নিজস্ব প্রতিবেদক »
চমেক হাসপাতাল
গড়া হবে স্থায়ী ওয়েস্ট ডিসপোজাল প্ল্যান্ট
পুরো চট্টগ্রাম বিভাগের চিকিৎসায় ভরসা চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল। ফলে শয্যা সংখ্যার প্রায় তিন থেকে চার গুণ রোগীদের নিয়মিত সেবা প্রদান করতে হয়। এতে রোগী ও তাদের স্বজনদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে ছিলো দীর্ঘদিনের অসঙ্গতি। খোলামেলা ময়লার ভাগাড়ের কারণে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় ওই পথ দিয়ে হেঁটে যাওয়াসহ কাছাকাছি ওয়ার্ডের রোগীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এ সংকট নিরসনে টিনের ঘেরা দিয়ে অস্থায়ীভাবে একটি ডাস্টবিন নির্মাণ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এটি নিয়ে স্থায়ী ওয়েস্ট ডিসপোজাল প্ল্যান্ট নির্মাণের পরিকল্পনা ও প্রস্তাবনা অনুমোদিত হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
গত শনিবার (২১ জানুয়ারি) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, সিটি করপোরেশনের হলুদ রঙয়ের কুর্তি পরে একজন মধ্য বয়সী হাসপাতালের আঙ্গিনা পরিষ্কার করছেন। এভাবে পরিচালকের নতুন ভবন পর্যন্ত ঝাঁড়ু দিয়েছেন তিনি। একটু পর পর ময়লাগুলো স্তূপকার করে রেখে আসছেন। সেই ময়লাগুলো ভ্যান দিয়ে তুলে নিচ্ছেন আরও একজন পুরুষ। তবে আগের মতো মাটিতে যততত্র ময়লা ফেলার দৃশ্য দেখা মেলেনি। আগে যেখানে ময়লা ফেলা হতো সে জায়গায় নতুন ভবন গড়ে উঠছে।
ঝাঁড়ু দিতে দিতে মঞ্জু সেন বলেন, কোনো নির্দিষ্ট সময় নিয়ে কাজ হয় না। কখনো ভোর ৫টা, আবার কখনো ৬ টায় কাজ করতে হয়। আমরা তিনজন সকালে ঝাড়ু দিই। দুজন ময়লা তুলে নিয়ে ডাস্টবিনে ফেলেন। এভাবে প্রতিদিন ময়লা তুলে নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলতে হয়। আগে মাটিতেই ফেলা হতো। এখন ঘর হয়েছে, সব ময়লা সেখানে ফেলা হয়। আমদেরও কাজ করতে সুবিধা হয়েছে।
হাসপাতালের ইমার্জেন্সি গেটের বাম পাশের রাস্তা দিয়ে যেতেই অক্সিজেন প্ল্যান্টের পাশে দেখা যায় একটি টিনের ঘর। বেড়া ও চাল টিন দিয়ে ঘেরা। ঘরের তলা সিমেন্ট দিয়ে আবৃত করা। বিভিন্ন ওর্য়াড থেকে সাধারণ ময়লাগুলো এনে ফেলা হচ্ছে। সেখানে ১০ থেকে ১২ জন কর্মী কাজ করছেন। ঘরের সামনে তিন থেকে চারটি ময়লার ডাস্টবিন রাখা। যেগুলো মুখও কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান বলেন, নিদিষ্ট জায়গায় ময়লা ফেলার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থেকে পরিকল্পনা করা হয়। দুই সপ্তাহ হলো টিন দিয়ে এ ডাস্টবিনটি বানানো হয়ছে। যেখানে সাধারণ সব ময়লা ফেলা হয়। আমরা আরও মডার্ন ওয়েস্ট ডিসপোজাল প্ল্যান্টের জন্য চেষ্টা করছি। এটার জন্য গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে একটি ডিজাইন দেওয়া হয়েছে। সবকিছু করেছেন তারা। এটি অনুমোদন হলে আমাদের স্থায়ী ওয়েস্ট ডিসপোজাল প্ল্যান্ট হবে। সিটি করপোরেশন থেকে এখানে দু-একজন ক্লিনার পাঠানো হয়। তবে আমাদের হাসপাতালের ৮৯ জন ক্লিনার আছে। তারা পর পর ২৪ ঘণ্টা ওর্য়াড এবং বাইরে পরিষ্কারের কাজ করে যান।
তিনি আরও বলেন, সেবা সংস্থা নামে একটি সংগঠন আছে। যেটি হাসপাতালে বর্জ্য পরিষ্কার করেন। তার বিনিময়ে প্রতি মাসে ৮৯ হাজার টাকা নেয়। সিটি করপোরেশনের গাড়িও আসে। তারা হাসপাতালের লতা-পাতা, বোতল অর্থাৎ কুড়িয়ে থাকা ময়লা নিয়ে যায়। আবার সেবা সংস্থাটি হাসপাতালের সকল বর্জ্য পরিষ্কারের কাজও করে।