প্রায় ২০ বছর আগে কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়কের পশ্চিমে পেঁচারদ্বীপের জাদুঘর এলাকার পশ্চিম পাশে ভরাখালে প্যারাবন সৃজন করেছিল উপকূলীয় বনবিভাগ।
সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যায় কক্সবাজারের পর্যটন স্পট পেঁচারদ্বীপের প্যারাবন নিধনে নেমেছে একটি প্রভাবশালী চক্র। পাশাপাশি প্রতিদিন নির্বিচারে কাটা হচ্ছে প্যারাবনের বাইন, কেওড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির ছোট-বড় গাছ। এরপর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হচ্ছে।
ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, সুনামির মতো সামুদ্রিক দুর্যোগ থেকে উপকূলকে বাঁচায় বনাঞ্চল। বাংলাদেশের দক্ষিণে যে বিশাল উপকূল এলাকা, তার একটি অংশের প্রাকৃতিক প্রহরী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সুন্দরবন। এর পাশাপাশি কক্সবাজার ও এর আশেপাশের এলাকায় তৈরি করা হয়েছিলো কৃত্রিম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট ‘প্যারাবন’। গত এক দশকে আবার সেই প্যারাবন ধ্বংস করছে কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ।
সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতরে পুকুর খনন, বাঁশের খুঁটি টেনে বিদ্যুৎ-সংযোগ, রাসায়নিক দ্রব্য ও আগুনে গাছপালা ধ্বংস এবং শ্রমিক দিয়ে জঙ্গল পরিষ্কার করে ফলের গাছপালা রোপণ, প্লট আকারে জায়গাজমি বেচাবিক্রি হলেও নীরব বন বিভাগ ও জেলা প্রশাসন ।
গাছপালা উজাড় হওয়ায় নানা প্রজাতির পাখির আবাসস্থল ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে। জলাভূমি ভরাটের কারণে নদীর গতিপথ সংকুচিত হয়ে পড়েছে। শুধু প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় নয়, বরং প্যারাবন ধ্বংস ঊপকূলীয় ভাঙনও ত্বরান্বিত করে। ভাঙন অব্যাহত থাকলে সমুদ্রগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এসব বন্ধে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর তৎপরবা কঠোর হতে পারছে না। ফলে এই সুযোগে উজাড় হচ্ছে প্যারাবন।
পাল্লা দিয়ে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনে উপকূলীয় এলাকার দুর্যোগ ঝুঁকি এমনিতেই বাড়ছে। অব্যাহতভাবে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল উজাড় সেই সম্ভাবনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
নতুন করে বনায়ন না হলে ভবিষ্যতে সুনামি, জলোচ্ছ্বাস ও ঘূর্ণিঝড়ের মতো দুর্যোগে ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে।
এ মুহূর্তের সংবাদ