সুমন শাহ্, আনোয়ারা:
জীবনঘাতী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই ঈদুল আজহায় কুরবানির জন্য চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার পশুর বাজার গুলোতে শেষ হয়েছে সব ধরণের প্রস্তুতি। হাট জমিয়ে তোলার জন্য সব প্রস্তুতি শেষ করেছেন বাজার ইজারাদারা। নিরাপত্তার জন্য বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা ও খোলা হয়েছে পুলিশ কন্ট্রোল রুম। ব্যবসায়ী ও খামারিরা ইতিমধ্যে কোরবানির পশু আনতেও শুরু করেছেন। তবে ক্রেতার দেখা এখনও মেলেনি। কয়েক জন যারা আসছেন, তারা ঘুরে দেখছেন মাত্র।
এবার উপজেলার মইজ্জ্যারটেক ছাড়াও কলেজ বাজার, ফকিরনীর হাট, ফাজিলখাঁর হাটেও চলছে পশুর বাজার বসার প্রস্তুতি। দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রবেশমুখে কর্ণফুলী উপজেলার মইজ্জ্যারটেক সিডিএ আবাসিক মাঠে বসছে গরু, মহিষ ও ছাগলের পাশাপাশি পাঁঠা ছাগলের বাজার। এমনিতেই সারা বছর সরগরম থাকে এই পশুর বাজার। প্রতিদিন বাজারের নির্ধারিত দিন ছাড়াও এখন ঈদুল আজহা ও মনসা পূজা উপলক্ষে দিনরাত চলছে বেচাকেনা।
এদিকে ঘনিয়ে আসছে ঈদুল আজহা। সব ব্যস্ততা তুলে রেখে মানুষ ছুটবেন পশুর হাটে- এটাই প্রতি বছর এ সময়ের চিত্র। তবে এবার সেই ছবি দেখা যাবে কিনা তা নিয়ে সংশয়ে ইজারাদাররা। কারণ, করোনা মহামারী। পশুর হাট গুলোতে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে প্রশাসন বিশেষ সতর্কতার নির্দেশনা দিয়েছে । বেচাকেনার ক্ষেত্রে মানতে হবে নানা বিধি-নিষেধ। ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার ওপরও জোর দেয়া হবে এমনটিই জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নোমান হোসেন।
শনিবার (২৫ জুলাই) দুপুরে উপজেলার মইজ্জ্যেরটেক সিডিএ আবাসিক এলাকার পশুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, পুরো মাঠে ত্রিপল লাগানো হয়েছে, যাতে বৃষ্টিতে কোনো পশু না ভেজে। তৈরি করা হয়েছে ইট দিয়ে রাস্তাও, অল্প বৃষ্টিতে যেন কাদা না হয়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা পশু নিয়ে এসেছেন। তবে লোকসমাগম খুব একটা দেখা যায়নি। একেবারেই ঢিলেঢালা ভাব। কুষ্টিয়া থেকে দেশি জাতের ১২টি গরু নিয়ে হাটে এসেছেন আবদুল মোতালেব বেপারী। এক একটি গরুর দাম হাঁকছেন ১ থেকে দেড় লাখ টাকা। পশুর বাজার এবার কেমন আশা করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, গরু তো শুধু আসছে এ বাজারে। আশা করছি বেচাবিক্রি ভালোই হবে। কিছু লাভের আশাতেই তো এতো দূর থেকে গরু নিয়ে আসলাম এখানে। তবে ক্রেতার দেখা এখনও মেলেনি। কয়েক জন যারা আসছেন, তারা ঘুরে দেখছেন মাত্র।
মইজ্জ্যারটেক বাজারের এক ইজারাদার মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিধি-নিষেধ মেনে সাজানো হয়েছে পুরো হাট। করোনার কারণে কত ক্রেতা আসবেন তা আমরা এখনও বুঝে উঠতে পারছি না। তবে আমরা হাটের প্রায় সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করেছি। নিরাপত্তার জন্য মাঠে থাকবে শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক। প্রতিটি কাউন্টারে জীবাণুনাশক স্প্রে ও সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা থাকবে। গরু যত বড় কিনবেন না কেন, হাসিল নাম মাত্র তিন হাজার টাকা। তিনি আরও বলেন, ক্রেতারা যেন সুন্দর পরিবেশে কোরবানির পশু কিনতে পারেন তার জন্য আমরা সার্বক্ষণিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যবস্থা করেছি। ক্রেতা বিক্রেতার নিরাপত্তার জন্য পুরো বাজার জুঁড়ে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামরা। পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্যও থাকছে ৫ জন পশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম, থাকছে জাল নোট সনান্ত করণের মেশিন।
কর্ণফুলী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, করোনা মহামারির কারণে হাট ব্যবস্থাপনায় বেশকিছু গাইডলাইন দেওয়া হয়েছে বাজার ইজারাদারদের। হাটের প্রবেশপথে ব্যধতামূলক হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে মাস্ক পরতে হবে ক্রেতা-বিক্রেতাদের। প্রশাসনের কঠোর নজরদারী থাকবে পুরো হাট জুড়ে।