প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা শিক্ষকদের

সুপ্রভাত ডেস্ক »

জাতীয়করণ বঞ্চিত বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো দ্রুত জাতীয়করণের দাবিতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সাধারণ শিক্ষক ঐক্য পরিষদ। সংগঠনটি জানিয়েছে, ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারির গেজেটের আলোকে যেসব বিদ্যালয় এখনো জাতীয়করণের বাইরে রয়ে গেছে, সেসব বিদ্যালয়ের দাবি আদায়ে প্রধান উপদেষ্টার সরাসরি হস্তক্ষেপ এখন একান্ত প্রয়োজন।

মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের ফুটপাতে আন্দোলনের ২৪তম দিনে তাদের অবস্থান চালিয়ে যেতে দেখা যায়।

শিক্ষকরা জানান, ২০১৩ সালে প্রকাশিত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ২০১২ সালের ২৭ মে’র আগে আবেদন করা, দলিল করা এবং স্থায়ী-অস্থায়ী নিবন্ধিত সব বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের আওতায় আনার কথা থাকলেও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ৩০ হাজারের অধিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ২৬ হাজার ১৯৩টি জাতীয়করণ করা হয়।

তারা আরও বলেন, ২০১৬ সালের ২৮ জুলাই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিদ্যালয় শাখার উপসচিব গোপাল চন্দ্র দাস স্বাক্ষরিত পত্রে জাতীয়করণযোগ্য বিদ্যালয় যাচাই-বাছাই করে ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। ২০১৮ সালের মার্চে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তৎকালীন মহাপরিচালক ড. এফ. এম. মঞ্জুর কাদিরও জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ পেলেই বঞ্চিত বিদ্যালয় জাতীয়করণের কাজ শুরু হবে। একই বছর ২০ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকেও জাতীয়করণের বিষয়ে প্রয়োজনীয় সারসংক্ষেপ পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ ছাড়া ২০২০ সালে একাদশ জাতীয় সংসদের ১৩তম বৈঠকেও সংসদ সদস্যরা বাদ পড়া প্রতিষ্ঠানের জাতীয়করণ বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন। ২০২০-২১ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের উল্লেখ থাকলেও কার্যকর অগ্রগতি হয়নি।

২০১৮ সালে ১৮ দিন, ২০১৯ সালে ৫৬ দিন, ২০২২ সালে ২ দিন, ২০২৩ সালে ১৭ দিন এবং ২০২৪ সালে ৯ দিনসহ বিভিন্ন সময় আন্দোলন করলেও অগ্রগতি হয়নি। সর্বশেষ ২০২৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হলে তাও বাস্তবায়নের উদ্যোগ দেখা যায়নি। যদিও গত ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কনসালটেশন কমিটি অনধিক ৫ হাজার বঞ্চিত বিদ্যালয় জাতীয়করণের সুপারিশ পাঠিয়েছে বলে জানান তারা।

তারা বিচার দাবি করে জানান, গত ১৫ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবে প্রায় ১০ হাজার শিক্ষকের সমাবেশ থেকে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিতে গেলে পুলিশ জলকামান, সাউন্ড গ্রেনেড ও লাঠিচার্জ চালায়। এতে বহু শিক্ষক আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পরিষদ এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছে।

গত ৯ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি ২৪তম দিনেও চলমান রয়েছে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা।

অবস্থান কর্মসূচিতে সাধারণ শিক্ষক ঐক্য পরিষদের বাবুল আখতার, জুয়েল মিয়া, মো. নিজাম উদ্দিন ও কামরুন নাহার নূপুরসহ ২০ জনের মতো শিক্ষক অবস্থান করছেন।