অর্ণব মল্লিক, কাপ্তাই »
পাহাড়ি অঞ্চলের মাটি হলুদ চাষের জন্য বেশ উপযোগী। পাহাড়ের উৎপাদিত এসব হলুদের কদর রয়েছে দেশজুড়ে। এ ছাড়া অন্যতম মসলা জাতীয় দ্রব্য হলুদের চাহিদা ও বাজারদর ভালো হওয়ার কারণে পার্বত্য অঞ্চলের কৃষকদের মাঝে এ মসলা জাতীয় ফসল চাষে আগ্রহ বেড়েছে। রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলায়ও বিপুল পরিমাণে চাষ হয় হলুদের।
সম্প্রতি উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ি অঞ্চলে গিয়ে দেখা যায়, পাহাড়ের কোলজুড়ে একের পর এক হলুদের ক্ষেত। পাশাপাশি সবুজ পাহাড়ের কোলঘেঁষে এসব হলুদের চাষ নজর কাড়ছে সবার। জানা গেছে, স্থানীয় বেশিরভাগ চাষিই এই হলুদের চাষে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।
স্থানীয় কৃষক সবুজ মারমা, স্বপ্না মারমাসহ একাধিক কৃষক জানান, হলুদ আবাদ সাধারণত ৯ মাসব্যাপী হয়ে থাকে আর বিঘাপ্রতি কাঁচা হলুদ পাওয়া যায় প্রায় ১২০ থেকে ১২৫ মণ। হলুদে রোগবালাই নেই বলে কৃষকদের তেমন ঝামেলা পোহাতে হয় না। তবে সার ও কীটনাশক ব্যবহার করলে এর ফলন ভালো পাওয়া যায়। পাশাপাশি বাজারদর বেশি হওয়ায় হলুদের আবাদে ঝুঁকছেন স্থানীয় কৃষকরা।
স্থানীয় আরো কয়েকজন কৃষক জানান, প্রতিবিঘা জমি হলুদ চাষের জন্য তাদের খরচ হয় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা। গত বছর প্রকারভেদে ১ হাজার টাকা থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত প্রতি মণ হলুদ বাজারে বিক্রি হয়েছে। সেই তুলনায় এ বছর হলুদের বাজারদর আরও বেশি হবে বলে ধারণা করছেন কৃষকরা। সে কারণে তারা হলুদ বিক্রি করে লাভবান হবেন বলে আশা করছেন।
এ বিষয়ে কাপ্তাই উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু সালেহ জানান, দেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় পার্বত্য অঞ্চলে চাষ করা হলুদের কদর অনেকটা বেশি থাকে। আর বিশেষ করে কাপ্তাইয়ে যে জাতের হলুদের চাষ হয়, এটি অনেকটা ভালো মানের। তাই এর বিক্রিও বেশি হয়ে থাকে। এ ছাড়া তিনি জানান, কাপ্তাই উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের ১৪টি ব্লকে প্রায় ১৫০ হেক্টর জমিতে হলুদের চাষ হয়ে থাকে। এর মধ্যে ওয়াগ্গা ব্লকে প্রায় ৩০ হেক্টর জমিতে হলুদের চাষ হয়ে থাকে। এ ছাড়া কৃষি বিভাগ থেকে স্থানীয় চাষিদের হলুদ চাষে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়ে থাকে। বিশেষ করে সার প্রয়োগ কিংবা পোকামাকড় দমনে কী কী করা প্রয়োজন, সেই বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়। সেইসাথে কাপ্তাইয়ের অনেক কৃষক হলুদ চাষ করে লাভবান হচ্ছেন।