চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী গত ৩০ জানুয়ারি সংস্থাটির মাসিক সভায় ফুটপাত দখলমুক্ত করার ঘোষণা দেন। ঘোষণার আট দিন পর এ লক্ষ্যে অভিযান পরিচালনা করে চসিক। সাতজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের অভিযানে ৭০০ হকারকে উচ্ছেদ করা হয়। অভিযানে সাতজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ২৫০ পুলিশ, ৩০ জন র্যাব, ২০০ শ্রমিক, বিপুল সংখ্যক চসিকের নিরাপত্তা ও আনসার সদস্য অংশ নেন।
চট্টগ্রামে কোনো ফুটপাতে পথচারী চলাচল করতে পারে না। ফুটপাতে দোকান বসিয়ে অনেকে সেখানে স্থায়ী অবকাঠামোও গড়ে তুলেছিল। এই অভিযানে সেগুলোও উচ্ছেদ করা হয়েছে। নগরীর সব ফুটপাত উদ্ধার করে পথচারীদের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে অতীতে অনেকবার অভিযান চালানো হলেও কিছুদিনের মধ্যে তা আবার পূর্বাবস্থায় ফিরে যেতো। অনেক সময় হকারদের প্রতিরোধের কারণেও অভিযান সফল করা যেত না। ফলে উচ্ছেদ হওয়া ফুটপাত বেশিদিন দখলমুক্ত রাখাও সম্ভব হয়নি। তাই এবার ফুটপাত দখলমুক্ত করার পরিকল্পনাটি গোপন করে সিটি মেয়রের নির্দেশে গত বৃহস্পতিবার সকালে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অল্প সময়ের অভিযানে নিউমার্কেটের পুরো এলাকা ফুটপাত দখলমুক্ত করা হয়। তবে বেলা সোয়া ১টার পর উচ্ছেদের প্রতিবাদে পুরাতন রেলস্টেশন এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন হকাররা। মিছিল নিয়ে নিউমার্কেট মোড়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন তারা।
এ প্রসঙ্গে চসিকের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, ‘অবৈধ স্থাপনায় দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত রাখবে। অভিযানের সময় বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সহায়তা করেছেন। উচ্ছেদের পর এলাকাটি কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘেরা হয়েছে। যাতে ফের দখল না হয়। এরপরও চসিকের পক্ষ থেকে নজরদারিতে রাখা হবে।’
অভিযান প্রসঙ্গে সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘নিউমার্কেট মোড়ের হকার উচ্ছেদ এক শ্রেণির চাঁদাবাজদের কারণে খুবই কঠিন। এ চাঁদাবাজদের কারণে মানুষ স্বস্তিতে হাঁটতে পারত না, সড়কে জ্যাম লেগে থাকত। আমি সাহস করে এবং নিজের ওপর ঝুঁকি নিয়ে চট্টগ্রামের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছি। উদ্ধার হওয়া জায়গা রক্ষায় কাঁটাতারের বেড়াও দিয়েছি। পাশাপাশি উদ্ধার হওয়া জায়গায় নিয়মিত মনিটরিং চলবে। কোন হুমকি, ধামকি বা প্রলোভনে কাজ হবে না।
আমরাও আশা করতে চাই, মেয়রের কথায় আস্থা রাখতে চাই তবে সে সঙ্গে এই বিপুল পরিমাণ হকারদের জন্য একটি বিকল্প ব্যবস্থা করা যায় কিনা তা ভেবে দেখারও অনুরোধ জানাই। কারণ বেশি জনসংখ্যার এ দেশে সে পরিমাণ কর্মসংস্থান যেহেতু সৃষ্টি করা যায়নি সেহেতু এই হকারদের জন্যও রাষ্ট্রের কিছু করার আছে। তবে অবশ্যই তা একটি নীতিমালা ও শৃঙ্খলার ভিত্তিতে। প্রয়োজনে নগরবিদ ও হকার প্রতিনিধিদের মতামত নেওয়া যেতে পারে। তবে একটি নগরের সৌন্দর্য ও শৃঙ্খলার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়েই তা করতে হবে।
এ মুহূর্তের সংবাদ