পত্রিকায় প্রকাশিত সর্বশেষ (বুধবার পর্যন্ত) তথ্য অনুযায়ী, এখনো ১২ লাখ ২৭ হাজার ৫৫৪টি পরিবার পানিবন্দী হয়ে আছে, যা আগের দিন ছিল ১২ লাখ ৭ হাজার ৪২৯টি পরিবার। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৮ লাখ ২২ হাজার ৭৩৪। এখন পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে ৪ হাজার ৩টি। এগুলোতে ৫ লাখ ৪০ হাজার ৫১০ জনকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
দুর্গত এলাকা বন্যার পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে আসছে বন্যার ক্ষতচিহ্ন। সে সঙ্গে দেখা দিচ্ছে পানি বাহিত বিভিন্ন রোগব্যাধি। ডায়রিয়া, চর্মরোগসহ জ্বর, সর্দি–কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছে বন্যার্ত এলাকার মানুষ। অনেকের হাতে–পায়ে ঘা, খোস–পাঁচড়া দেখা দিচ্ছে।
অন্তত ৯ দিন ধরে বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করায় চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লায় বয়স্ক ও শিশুরা জ্বর, সর্দি–কাশি ও ডায়রিয়ায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। বন্যার্তরা বলছেন, চারদিক এখনো পানিতে তলিয়ে আছে। ফলে সেবা দিতে পারছে না অনেক কমিউনিটি ক্লিনিক। পর্যাপ্ত ওষুধপত্র ও চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ ।
এ পরিস্থিতিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের চিকিৎসাসেবা দিতে ১১ জেলায় ৬১৯টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে। বন্যায় মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেড়েছে। বুধবার দুপুর পর্যন্ত ৩১ জন মারা গেছেন বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
ফেনীর পরশুরাম ও ফুলগাজীতে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও ছাগলনাইয়া, ফেনী সদর, সোনাগাজী ও দাগনভূঞা উপজেলায় বন্যার পানি নামছে ধীরগতিতে। ফেনীর বিভিন্ন দুর্গম গ্রামের স্থায়ী-অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নেওয়া দুর্গত মানুষের কাছে চিকিৎসাসেবা পৌঁছাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। সেখানে বেশির ভাগ কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ। বেশির ভাগ স্থায়ী-অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে স্বাস্থ্যকর্মীরা পৌঁছাতে পারছেন না। এতে শিশুদের নিয়ে বিপাকে আছেন অভিভাবকেরা।
দূষিত পানি পান ও বন্যার পানি মাড়িয়ে চলাফেরা করার কারণে পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন লক্ষ্মীপুরের বন্যার্ত মানুষজন। এ অবস্থায় দুর্গত এলাকার জন্য জরুরি ভিত্তিতে ওষুধ বরাদ্দ চেয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। কিন্তু গতকাল পর্যন্ত ৫০ হাজার ওরস্যালাইন পাওয়া গেছে।
যারা বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ তৎপরতা চালাচ্ছেন তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই এ বিষয়ে যেন তারা খেয়াল করেন। ত্রাণে যেন তারা ওষুধও যুক্ত করেন।