নেপালকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

সাফ অনূর্ধ্ব-২০ ফুটবল টুর্নামেন্ট

সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ। ছবি: বাফুফে

এ জেড এম হায়দার »

ভয়াবহ বন্যার কবলে ভাসছে দেশ। সকলে ত্রান বিতরণ ও পানিবন্দীদের উদ্ধারে ব্যস্ত। এরমধ্যে গত ২৫ আগস্ট পাকিস্তানের মাটিতে সিরিজের প্রথম টেস্টে তাদেরকে ১০ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস গড়েছেন মুশফিক-শান্ত-সাকিব-মিরাজরা। দুঃখের মাঝেও অল্প দিনের ব্যবধানে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ ফুটবল টুর্নামেন্টের শিরোপা জয় করে দেশের ক্রীড়াঙ্গনের পালকে আরো এক সাফল্য যোগ করলো মিরাজুল-আসিফরা।

বুধবার (২৮ আগস্ট) ফাইনালে বাংলাদেশের তরুণরা অবিশ্বাস্য ৪-১ গোলে বিশাল ব্যবধানে স্বাগতিক নেপালকে পরাস্ত করে অভিজ্ঞ কোচ মারুফুল ইসলামের হাত ধরে প্রথমবারের মত এ শিরোপা অর্জন করেছে। একই সাথে গ্রুপ পর্বে পরাজয়ের প্রতিশোধও ভালভাবেই নেয়া হয়েছে। এর আগে টানা তিনবার ফাইনালে উঠেও রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ঠ থাকতে হয় বাংলাদেশ যুবাদের। দেশের এ সাফল্যের সাথে বৃহত্তর চট্টগ্রামও জড়িয়ে আছে। দলের সহকারি প্রশিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গার ছেলে। সাবেক জাতীয় তারকা ইউসুফ বলি’র জ্যেষ্ঠ সন্তান মিন্টুও জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। অবসর নিয়ে কোচিং পেশায় জড়িয়ে ফুটবল ফেডারেশনে তালিকাভ’ক্ত হয়ে অনূর্ধ্ব-২০ দলকে দীর্ঘসময় ধরে নার্সিং করে আসছেন। আর অন্যতম দুই তারকা জয়ের দুই কান্ডারি স্ট্রাইকার মিরাজুল (ডুলহাজারা) ও গোলরক্ষক আসিফ (চকরিয়া) কক্সবাজার জেলার সন্তান। চট্টগ্রাম মহানগরী ক্রীড়া সংস্থার নিয়মিত আয়োজন ইস্পাহানি পাইওনিয়ার ফুটবল লিগে অংশ নিয়ে আজ এ পর্যন্ত উঠে এসেছেন। গত সোমবার  সেমিফাইনালে ভারতকে টাইব্রেকারে হারিয়ে টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ। এ খেলায় গুরুতর চোট পাওয়ায় অধিনায়ক ও গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ মাঠ ছাড়েন। এরপর বদলি গোলরক্ষক হিসেবে মাঠে নামেন মোহাম্মদ আসিফ। টাইব্রেকারে তার দৃঢ়তায় ফাইনালের টিকিট পায় বাংলাদেশ। ফাইনালেও তার প্রতিরোধে স্বাগতিকদের বেশ কয়েকটি সুযোগ নস্যাৎ হয়ে গেছে।

কাঠমান্ডুর ললিতপুর আলফা কমপ্লেক্স মাঠে ফাইনালে প্রথম গোলের দেখা পেতে ৪৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হয় বাংলাদেশকে। প্রধমার্ধেও যোগ করার প্রথম মিনিটে ডি বক্সের সামনে ফ্রি কিক পায় বাংলাদেশ। আর ফ্রি কিক থেকে সরাসরি বল জালে পৌঁছে দেন মিরাজুল (১-০)। ৫৪ মিনিটে আবারো গোল কওে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মিরাজুল। আসাদুল ইসলাম সাকিব ও আসাদুল মোল্লার হয়ে পা ঘুরে অরক্ষিত স্থানে পেয়ে মিরাজুল টোকা দিয়ে বল ফাঁকা জালে জড়ান (২-০)। অব্যাহত আক্রমণে ব্যতিব্যস্ত হয়ে নেপালের রক্ষণভাগ খেই হারিয়ে ফেলে। ফলশ্রুতিতে ৬৯ তৃতীয় গোলের দেখা  পেয়ে উৎসবের অপেক্ষায় থাকে বাংলাদেশ। আবারো  সেই মিরাজুল, তার অ্যাসিস্টে ডানপাশে থাকা রাব্বি হোসেন রাহুল বল পেয়েই ডান পায়ের জোরালো শটে বল জালে পাঠান (৩-০)। এর দশ মিনিট পর এক গোল কওে নেপাল ব্যবধান ৩-১ করে। দ্বিতীয়ার্ধে রেফারি ১০ মিনিট অতিরিক্ত সময় দিয়ে সবাইকে হতবাক করেন। এ সময় স্বাগতিকরা গুছালো আক্রমণে সুযোগ  তৈরি করেও আসিফের দৃঢ়তায় লক্ষ্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়। এরমধ্যে মিনিটে ৯৫ মিনিটে গোল করে নেপালের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন পিয়াস আহমেদ নোভা। রাহুলের বাড়ানো বল পেয়ে গোলমুখের কাছ থেকে নোভা শট নিয়ে বল  গোলরক্ষক জিয়ারত শেখের পায়ে লেগে গোললাইন পাড়ি  দেয় (৪-১)।