সুপ্রভাত ডেস্ক »
বিএনপির কিছু দায়িত্বশীল লোক দায়িত্বহীন কথা বলে উল্লেখ করে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেছেন, এটা আমার খুব খারাপ লাগে। বাংলাদেশে কী হয়েছে, দেশ কোথায় গেছে যে আওয়ামী লীগকে পালাতে হবে? কে পালাবে? পালানোর মতো কী পরিবেশ হয়েছে? আমাদের কথায় কথায় বলে পালাবার সময় পাবো না।
আমরা কি চোর, না আমরা ডাকাত? তাদের নেতা পালিয়েছে লন্ডনে মুচলেকা দিয়ে। তাদের নেতা জেলে, মামলার আসামি হয়ে।
আমরা পালাব কেন? আমরা কোথায় পালাব? আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই তো দেশ স্বাধীন হয়েছে। আমরাই তো স্বাধীন করেছি। এটা আমাদের দেশ। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির এ দেশ।
তারা যে বড় বড় কথা বলছে, কে নেতৃত্বটা দেবেন? ভাওতাবাজির কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্তি করে। কী উন্নয়ন দেখাতে পারবে তাদের শাসনামলে। আন্দোলন করছেন ঢাকা শহর অবরুদ্ধ করে। আওয়ামী লীগ কি এমন দল ধাক্কা দিলে পড়ে যাবে? এত সহজ নয়। আওয়ামী লীগের ৭৫ বছর বয়স। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অনেক দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন। আপনারা কীভাবে বলছেন গণতন্ত্র হারিয়ে গেছে। আপনারা কী করেছিলেন, পনেরোই ফেব্রুয়ারির নির্বাচন এখনো কেউ ভোলেনি। আপনারা বিদেশিদের ধন্না দিচ্ছেন। বোকার স্বর্গে বাস করছেন। আপনাদের বিদেশিরা ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে এটা বাংলাদেশ।
গত বুধবার সন্ধ্যায় বিজিএমইএর মাহবুব আলী মিলনায়তনে চট্টগ্রাম সেন্টার ফর রিজিওনাল স্টাডিজ, বাংলাদেশ (সিসিআরএসবিডি) আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। খবর বাংলানিউজের।
ডায়ানামিকস অব অনগোয়িং ক্রাইসিস ইন চট্টগ্রাম হিল ট্রাক্টস অ্যান্ড ওয়েস ফরওয়ার্ড শীর্ষক এ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সিসিআরএসবিডি সভাপতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর আনোয়ারুল আজিম আরিফ।
ভূমিমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম বাংলাদেশের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বন্দরনগরী। আমাদের নিজস্ব কিছু ঐতিহ্য আছে। অর্থনৈতিকভাবেও সবসময় দেশের বাকি নগর ও শহরগুলোর চেয়ে আমরা অগ্রণী ভূমিকা রেখে এসেছি। এমন একটি সময় ছিল, রাজধানী ঢাকার চেয়েও আমরা বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিলাম। সময়ের কারণে আমাদের মধ্যে একটা গ্যাপ হয়ে গেছে। যে জায়গায় আমরা এসেছি এর চেয়ে ভালো জায়গায় আমরা অবশ্যই থাকতে পারতাম। তারপরেও একটি শহরে অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রয়োজন। এর মধ্যে একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, পাঁচ তারকা হোটেল এবং ফ্লাইওভার, হাইওয়ে দরকার ছিল। আমি যখন ২০০৫-০৮ পর্যন্ত চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি ছিলাম, অনেক বক্তব্য সেমিনার হয়েছে। অনেক সময় অবকাঠামোগত উন্নয়নের দাবিতে আন্দোলন করেছি। কিন্তু তখনকার বিএনপি সরকার সেভাবে করেনি। শুধু চট্টগ্রাম নয়, বাংলাদেশের কোথাও সেভাবে উন্নয়ন করেনি।
তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের সনদ নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা গণজোয়ারের মধ্য দিয়ে ২০০৯ সালে সরকার গঠন করেন। আমাদের সাড়ে ১৪ বছরের শাসনামলে অবশ্যই সারা বাংলাদেশের উন্নয়ন হয়েছে। আমি বলবো, ঢাকার পরেই চট্টগ্রামে বেশি উন্নয়ন হয়েছে। আমাদের বিমানবন্দর হয়েছে, আখতারুজ্জামান বাবু ফ্লাইওভার হয়েছে, এমএ মান্নান ফ্লাইওভার হয়েছে। বাংলাদেশের প্রথম বঙ্গবন্ধু টানেল হয়েছে। যেটা আমরা কখনো ভাবতেও পারিনি- আমাদের শাসনামলে হয়ে যাবে টানেল, আমাদের জীবদ্দশায় দেখে যাব! দেখে যাব ইনশাআল্লাহ। এটা উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছে। এ অবকাঠামোগত উন্নয়ন কিন্তু বিশাল এক চ্যালেঞ্জ ছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০১০ সালে একটি সভায় বলেছিলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব নিজ হাতে নিয়েছেন। তিনি অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন। অর্থনীতির প্রবেশদ্বার হওয়ার পরও আমাদের সব কিছু যেন স্লো। তারপরও আমি বলবো, আমরা অনেক এগিয়ে এসেছি। সামনে যত দিন যাবে অর্থনৈতিকভাবে চট্টগ্রাম আরও এগিয়ে যাবে।
তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদের এগিয়ে আসতে হবে। বেশি সময় ফেসবুকে নষ্ট করবেন না। ফেসবুক শুধু বাংলাদেশের জন্য খোলা হয়নি। ফেসবুক ইউটিউব বিশ্বব্যাপী। ইউরোপ আমেরিকায় কয়জন ফেসবুকে সারাক্ষণ থাকে। তারা টুকটাক লেখালেখি করে। আমাদের প্রাকটিক্যাল চিন্তা করে নিজের জীবন সামনে এগিয়ে নেওয়ার চিন্তা করলে বেশি মঙ্গল হবে। আমরা তরুণদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছি। আমরা স্টার্টআপ প্রোগ্রামের সুযোগ দিচ্ছি। চট্টগ্রামে অনেক সুযোগ আছে। এগুলোর পূর্বশর্ত হচ্ছে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও কমিটমেন্ট।
সিসিআরএসবিডির নির্বাহী পরিচালক চবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. মাহফুজ পারভেজের সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চবির আইন বিভাগের ডিন ড. আবদুল্লাহ ফারুক।
প্যানেল আলোচক ছিলেন বেগম রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত শোভারানী ত্রিপুরা, চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মোস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী, খাগড়াছড়ি মং সার্কেলের চিফের পরিবারের সদস্য রাজকুমার টুইন ইনপ্রু মারমা, এফবিসিসিআইর পরিচালক ডা. মুনাল মাহবুব, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব) মো. এমদাদুল ইসলাম প্রমুখ।