সুপ্রভাত ডেস্ক »
শহরের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে সিইপিজেড, হালিশহর, সল্টগোলা ও আশেপাশের এলাকায় ডায়রিয়ায় প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এসব এলাকা থেকে গত দুই দিনে বিভিন্ন বয়সী ১২৪ জন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকসাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। খবর বিডিনিউজের।
আক্রান্ত ২০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে সাতজনের নমুনায় কলেরার জীবাণু পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন বিআইটিআইডির সহযোগী অধ্যাপক মো. মামুনুর রশীদ।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন মো. ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি অনুসন্ধান করে দেখতে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটকে (আইইডিসিআর) চিঠি পাঠানো হয়েছে।’
ডায়রিয়া আক্রান্তদের বেশিরভাগই রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা (সিইপিজেড), ব্যারিস্টার সুলতান আহমদ কলেজ এলাকা, মাইলের মাথা, ধুপপুল, পতেঙ্গা, কাঠগড়, হালিশহর, ডবলমুরিং ও আগ্রাবাদের কয়েকটি এলাকার।
সোমবার থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত এসব এলাকা থেকে ৬৯ জন এবং মঙ্গলবার থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত শেষ ২৪ ঘণ্টায় ৫৫ জন ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
তবে বুধবার দুপুর পর্যন্ত বিআইটিআইডিতে ৯৫ জন চিকিৎসাধীন ছিলেন। বাকিরা চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
ডা. মামুনুর রশীদ বলেন, ‘আজকেও (বুধবার) রোগী এসেছিলো। সব বয়সের রোগীই আছে। তবে আক্রান্তদের মধ্যে মাঝ বয়সী ও পুরুষের সংখ্যা বেশি। একই পরিবারের একাধিক সদস্যও আছেন।
‘আক্রান্ত বেশিরভাগ রোগীই নি¤œ ও মধ্য আয়ের পরিবারের, যাদের স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভালো নয়।’
মঙ্গলবার বিআইটিআইডিতে গিয়ে আক্রান্ত রোগীদের সাথে কথা বলেন সিভিল সার্জন ইলিয়াছ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আক্রান্তরা বেশিরভাগই না ফুটিয়ে ওয়াসার সরবরাহ করা পানি পান করেন বলে জানিয়েছেন। তাদের পায়খানা ও বমি হচ্ছে।
‘দুয়েকজনের জ্বর আছে। যাদের জ্বর আছে, তাদের ম্যালেরিয়া পরীক্ষাও করানো হয়েছে।’
সিভিল সার্জন বলেন, ‘যেসব এলাকা থেকে রোগীরা আসছেন, সেখানে জলাবদ্ধতার সমস্যা আছে। বৃষ্টি ছাড়াই সেখানে জোয়ারের সময় পানি ওঠে। গত সপ্তাহে সেসব জায়গায় জোয়ারে নালা-নর্দমা, সুয়ারেজ লাইন ও সেফটি ট্যাংক সব সয়লাব হয়ে গিয়েছিল।
‘তবে কীভাবে তারা আক্রান্ত হয়েছেন, তা জানতে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করতে আইইডিসিআরকে আমরা চিঠি দিয়েছি। আশা করি, দ্রুত উনারা কাজ শুরু করবেন। এখনই আক্রান্ত হওয়ার কারণ সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারছি না।’
আক্রান্তের এই অবস্থাকে ‘স্পোরেডিক’ (বিক্ষিপ্ত) ডায়রিয়া মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘কয়েকটি এলাকায় লোকজন আক্রান্ত হয়েছে। একই পরিবারে সবাই বা একই এলাকায় অনেকে আক্রান্ত হয়নি।’
ইপিজেড, হালিশহর, পতেঙ্গা, ডবলমুরিং এলাকার লোকজন ডায়রিয়া আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান সিভিল সার্জন।
তিনি বলেন, ‘যেহেতু নগরীর বিষয়গুলো সিটি করপোরেশন দেখাশোনা করে, তাই আমরা তাদের জানিয়েছি। ওয়াসার সঙ্গে এ বিষয়ে সরাসরি আমাদের যোগাযোগ হয়নি।’
ডায়রিয়ার প্রকোপের বিষয়ে জানতে চাইলে নগরীর ৩৯ নম্বর দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জিয়াউল হক সুমন জানান, এলাকার লোকজনের ডায়রিয়া আক্রান্ত হওয়ার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আখতার চৌধুরী ও চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলমকে একাধিকবার ফোন করলেও তারা ধরেননি।