নিজস্ব প্রতিনিধি, টেকনাফ »
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার জন্য কক্সবাজারের টেকনাফে আসা মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দ্বিতীয় দিনের মতো রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে টেকনাফ সদরের স্থলবন্দরের রেস্টহাউজে সাক্ষাৎকার শুরু হয়। বুধবার সকালে স্পিডবোটে মিয়ানমারের টেকনিক্যাল টিমের ১৭ সদস্যের প্রতিনিধি দল টেকনাফ মিয়ানমার ট্রানজিট জেটি ঘাটে পৌঁছায়। বুধবার এই প্রক্রিয়ায় ২৯ পরিবারের ৯৩ জন রোহিঙ্গা সাক্ষাৎ দেয়।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (উপসচিব) খালিদ হোসেন বলেন, ‘দ্বিতীয় দিনের মতো মিয়ানমার প্রতিনিধিদের কাছে রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার শুরু হয়েছে। এর আগের দিন ৯৩ জন রোহিঙ্গা সাক্ষাৎকার দেন। এ কার্যক্রম আরও কয়েকদিন চলবে।’
সরেজমিনে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে লেদা, মৌচনি ও জাদিমুরা রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে বাসে করে ১৯ পরিবারের ৫২ জন রোহিঙ্গাকে স্থলবন্দরের ভেতরের রেস্টহাউসে নিয়ে আসা হয়। সেখানে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে মিয়ানমার প্রতিনিধি দল।
এ ব্যাপারে টেকনাফ শালবন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নেতা বজলুল রহমান বলেন, ‘দ্বিতীয় দিনের মতো মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের কাছে রোহিঙ্গারা সাক্ষাৎকার দেওয়া শুরু করেছেন। দ্বিতীয় দিনে অর্ধশতাধিকের মতো রোহিঙ্গার সাক্ষাৎকার দিয়েছে।’
বুধবার মিয়ানমার প্রতিনিধির কাছে সাক্ষাৎকার দেওয়া মৌচনী ক্যাম্পের মোহাম্মদ খালেদ বলেন, ‘মিয়ানমারে আমরা যে গ্রামে বসবাস করেছি সেখানকার মেম্বার ও চেয়ারম্যানের নাম জানতে চেয়েছে। আমাদের উত্তরগুলো তারা লিখে নিয়েছে। আমি ছাড়াও আমার পরিবারের সদস্যদের তথ্য যাচাই করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে কিছু জানতে চাইনি। তবে আমরা ফিরে যেতে চাই। নিরাপত্তা দিলে আমরা প্রত্যাবাসনে রাজি আছি।’
আরআরআরসি কার্যালয়ের মতে, বৈঠকটি মূলত মিয়ানমারে পাঠানো রোহিঙ্গাদের তালিকা যাচাই বাছাই নিয়ে। বাংলাদেশের পাঠানো তালিকা থেকে মিয়ানমার যেসব রোহিঙ্গাকে তাদের নাগরিক হিসেবে যাচাই-বাছাই করে ফিরতি তালিকা দিয়েছিল তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা চলবে। এর আগে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে মিয়ানমারকে ৮ লাখ ৬২ হাজার রোহিঙ্গার একটি তালিকা দেওয়া হয়েছিল। বাংলাদেশের দেওয়া এই তালিকা যাচাই-বাছাই শেষে প্রায় ৭০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়েছিল মিয়ানমার। শুরুতে পরিবারভিত্তিক প্রত্যাবাসনের আওতায় এক হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। এর মধ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের একশ জনের মতো রোহিঙ্গা রয়েছেন। তালিকার বিষয়টির বাইরেও পুরো প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াটির রুট ম্যাপ নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তবে এই বৈঠক মানে প্রত্যাবাসন শুরু নয়।