চট্টগ্রাম শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের জন্য ১৯৭০ সালে দক্ষিণ পতেঙ্গা, দক্ষিণ কাট্টলী ও উত্তর হালিশহর এলাকায় ৬০১ দশমিক ৭৯ একর জমি অধিগ্রহণ করেছিল পাউবো। পাউবো সূত্র জানায়, শহর রক্ষা বাঁধের জন্য ৬০১ দশমিক ৭৯ একর জায়গা অধিগ্রহণ করা হয়। এরমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নামে বিএস খতিয়ানভুক্ত হয়েছে ৪০৮ দশমিক ২২ একর। রেকর্ডভুক্ত হয়নি ১৯৪ দশমিক ৩৭ একর। নামজারি হয়নি ১২৫ দশমিক ১৪ একর। এরমধ্যে সাগরগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ৪৮ দশমিক ৮৩ একর। কর্ণফুলী টানেলের জন্য হস্তান্তর করা হয় ১১ দশমিক ৮৭ একর। ১৩ দশমিক ৬৫ একর জায়গা নিয়ে জটিলতার কারণে মামলা রয়েছে। ৬ দশমিক ৪৯ ইজারা দেওয়া হয়েছে। বাঁধ ও সড়ক নির্মাণের পর বিপুল পরিমাণ জায়গা অব্যবহৃত রয়ে যায়। পরবর্তীসময়ে তা ধীরে ধীরে দখল করে নেয় প্রভাবশালীরা। এসব জমিতে ট্রাক-কাভার্ডভ্যান, প্রাইম মুভার ইয়ার্ড, গাড়ির গ্যারেজসহ পাকা ও স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছিল। গত জুলাই মাসে জেলা প্রশাসন ও যৌথ বাহিনীর সহায়তায় বড় ধরনের উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। তিন দিন ধরে টানা উচ্ছেদ অভিযানে ১১৭ একর জায়গা দখলমুক্ত করা হয়েছিল।
একটি পত্রিকার সংবাদে বলা হয়েছে, সাগরিকা স্টেডিয়াম এলাকায় উদ্ধার করা জায়গায় নগরের জলাবদ্ধতা প্রকল্পের সিসি ব্লক বানানো হচ্ছে। বিপুল সংখ্যক ব্লক রাখা হয়েছে। এই জায়গা ঘেরা দিয়ে রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট রিপোর্টার লিখেছেন, সেখান থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, পুরনো দখলদাররা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছে। চলছে সেই কাভার্ডভ্যান, ট্রাক, স্কেভেটর ইয়ার্ডের কার্যক্রম। চলছে গ্যারেজের কাজও। খাজা কালু শাহ পার্কিং নামে একটি ইয়ার্ডে দেখা গেছে, ৩০-৩৫ লরি, কাভার্ডভ্যান ও ট্রাক রাখা হয়েছে। দুটি লরি বের হতে দেখা যায়। এছাড়াও বিভিন্ন ইয়ার্ডেও বিভিন্ন ধরনের যানবাহন রাখা হয়েছে। বিভিন্ন ইয়ার্ডে নতুন করে স্টিলের কাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে।
তিনি সেখানে দেখতে পান, উচ্ছেদ করা স্থানের মধ্যে ঈশান মহাজন রোডের বাংলাবাজার ও কর্নেল জোনস রোডের শেষ প্রান্তে নতুন স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। কয়েকটি স্থানে টিনের ঘর নির্মাণ করা হয়। আউটার রিংরোড লাগোয়া কাট্টলী খালের ওপর স্টিলের পাটাতনের সেতু নির্মাণ করে ইয়ার্ডগুলোর কার্যক্রম চলছে। বিভিন্ন স্থানে দখল ও ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ করায় খালের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেছে।
প্রায় ১২ শ কোটি টাকার সম্পদ রক্ষায় পাউবোর প্রচেষ্টাও উল্লেখ করার মতো নয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ইবনে সাহীদ সাংবাদিককে বলেন, ‘উচ্ছেদ করা জায়গা আয়ত্বে রাখতে তারকাটার ঘেরা দেওয়া হচ্ছে। এজন্য চার কোটি ৩০ লাখ টাকার বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। এক কোটি টাকার বরাদ্দ পেয়েছি।’
এ ধরনের শিথিলতার কারণে তারা তাদের জায়গা দখলমুক্ত করতে পারে না। নিজেদের সম্পদ রক্ষা করতেও তারা যথেষ্ট অর্থ বরাদ্দ দিতে পারছে না সময়মতো। এটা দুঃখজনক। পাউবোকে অবশ্যই কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
এ মুহূর্তের সংবাদ
















































