চসিকের সভায় মেয়র
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, নগরীকে সাজাতে চসিকের প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। গৃহকরের উপর নির্ভর করে বিশাল অংকের আর্থিক ব্যয় নির্বাহ করতে হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সিটি করপোরেশনকে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হতে হবে। চসিক নগরীতে যে সড়কগুলো নির্মাণ করছে সেগুলোতে ধারণ ক্ষমতার অনেক কম। চট্টগ্রাম বন্দরের ২০ হতে ৩০ টন বোঝাই মালামাল ট্রাক ও লরি চলাচলের কারণে সড়কগুলো দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাই বন্দর ব্যবহারকারী পরিবহনগুলো থেকে নিদিষ্ট হারে ট্যাক্স আদায় এবং কাস্টমের বিল অব এন্ট্রি থেকে একটি নির্দিষ্ট হারে চার্জ আদায় করা দরকার। এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়সহ যথাযথ কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হবে।
গতকাল রোববার সকালে সিটি করপোরেশনের ১৯তম সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলমের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন- প্যানেল মেয়র আবদুস সবুর লিটন, মো. গিয়াস উদ্দিন, আফরোজা কালাম, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলরগণ, চসিক সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, মেয়রের একান্ত সচিব ও প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবুল হাশেম প্রমুখ।
মেয়র আরো বলেন, চট্টগ্রাম নগরীতে ভবন নির্মাণের নকশা অনুমোদন করার ক্ষেত্রে চউকের উপর একক দায়িত্ব না রেখে চসিককেও দায়িত্ব দেয়ার পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তিনি নগরীকে পরিচ্ছন্ন রাখার উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, পরিচ্ছন্ন বিভাগকে ৬টি জোনে ভাগ করা হলেও কিছু-কিছু ক্ষেত্রে কাজের সমন্বয়ের অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে সমন্বয় সাধনসহ ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে উচ্ছেদকৃত অবৈধ দখলদারগণ যাতে পুনরায় উচ্ছেদতৃক জায়গা দখল করতে না পারে সেখানে ফেন্সিং এবং বাগান করার নির্দেশনা দেন।
মেয়র ২ হাজার ৫শত কোটি টাকার প্রকল্পের টেন্ডার আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ করে শুকনো মৌসুমে নির্ধারিত সময়ে সড়ক উন্নয়ন কাজ করাসহ বরাইপাড়া খালের অগ্রগতি মাসিক প্রতিবেদন আকারে পেশ করার জন্য প্রকৌশলীদের নির্দেশনা প্রদান করেন। এছাড়া যান্ত্রিক শাখার গাড়িগুলো মাদারবাড়ি চসিকের গ্যারেজে রেখে রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত নিশ্চিত করার কথা উল্লেখ করেন।
তিনি নগরবাসীকে গৃহকরের উপর মহল বিশেষের বিভ্রান্তিতে কর্ণপাত না করে নতুন ধার্যকৃত করের অসংগতিগুলো দুর করার জন্য অভিযোগের ক্ষেত্রে স্ব-স্ব কাউন্সিলরকে করদাতাদের সহযোগিতা করার আহ্বান জানান এবং কর আদায়ের ক্ষেত্রে কোন অভিযোগ আসলে সংশ্লিষ্ট কর আদায়কারীর বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে পুনরায় উল্লেখ করেন।
চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্তৃপক্ষ মোহরা সিএন্ডবি এলাকায় ফুটপাতের উপর সীমানা দেয়াল নির্মাণ করায় সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করে অনতিবিলম্বে তা সরিয়ে নেয়ার আহ্বান জাননো হয়। এছাড়া বিনা অনুমতি বা মেয়াদোত্তীর্ণ অনুমতিপত্র দ্বারা রাস্তা কর্তন করা হলে সংশ্লিষ্ট গ্রাহক ও ওয়াসার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে উল্লেখ করেন। অন্যদিকে রাস্তা সম্প্রসারণের ফলে বিদ্যুতের পোল রাস্তার মাঝখানে থাকায় দুর্ঘটনাসহ জনসাধারণের চলাচলে ভোগান্তি নিরসনে পরিদর্শনপূর্বক দ্রুত তা অপসারণের ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন।
মেয়র অবৈধ উচ্ছেদ অভিযানে পুলিশ, র্যাব ও প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন এবং বিগত সাধারণ সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের উপর গুরুত্বারোপ করেন। সভায় চসিক মেয়রকে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা প্রদান করায় নগরবাসীর পক্ষে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জনানো হয়। বিজ্ঞপ্তি