নিপার মৃত্যুর পর এখনও অরক্ষিত ড্রেন

পাহাড়তলীর বাদামতল এলাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক »

বৃষ্টিতে ড্রেনে পড়ে এক মেয়ের মৃত্যুর ঘটনার পরেও এখনও ড্রেনটি সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ঘটনার ৪ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও টনক নড়েনি কর্তৃপক্ষের। যদিও ঘটনার পর নিহতের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। যেই ড্রেনে এ দুর্ঘটনা ঘটে, ঘটনার ৪ দিন পরও এখনও কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি।

জানা যায়, ৭ আগস্ট টানা বর্ষণের ফলে ১ নম্বর পাহাড়তলীর বাদামতল এলাকায় ড্রেনের উপচেপড়া পানিতে পড়ে মৃত্যু ঘটে হাটহাজারী কলেজের ছাত্রী নিপা পালিতের। ঘটনার পরদিন (৮ আগস্ট) মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নিহতের দাদা বাদল পালিতের হাতে নগদ ১ লাখ টাকা প্রদান করেন। তবে নিপা যে ড্রেনে পড়ে মারা গিয়েছেন সেই স্থানটি এখনও অরক্ষিত। বৃষ্টি বাড়লে যেকোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। দক্ষিণ পাহাড়তলীর ১ নম্বর ওয়ার্ডে সিটি কর্পোরেশনের আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের আওতায় ৮ কোটি টাকার রাস্তাÑড্রেন সংস্কার ও নির্মাণ কাজ চলমান। কিন্তু নিপার মৃত্যুর ৪দিন পরও ড্রেনটি সুরক্ষিত করার কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

নিহতের দাদা বাদল পালিত বলেন, ‘৩ বছর আগে নিপার মৃগীরোগ ধরা পড়েছিলো। তখন খিঁচুনি হতো। তিন বছরে আর সেরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। ও সাঁতার জানতো এবং পুকুরেই গোসল করতো। পানি হলেই ডুবে যাবে এমন না। তবে এবারের বৃষ্টিতে পানি বেশি হয়েছিলো। পাশ্ববর্তী ড্রেনটা ছিলো বিপজ্জনক। কারণ ড্রেনটি সরু এবং খোলা। পানিতে ডুবে গেলে দেখা যায়না। দুই পা একসাথে পড়লে সেখান থেকে উঠা কষ্ট। পানির ¯্রােতও বেশি ছিলো। পড়ে গিয়ে হয়তো উঠে আসার চেষ্টাও করেছে। কিন্তু সকাল বেলা বৃষ্টিতে যে যার যার কাজে ঘরে ব্যস্ত ছিলো, তাই হয়তো কেউ দেখেনি। একজন গার্মেন্টস কর্মী নিপার লাশ দেখতে পান।’

পাহাড়তলীর ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গাজী শফিউল আজিম বলেন, ‘আমি ঘটনার দিন এবং ঘটনার পর দিন সকাল থেকে সেখানে ছিলাম। কারো জীবনের ক্ষতিপূরণ কি সম্ভব? সম্ভব না। তারপরও ঘটনার পরদিন মেয়র সেখানে উপস্থিত হয়ে নগদ ১ লাখ টাকা নিহতের দাদার হাতে তুলে দেন। নিহতের পরিবারের অবস্থা খুবই শোচনীয়। তার বাবা খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী ছিলেন। বর্তমানে ঋণের দায়ে ঘর ছেড়ে আত্মগোপনে আছেন। মাও ছোট বোনকে নিয়ে বাপের বাড়িতে থাকছেন। ছোট বোন উপমা পালিত ইন্টারমিডিয়েট পড়ছে। মেয়র সাহেব উপমাকে সিটি কর্পোরেশনে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। মেয়েটারও চাকরি করার ইচ্ছে আছে। আমরা চেষ্টা করছি সরকারিভাবে যদি আরো কিছু সহায়তা প্রদান করা যায়। এজন্য যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে আমরা ডিসি মহোদয়ের সাথেও কথা বলে সেগুলো মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর ব্যবস্থা করছি।’

ড্রেন সুরক্ষিত করার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমাদের সিটি করপোরেশনে ইতোমধ্যে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার কাজ চলছে। এরমধ্যে রাস্তা, ড্রেন ইত্যাদি মেরামত ও নির্মাণের জন্য ৮ কোটি টাকার কাজ ওয়ার্ডে চলমান আছে গত দেড় মাস যাবত। এছাড়া আরো ৩ কোটি টাকার কাজের টেন্ডার এখানে হয়েছে। ওয়ার্ক অর্ডার পেলে আমরা কাজটা শুরু করবো। তখন আমরা নিশ্চয়ই এই ড্রেন সুরক্ষিত করার কাজ করবো। ’