সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে নগরীর বাজারগুলো থেকে পলিথিনমুক্ত করার ঘোষণা দিয়ে বলেন, ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নগরীর বাজারগুলোতে তাদের স্ব স্ব কমিটির উদ্যোগে মাইকিং, পোস্টার, ফ্যাস্টুন, ব্যানার, লিফলেটের মাধ্যমে সকল ধরনের প্রচার-প্রচারণা চালাবেন। তিনি ৪১টি ওয়ার্ডের বাজারগুলোতে স্ব স্ব কাউন্সিলরদেরও বাজার কমিটির সঙ্গে সমন্বয়পূর্বক প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিতে নির্দেশনা দেন। ১০ ফেব্রুয়ারির পর থেকে চসিক ম্যাজিস্ট্রেট বাজার পরিদর্শন করে ব্যবসায়ীদের নির্দেশনা ও সতর্কতা প্রদান করবেন। ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে বাজারে কোন পলিথিন পাওয়া গেলে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে জরিমানাসহ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
গতকাল বুধবার সকালে টাইগারপাসের নগর ভবনে চসিক পরিচালিত নগরীর বিভিন্ন বাজার কমিটির প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
চসিক পরিবেশ স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি শৈবাল দাশ সুমনের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন প্যানেল মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন, কাউন্সিলর আবদুস সালাম মাসুম, মো. শফিকুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত সচিব ও প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম, মেয়রের একান্ত মুহাম্মদ আবুল হাশেম, পাহাড়তলী বাজার সমিতির সভাপতি মো. কামরুল ইসলাম, ফইল্ল্যাতলী বাজার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম উদ্দিন, ফকিরহাট বাজার দোকান মালিক সমিতি এমএ আজাদ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সোহেল, নতুন বাজার কমিটির সভাপতি হাজী মো. আব্দুল লতিফ, ফিরিঙ্গীবাজার বাজার কমিটির সভাপতি মো. আনসার উদ্দিন।
মেয়র আরো বলেন, পলিথিন নগরবাসীর জন্য একটি অভিশাপ। এ পলিথিনের কারণে নগরীর জলাবদ্ধতা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। পলিথিনের কারণে নালা-নর্দমায় পানি জমে মশার প্রজনন অতিমাত্রায় বেড়ে গেছে। পলিথিন কর্ণফুলী নদীর তলদেশে জমাট হয়ে ৮ ফুটের বেশি শক্ত স্তর তৈরি করেছে যা কর্ণফুলী নদীতে ড্রেজিং করতে গিয়ে মারাত্মক ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। নেদারল্যান্ড থেকে অত্যাধুনিক ড্রেজিং মেশিন এনেও নদীর পুরু পলিথিন স্তর ভেদ করে ড্রেজিং সম্পন্ন কঠিন হয়ে পড়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে অচিরেই কর্ণফুলী নদী নাব্যতা হারিয়ে মরা নদীতে পরিণত হবে। কর্ণফুলীর নদীর পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেলে চট্টগ্রাম বন্দর কার্যকারিতা হারাবে, ফলে এর পরিণাম ভয়াবহ হয়ে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিকে প্রভাব পড়বে। এ অবস্থায় পরিবেশের ক্যান্সারস্বরূপ এ পলিথিন ব্যবহার বন্ধ করা সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন বলেন, ইতিপূর্বে চসিকের উদ্যোগে পরীক্ষামূলকভাবে কাজীর দেউড়ি, চকবাজার ও কর্ণফুলী মার্কেটে শতভাগ পলিথিনমুক্ত করা হয়েছে। একাজ করতে গিয়ে ব্যবসায়ীদের যে সহযোগিতা পাওয়া গেছে সেজন্য তারা প্রশংসারযোগ্য।
প্যানেল মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, পলিথিনের মাধ্যমে নগরীতে জলাবদ্ধতা পরিবেশ দূষণ, মাটির গুণগত মান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তিনি ব্যবসায়ী নেতাদের পলিথিন বন্ধে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
ফইল্ল্যাতলী বাজারে সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, পলিথিন যেখানে উৎপাদন হয় সেসব কারখানা ও পলিথিন বিক্রয়ের আড়তগুলো থেকে পলিথিন উৎপাদন ও বিপণন বন্ধে উদ্যোগ নিতে হবে। তিনি অবৈধ ভাসমান দোকানগুলোর মাধ্যমে ফুটপাতে ও রাস্তায় পণ্য বিক্রয় বন্ধে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানান। বিজ্ঞপ্তি