চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ৭১’র ২৫ মার্চ পাকিস্তান বাহিনী অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে নজিরবিহীন গণহত্যার মাধ্যমে শুধু ঢাকা শহরে ১ লক্ষ বাঙালিকে হত্যা করে বিশ্বে সবচাইতে ঘৃণিত অপকর্মটি করেছে। পৃথিবীর ইতিহাসে একদিনে এত বড় গণহত্যা আর কখনো ঘটেনি। বিশ্ব মানবতার কল্যাণ ও সার্বিক অগ্রগতির স্বার্থে এই দিনটিকে আমরা কিছুতেই ভুলতে পারি না। আন্তর্জাতিক সংস্থা ও সংগঠনের কাছে এই দিনটিকে বৈশ্বিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া আজ সময়ের দাবি।
গতকাল শনিবার সকালে গণহত্যা দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ’৭১ এর ২ মার্চ থেকে বঙ্গবন্ধুর ডাকে অসহযোগ অহিংস আন্দোলন শুরু হলে পূর্ব পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণ শাসকগোষ্ঠীর কাছে ছিল না। তারা বুঝে গিয়েছিল বাঙালিকে আর দাবিয়ে রাখা যাবে না। এজন্য মরণ কামড় হিসেবে অপারেশন সার্চ লাইটের আওতায় মধ্যরাতে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় শহরে অতর্কিতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী গণহত্যায় মেতে উঠে। নিন্দনীয় কাজটি শুধু জঘন্য অপরাধই নয়, নিরস্ত্র মানুষের ওপর সবচেয়ে বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞ।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ২৫ মার্চ রাত ১১টা ২০ মিনিটে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গণহত্যা শুরুর পরপরই রাত সাড়ে ১১টায় বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন এবং যার যা কিছু আছে তা দিয়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বাঙালিকে প্রতিরোধ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ৭১ এর ২৫ মার্চ মধ্যরাতে স্বাধীনতা ঘোষণার পরপরই বঙ্গবন্ধু আত্মগোপন করতে পারতেন এমনকি প্রতিবেশী দেশে চলেও যেতে পারতেন। কিন্তু দূরদর্শী নেতা বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন তিনি যদি আত্মগোপন করেন তাহলে শাসকগোষ্ঠী তাকে বিচ্ছিন্নতাবাদী আখ্যায়িত করবে। এর ফলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের আন্তর্জাতিক সুহানুভূতি কিছুটা হলেও বিঘিœত হত। বঙ্গবন্ধু প্রমাণ করেছেন, ৭০ এর নির্বাচনে বাঙালির ভোটাধিকারে তিনি একক নেতা হিসেবে অভিষিক্ত হন। তারপরও পাকিস্তানিরা তার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করায় বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা করা ছাড়া আর কোন উপায় ছিল না। এটাই হচ্ছে ঐতিহাসিক সত্য ও বাস্তবতা। এই সত্য বাস্তবতা যারা স্বীকার করেন না তারা ইতিহাস বিস্মৃত মিথ্যাচারী ও সত্যবিক্রিতকারী।
এসময় তিনি চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচনে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, ত্যাগী ও পরিচ্ছন্ন নেতা নোমান আল মাহমুদকে নৌকা প্রতীক নিয়ে মনোনয়ন দেয়ায় দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান এবং দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপ-নির্বাচনে নোমান আল মাহমুদকে বিজয়ী করার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনীর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নঈম উদ্দীন চৌধুরী, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, উপপ্রচার সম্পাদক মো. শহিদুল আলম, নির্বাহী সদস্য গোলাম মো. চৌধুরী, মহব্বত আলী খান, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ইদ্রিস কাজেমী, অ্যাড. আইয়ুব খান, জাফরুল হায়দার সবুজ, ফারুক আহমদ, মো. রিজুয়ান, আশীষ ভট্টাচার্য্য, সাইফুল আলম বাবু, লুৎফুল হক খুশী।
সভামঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাড. ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক আদনান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুক, দপ্তর সম্পাদক হাসান মাহমুদ শমসের, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক চন্দন ধর, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক হাজী মো. হোসেন, ধর্ম-সম্পাদক হাজী জহুর আহমদ, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক দিদারুল আলম চৌধুরী, শ্রম সম্পাদক আব্দুল আহাদ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আবু তাহের, কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাড. কামাল উদ্দীন আহমেদ, সাইফুদ্দিন খালেদ বাহার, ড. নেছার উদ্দীন আহমেদ মঞ্জু, হাজী বেলাল আহমদসহ ৪৪টি সাংগঠনিক ওয়ার্ড, ১৫টি থানা ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এছাড়া সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলওয়াত ও বিশেষ মোনাজাত করেন হাজী জহুর আহমদ।বিজ্ঞপ্তি