চট্টগ্রামে বিনিয়োগ বোর্ডের কার্যালয় গুটিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এর কার্যক্রম শুধুমাত্র ঢাকার প্রধান কার্যালয় থেকে পরিচালিত হবে বলে জানানো হয়েছে। সরকার বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) সব বিভাগীয় কার্যালয় গুটিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত ১৪ অক্টোবর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ মুখলেছুর রহমান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে জানানো হয়, আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এসব কার্যালয় বিলুপ্ত করা হবে। ইতোমধ্যে এসব কার্যালয়ের মালামালের বিস্তারিত তালিকা তৈরি ও ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সব নথি প্রধান কার্যালয়ে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে বিডার অনলাইন ওয়ান স্টপ সার্ভিস (ওএসএস) সেবা শুধুমাত্র প্রধান কার্যালয় থেকে দেওয়া হবে। এ নির্দেশের আওতায় বিভাগীয় কার্যালয়গুলোকে বিদ্যুৎ, পানি, ইন্টারনেট, ভাড়াসহ সব ধরনের দায়–দেনা পরিশোধ করে অফিস বন্ধ করতে বলা হয়েছে। প্রশাসনিকভাবে এটি সরকারি বিনিয়োগ প্রশাসনের এক গুরুত্বপূর্ণ পুনর্গঠন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরের কারণে চট্টগ্রাম দেশি–বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নিকট গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থান। এখানকার ইপিজেড এবং অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে হাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে। রয়েছে বিনিয়োগ প্রস্তাব। এসব বিনিয়োগের প্রতিটির সাথে সম্পর্ক রয়েছে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের। স্থানীয়ভাবে যা বিনিয়োগ বোর্ড হিসেবে পরিচিত।
বিডা মূলত বিনিয়োগে প্রচার, অনুমোদন ও সহজীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিনিয়োগে উৎসাহিত করার পাশাপাশি বিনিয়োগ আকর্ষণের মতো পরিবেশ তৈরি, প্রয়োজনীয় অনুমোদনসহ নানা ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বোর্ড দায়িত্ব পালন করে। দেশি–বিদেশি ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের বিনিয়োগ বোর্ডে প্রচুর কাজ থাকে। চট্টগ্রামে বিনিয়োগ বোর্ডের কার্র্যালয় থাকার কারণে এসব কাজ অনেক সহজ ছিল।
গত অর্থবছরে চট্টগ্রামে ২ হাজার ৪১২ কোটি ৯৩ লাখ টাকা বিনিয়োগ হয়েছে উল্লেখ করে সূত্র বলেছে, বিপুল এই বিনিয়োগে চট্টগ্রামস্থ কার্যালয় থেকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এর আগের বছর চট্টগ্রামে বিনিয়োগ ছিল ৩ হাজার ৪৫০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এভাবে হাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগকারীদের জন্য এখানে বিনিয়োগ বোর্ডের কার্যালয় থাকা জরুরি বলে ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিরা মন্তব্য করেছেন। দেশের অর্থনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল চট্টগ্রামে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কার্যালয় বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্তে ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এতে ব্যবসা–বাণিজ্যসহ বিনিয়োগের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হবে বলে তারা মন্তব্য করেছেন। সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনার দাবি জানাই আমরা।


















































