নিজস্ব প্রতিবেদক »
সহধর্মিণী মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যাকাণ্ডে পাঁচলাইশ থানায় নিজের দায়ের করা মামলায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দাখিল করা চূড়ান্ত প্রতিবেদনে সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের নারাজিতে নামঞ্জুর করে পুনঃতদন্তের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ মামলার তদন্তভার নতুন করে কোন সংস্থা পাচ্ছে তা জানা যাবে আজ।
গতকাল বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ রহমান এ আদেশ দেন।
বাবুল আক্তারের নারাজিতে পিবিআইয়ের চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেননি বলে জানিয়েছেন বাবুল আক্তারের আইনজীবী শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী। তিনি সুপ্রভাতকে বলেন, ‘এ তদন্ত প্রতিবেদন আদালত নামঞ্জুর করে নতুন করে তদন্তের জন্য আদেশ দিয়েছেন। গত ১৪ অক্টোবর এ মামলায় পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর নারাজি আবেদন করেছিলেন বাবুল আক্তার।’
৫১ জনের বেশি সাক্ষীর ১৬১ ধারায় জবানবন্দি নিলেও হত্যাকাণ্ডের সাথে বাবুলের কোন সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে পিবিআই প্রতিবেদনের বিপরীতে বাবুলের নারাজি আবেদনে। পিবিআই চূড়ান্ত প্রতিবেদনে মামলার চার বছর পরে হঠাৎ করে দুইজনের সাক্ষীর ভিত্তিতে বাবুলের সম্পৃক্ততা উল্লেখ করা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। যার কারণে নারাজি আবেদন করেছিলাম। এ বিষয়ে র্যাব, সিআইডি, কাউন্টার টেররিজম অথবা যেকোন সংস্থাকে পুনঃতদন্তের জন্যও আবেদন করা হয়েছে।’
তাছাড়া গত ২৭ অক্টোবর মিতুর পরিবারের জবানবন্দির নথি রেকর্ড না থাকায় তা তলবের আবেদনও করা হয়েছিল। যেহেতু পুনঃতদন্ত হবে এ বিষয়টি আর প্রয়োজন হবে না। এ আবেদনও আদালত নামঞ্জুর করেছে।
এ মামলায় পুনঃতদন্তের দায়িত্ব কারা পেয়েছে জানতে চাইলে ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, ‘পুনঃতদন্তের জন্য আদালত মৌখিক আদেশ দিয়েছেন। তদন্তের দায়িত্বে আপাতত পিবিআই থাকছে। আবেদনের মাধ্যমে তদন্ত সংস্থা পরিবর্তন হবে। এ বিষয়ে আদালতের লিখিত আদেশ পেলে বলা যাবে কারা পাচ্ছে এ তদন্তভার।’
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ জুন ভোরে নগরীর জিইসি মোড়ে সন্তানকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় সাবেক পুলিশ সুপার সহধর্মিণী মিতুকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে এবং গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে একটি মামলা করেছিলেন বাবুল আক্তার। পরে আদালতের আদেশে মিতু হত্যা মামলার তদন্তভার নেয় পিবিআই। প্রায় পাঁচ বছরের পর গত ১১ মে বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চট্টগ্রাম পিবিআই কার্যালয়ে ডেকে নেওয়া হয়। পরদিন ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার গণমাধ্যমকে জানান, মিতু হত্যার সঙ্গে তার স্বামী বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছেন। ঢাকায় ওই সংবাদ সম্মেলনের পরপরই চট্টগ্রামে বাবুলের করা মামলায় ৫৭৫ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পিবিআই।