নিজস্ব প্রতিবেদক >
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ যারা পরিবেশ ধ্বংস করে, প্রকৃতির বিরুদ্ধে কাজ করে, প্রকৃতিকে ধ্বংস করে তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি গতকাল দুপুরে বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রে বিশ^ পরিবেশ দিবস উপলক্ষে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, মানুষের টিকে থাকার জন্য এই পৃথিবী দরকার, কিন্তু পৃথিবী টিকে থাকার জন্য মানুষের দরকার নাই। পৃথিবীতে বহু প্রাণী এসেছে, বিলুপ্ত হয়ে গেছে, কিন্তু পৃথিবী টিকে আছে। মানুষও যদি পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যায়, তাহলে পৃথিবীর কিছু যায় আসে না। যেভাবে আমরা পরিবেশ প্রকৃতিকে ধ্বংস করছি প্রকারন্তরে আমরা আমাদের অস্তিত্বকেই ধ্বংস করছি, এটিই হচ্ছে বাস্তব সত্য। পরিবেশ প্রকৃতিকে ধ্বংস করার মধ্য দিয়ে মানুষ ক্রমাগতভাবে নিজের অস্তিত্বকেই ধ্বংসের মুখে দাঁড় করাচ্ছে। সুতরাং আমাদের প্রয়োজনেই পরিবেশ-প্রকৃতিকে সংরক্ষণ করতে হবে।
গত ১২ বছরে বৃক্ষ আচ্ছাদিত ভূমির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, যেখানে এক সময় বনাঞ্চলের পরিমাণ ৮ শতাংশের নিচে নেমে এসেছিল, সেটি এখন অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে একটি গাছের আর্থিক মূল্য অপরিসীম, সেখানে রাস্তার ধারের বনায়ন নষ্ট হয় না, জনগণই পাহাড়া দেয়। কারণ এই সামাজিক বনায়নের মালিকানা রাস্তার পাশের মানুষের আছে। এটিকে প্রবর্তন করেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্ব এবং জনগণকে সম্পৃক্ত করে নানা ধরনের সামাজিক বনায়ন কর্মসূচি গ্রহণ করার কারণে এটি সম্ভবপর হয়েছে।
তিনি বলেন, মানুষ কিন্তু প্রকৃতির দাস, মানুষ টিকে থাকার জন্য প্রকৃতির প্রয়োজন। এই পরিবেশ-প্রকৃতি যদি বিনষ্ট হয় তাহলে মানুষের পক্ষে টিকে থাকা সম্ভবপর নয়।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বর্তমানে করোনা ভাইরাসের বিষয়েও ব্যাপকভাবে গ্রহণযোগ্য মতবাদ হচ্ছে একটি বিশেষ প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে এই করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে। সব ধরনের প্রাণীকে নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করা, সর ধরনের প্রাণী খেয়ে ফেলা- এটির কারণে আজকে আমরা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছি। করোনা কিভাবে আজকে মানুষকে পর্যুদস্ত করেছে, সেটি সবাই অনুভব করছি।
তিনি বলেন, যে বাতাস ছাড়া মানুষ টিকতে পারে না, সেই অক্সিজেনটুকু আমরা স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করতে পারছি না। অক্সিজেন গ্রহণের জন্য আমাদের যে শ^াসতন্ত্র সেটিকে আবরণ দিয়ে ঢেকে রাখতে হচ্ছে, এটি আমাদের কারণেই হয়েছে। আমাদের অনেক উন্নতি হয়েছে, কিন্তু এত উন্নতির পরেও আমরা দেখলাম করোনার কাছে আমরা কি রকম অসহায়। এটির প্রধান কারণ হচ্ছে সবকিছুকে নিজের প্রয়োজনে ব্যবহারের মানুষের যে মনোবৃত্তি, অন্য প্রাণীর প্রয়োজনটাকে কোনসময় মাথায় না রাখা, পরিবেশ-প্রকৃতিকে ধ্বংস করা। এটির কারণে আমরা বারে বারে বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক আবদুল আউয়াল সরকার, বাংলাদেশ টেলিভিশনের উপ-প্রধান বার্তা সম্পাদক অনুপ কুমার খাস্তগীর। বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার নিতাই কুমার ভট্টাচার্য্য সভায় সভাপতিত্ব করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক শাহ, দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম, বিটিভি’র অনুষ্ঠান প্রিভিউ কমিটির সদস্য গিয়াস উদ্দিন খাঁন স্বপন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. সেলিম, উত্তর জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
এ মুহূর্তের সংবাদ