নিজস্ব প্রতিনিধি, উখিয়া :
পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে মাঠে নেমেছে জাল নোট বাজারজাত চক্র। ৭/৮ জনের এ চক্রটি প্রতি বছর ঈদ, কোরবানকে পুঁিজ করে হাটে বাজারে অহরহ ঘুরে বেড়ালেও এদের মূল টার্গেট থাকে পশুর বাজারে। কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, পশুর বাজারে টাকার লেনদেন বেশি ও ক্রেতা বিক্রেতাদের ঝামেলার মধ্যে এ চক্রটি সুবিধামতো টাকা হাতিয়ে নিতে সক্ষম হয়। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা বলছে, মলম পার্টি ও জাল নোট চক্রের হাত থেকে ক্রেতা বিক্রেতাদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য পুলিশ বিশেষ মার্কেট ও হাটবাজারগুলোতে দায়িত্ব পালন করছে। ব্যবসায়ীদের দাবি অনুযায়ী পশুর বাজারে যথাযথ নিরাপত্তা বিধান করলেও খুচরা হাটবাজারে পুলিশের তেমন তৎপরতা না থাকার কারণে ব্যবসায়ীদের আতঙ্কে থাকতে হয়।
২০১২ সালে কুতুপালং রেজিস্ট্রার্ড রোহিঙ্গা ক্যাম্পের তৎকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত ক্যাম্প ইনচার্জ ফজলে রাব্বী ক্যাম্প অভ্যন্তরে অভিযান চালিয়ে ৭ লক্ষ টাকা জাল নোট তৈরির কাগজ ও টাকা তৈরির সরঞ্জামসহ চট্টগ্রামের ১ জন ও ২ রোহিঙ্গা নাগরিকসহ ৩ জনকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছিল। এরপর থেকে ক্যাম্পভিত্তিক জাল নোট চক্রের কোন অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে হাটে বাজারে, মার্কেটে ও পশুর বাজারে ইদানিং টোকাই, পকেটমার ও জাল নোট চক্রের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
থাইংখালী হাকিমপাড়া ক্যাম্পের কাপড় ব্যবসায়ী নুর মোহাম্মদ জানান, তিনি একটি লুঙ্গি বিক্রি করে ক্রেতার নিকট থেকে ২৫০ টাকা আদায় করেন। পরে ওই টাকা নিয়ে সন্দেহ হলে আশেপাশের ব্যবসায়ীরা দু’টা একশত টাকার নোট জাল বলে শনাক্ত করে। তৎক্ষণে লুঙ্গি ক্রেতা চম্পট দেয়। এভাবে জালনোট চক্র ক্যাম্পে ক্যাম্পে অবাধে বিচরণ করছে বলে রোহিঙ্গাদের নিকট থেকে অভিযোগ উঠেছে। তবে ক্যাম্পের দায়িত্বরত পুলিশ বলছে, অভিযোগ পেলে খোঁজ নিয়ে দেখবে।
মরিচ্যা গরুর বাজার ঘুরে জানা যায়, কয়েকজন অচেনা লোক বাজারে সকাল থেকে ঘোরাফেরা করছিল। স্থানীয় গরু ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম এদেরকে সন্দেহ করে জিজ্ঞাসাবাদে এক পর্যায়ে তারা যে পকেটমার তা প্রমাণিত হয়। তখন এ তিনজনকে গণধোলাই দিয়ে ছেড়ে দেয়।
গরু ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদুল আজহা উপলক্ষে ক্রেতা বিক্রেতার উপস্থিতিকে পুঁজি করে কিছু অসাধু চক্র হাটবাজারে অবাধে বিচরণ করছে। এদেরকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা না হলে বাজারে ক্রেতা বিক্রেতার টাকা খোয়া যেতে পারে।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মর্জিনা আকতার মরজু জানান, ঈদুল-আজহায় ক্রেতা বিক্রেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে জনগুরুত্ব পূর্ণ মার্কেট ও পশুর হাটবাজারগুলোতে পুলিশের দায়িত্ব পালন অত্যাবশ্যকীয় রাখা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, চলমান করোনা ভাইরাস থেকে জনসাধারণকে রক্ষা করার জন্য হাটবাজারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বাধ্যবাধকতার পাশাপাশি নিরাপত্তা নিশ্চিত রাখার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।