ থেকে ১০ এ উন্নীত হয়েছে। ভারত বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ উন্নয়নের অংশীদার।
কোভিড-১৯ মহামারীতেও দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার গতি হ্রাস না পাওয়ায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, চলমান ঐতিহাসিক মুজিববর্ষে তিনি এ জাতীয় আরও মাইলফলক অতিক্রম করার প্রত্যাশা করছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৫০ বছর উদযাপন করতে চলেছি। আমাদের বন্ধুত্বের বন্ধনকে আরও জোরদার হোক। রেলপথ, শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও যোগাযোগ বৃদ্ধিতে এবং দু’দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বকে আরও জোরদার করতে রেল সহযোগিতার তাৎপর্যকে গুরুত্ব দেন।
সম্প্রতি স্থল সীমান্ত দিয়ে বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত হওয়ায় ভারত ও বাংলাদেশ কোভিড-১৯ মহামারীর প্রভাব হ্রাস করতে রেল সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি করেছে। ব্যয় সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব বাহন হিসাবে রেল আন্তঃসীমান্ত পণ্য পরিবহনে সহায়তা করেছে। জুন মাসে দু’দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মালবাহী ট্রেন চলাচল হয়েছিল। প্রয়োজনীয় পণ্য এবং কাঁচামাল বহনের জন্য মোট ১০৩টি মালবাহী ট্রেন ব্যবহৃত হয়।
সম্প্রতি, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পার্সেল এবং কনটেইনার ট্রেন পরিষেবাও শুরু হয়েছে। এতে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিজ্ঞপ্তি