সুপ্রভাত ডেস্ক:
নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লায় মসজিদের এসি বিস্ফোরণে দগ্ধদের মধ্যে আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে; মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে মোট ২৩ জন।
দগ্ধদের মধ্যে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে যে ১৪ জন ভর্তি আছেন, তাদের অবস্থাও সঙ্কটাপন্ন বলে ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক পার্থ শংকর পাল জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের বাইতুস সালাত জামে মসজিদ থেকে দগ্ধ অবস্থায় যে ৩৭ জনকে বার্ন ইনস্টিটিউটে আনা হয়েছিলে, তাদের মধ্যে ২১ জনের মৃত্যু হয় শনিবার রাত ১১টা পর্যন্ত।
এরপর রোববার ভোরের মধ্যে মারা যান জুলহাস উদ্দিন (৩০) ও শামীম হোসেন (৪৮) নামে দুজন। তাদের নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৩ জন হয়।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন জানান, রাতে যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে শামীম হোসেন ছিলেন ওই মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ। বাইতুস সালাত জামে মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনও এর আগে মারা গেছেন।
ওসি আসলাম হোসেন জানান, যে ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে ২০ জনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তাদের দাফনও করা হয়েছে।
বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত নারায়ণগঞ্জের বাইতুস সালাত জামে মসজিদে শনিবার সকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। শুক্রবার রাতে এশার নামাজের পর মসজিদটিতে আধা ডজন শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র একসঙ্গে বিস্ফোরিত হয়ে ১১ জনের মৃত্যু ঘটে।বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত নারায়ণগঞ্জের বাইতুস সালাত জামে মসজিদে শনিবার সকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। শুক্রবার রাতে এশার নামাজের পর মসজিদটিতে আধা ডজন শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র একসঙ্গে বিস্ফোরিত হয়ে ১১ জনের মৃত্যু ঘটে।নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকার বায়তুস সালাত জামে মসজিদে এশার নামাজের সময় ছয়টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রে একসঙ্গে বিস্ফোরণ ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আধা ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
সে সময় মসজিদে থাকা অর্ধশতাধিক মানুষের সবাই কমবেশি দগ্ধ হন। তাদের মধ্যে ৩৭ জনকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।
ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, “যারা ভর্তি আছেন, তারা কেউ শঙ্কামুক্ত নন। তাদের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ বলা যায়।”
নারায়ণগঞ্জের ডিসি জসিম উদ্দিন শনিবার সকালে বার্ন ইনস্টিটিউটে যান। তিনি মৃতদের পরিবারকে ২০ হাজার এবং আহতদের ১০ হাজার টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
ফায়ার সার্ভিস বলছে, ওই মসজিদের নিচ দিয়ে তিতাসের যে গ্যাসের পাইপ গেছে, সেখানে লিকেজ থেকে গ্যাস জমে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে বিস্ফোরণ ঘটেছে প্রাথমিকভাবে তারা ধারণা করছে।
ফায়ার ব্রিগেডের উপপরিচালক দেবাশীষ বর্ধন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এসিতে ব্যবহৃত ফ্রেয়ন গ্যাসের অস্তিত্ব আমরা মসজিদের ভেতরে বাতাসে পেয়েছি। এর পেছনে অন্য কোনো ঘটনা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”এ ঘটনা তদন্তে ফায়ার সার্ভিস, তিতাস গ্যাস ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।