দাম বেড়েছে মুরগির

নিজস্ব প্রতিবেদক »
পহেলা বসন্ত ও ছুটির দিনকে কেন্দ্র করে হঠাৎ ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির বাজার চড়া। মাত্র দুইদিনের ব্যবধানে ব্রয়লার, সোনালি ও লাল কক মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেড়েছে। এদিকে তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মাছের দাম।
বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর রেয়াজউদ্দিন, চকবাজার ও বকসিরহাট কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা পর্যায়ে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে কেজিতে ২০০ থেকে ২১০ টাকা যা দুইদিন আগেও বিক্রি হয়েছিল ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। আর সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা, যা কয়েকদিন আগেও বিক্রি হয়েছিল ২৮০ থেকে ২৯০ টাকা।
সরকারি বাজার তদারকি সংস্থার রেকর্ড অনুযায়ীও দাম বাড়তির সত্যতা পাওয়া যায়। সর্বশেষ রেকর্ডকৃত তথ্যমতে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৯০ থেকে ২১০ টাকা আর দেশি মুরগি ৪৮০ থেকে ৬০০ টাকা।
মো. আলাউদ্দিন নামে বেসরকারি এক প্রতিষ্ঠানের কর্মরত এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা হলো রেয়াজউদ্দিন বাজারের মুরগির দোকানে। তিনি জানালেন, ছুটির দিনে মেহমান আসবেন, সেজন্য মুরগি কিনতে আসা। কিছুটা হতাশা প্রকাশ করে বললেন, ‘সোনালি মুরগি কিনতে এসেছিলাম। দাম বাড়ার কারণে ব্রয়লার মুরগি কিনতে হলো। আজ ব্রয়লার কিনতে হয়েছে ২১০ টাকা করে। গত সপ্তাহে কিনেছিলাম ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা। বর্তমানে ব্যবসায়ীরা মানুষের ছুটি, অনুষ্ঠান দেখলে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। এসব দেখার মতো কেউ নেই।’
হঠাৎ দুইদিনের ব্যবধানে ৩০ থেকে ৪০ টাকা দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে বকসিরহাটের পোল্ট্রি ব্যবসায়ী আবুল কালাম বলেন, ‘মধ্যস্বত্ব কারবারিরা মুরগির দাম বাড়িয়েছে। আমরা কয়েক টাকা লাভে বিক্রি করি। আপনারা পাইকারদের থেকে জিজ্ঞেস করুন।’
এদিকে পাইকারি মুরগি সরবরাহকারী আমানত শাহ ট্রেডিংয়ের এর মালিক মো. হান্নান চৌধুরী বলেন, ‘সামাজিক অনুষ্ঠানের কারণে পোল্ট্রি ফার্মগুলোতে মুরগির যোগান কম। আর যেসব র্ফামে মুরগি তুলেছে তা এখনো বিক্রি করার মত ওজন হয়নি। যার ফলে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয়। যোগান অনুযায়ী অল্প মুরগি পাওয়া গেলেও সরবরাহ খরচ বাড়তির কারণে সাময়িকভাবে দাম বেড়েছে।’
এদিকে মুরগির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মাছের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সকল মাছের দাম বেড়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। বাজারে রুই, কাতলা জাতীয় কার্প জাতের মাছ বিক্রি হয়েছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, দেশি চাষের কই, শিং, পাবদা, মাগুর বিক্রি হয়েছে ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা আর নাইলোটিকা ও পাঙ্গাস বিক্রি হয়েছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। সমুদ্রের রুপচান্দা ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, মাইট্যা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, পোঁয়া ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, লইট্যা ১৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘সমুদ্রের মাছ সরবরাহ কমেছে। চাষের মাছেরও যোগান কম। যার ফলে দাম বেড়েছে।’
চড়া দামের মধ্যে স্থিতিতে রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা আর খাসির ১ হাজার ১০০ টাকা । ফার্মের লাল ডিমের প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা।
গত সপÍাহের মতো স্থিতিতে রয়েছে সবজির বাজার। বাজারে আলু ২৫ থেকে ৩০ টাকা, এবং ফুলকপি, বাধাকপি, শিম, গাজর, শালগম, বেগুন, শশা, মুলা, লাউয়ের মতো শীতকালীন সবজি বিক্রি করছে মানভেদে ২৫ থেকে ৪০ টাকা। আকারভেদে শাকের আঁটি ১০ থেকে ১৫ টাকা।
এছাড়া পাইকারিতে দাম কমলেও খুচরাবাজারে কমেনি পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের বাজার। খুচরাতে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১২০ থেকে ১৩৫ টাকা, আদা ও রসুন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা। দামে পরিবর্তন আসেনি ডাল, ভোজ্যতেল, লবণ, চিনি, হলুদ, মরিচের মতো পণ্যেগুলোরও।