সুপ্রভাত ডেস্ক »
কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় দরিদ্র দেশগুলোকে ১০০ কোটি ডোজ টিকা দিতে উন্নত দেশগুলোর জোট জি-৭ রাজি হবে বলে আশা করছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই জোরদার করতে ফাইজারের ৫০ কোটি ডোজ টিকা বিতরণের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ঘোষণার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই এই আশার বাণী শুনিয়েছেন জনসন। যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, উদ্বৃত্ত থাকা কমপক্ষে ১০ কোটি ডোজ টিকা দরিদ্র দেশগুলোতে বিতরণ করবে তার দেশ।
“যুক্তরাজ্যের টিকাদান কর্মসূচির সাফল্যের ফলে আমরা একটি অবস্থানে যেতে পেরেছি যেখানে আমাদের কাছে টিকার উদ্বৃত্ত ডোজ রয়েছে এবং সেগুলো আমরা তাদের দেব যাদের এটা দরকার। আর এটা করার মাধ্যমে মহামারীকে পরাজিত করার পথে আমরা অনেক বড় একটি পদক্ষেপ নিতে পারব,” বলেছেন জনসন।
২০২২ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ টিকাদান শেষ করতে টিকা বিতরণের প্রতিশ্রুতি দিতে জি-৭ জোট নেতাদের প্রতি জনসন আহ্বান জানিয়েছেন।
রয়টার্স জানিয়েছে, ব্রিটেনের কারবিস বে-তে শুক্রবার শুরু হতে যাওয়া তিন দিনের এই শীর্ষ সম্মেলনে ১০০ কোটি ডোজ টিকা দাতব্য সহায়তা হিসেবে বিতরণের ঘোষণা আসতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
তবে একটি পক্ষ এই পরিকল্পনার সমালোচনা করে বলছে, এই উদ্যোগ হবে সাগরে কয়েক ফোটা পানি ফেলার মতো ঘটনা। অক্সফামের হিসাবে প্রায় ৪০০ কোটি মানুষ কোভিডের টিকার জন্য কোভ্যাক্সের ওপর নির্ভর করে আছে, যে কর্মসূচির মাধ্যমে নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোতে টিকা বিতরণ করা হচ্ছে।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনে কোভিড-১৯ মহামারী শুরুর পর ২১০টি দেশ ও অঞ্চলে এই ভাইরাস ছড়িয়েছে। বিশ্বে প্রায় ৩৯ লাখ মানুষ এই রোগে মারা গেছে এবং বৈশ্বিক অর্থনীতি অনেকটাই মুখ থুবড়ে পড়েছে।
বিজ্ঞানীরা বিদ্যুৎগতিতে বাজারে এই রোগের টিকা আনতে পারলেও তারা জানিয়েছেন, সব দেশের মানুষকে টিকার আওতায় আনা সম্ভব হলেই শুধু এই মহামারী থামানো সম্ভব। এখন পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে ৭৭ শতাংশ ও যুক্তরাষ্ট্রে ৬৪ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে অন্তত এক ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে।
পৃথিবীর জনসংখ্যা ৮০০ কোটির কাছাকাছি পৌঁছেছে এবং বেশিরভাগ মানুষের দুই ডোজ টিকা দরকার- এমন বাস্তবতা তুলে ধরে অনেকেই বলছেন, দরিদ্র দেশগুলোকে টিকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে একটা উদ্যোগ শুরু হয়েছে, কিন্তু বিশ্ব নেতাদের এ বিষয়ে আরও অনেক করণীয় আছে এবং আরও দ্রুততার সঙ্গে তা করতে হবে।
দারিদ্র্য দূরীকরণে কাজ করা ‘ওয়ান’ এর লিস ওয়ালেস বলেন, “জি-৭ যে ১০০ কোটি ডোজ বিতরণের প্রতিশ্রুতি দিতে যাচ্ছে সেটাকে সর্বনিম্ন হিসেবে বিবেচনা করতে হবে এবং সময়সীমা আরও দ্রুততর করতে হবে। আমরা ভাইরাসের সঙ্গে একটি দৌড় প্রতিযোগিতায় রয়েছি। এটা যতটা এগিয়ে থাকবে, তত বেশি নতুন ঝুঁকি বাড়বে, যা বৈশ্বিক অগ্রগতিকে ছাপিয়ে যাবে।”
যুক্তরাজ্যের দান করা ১০ কোটি ডোজের মধ্যে আট কোটিই বিতরণ করা হবে কোভ্যাক্সের মাধ্যমে যার নেতৃত্বে রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এবং বাকিগুলো দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ভিত্তিতে যেসব দেশের দরকার তাদের দেওয়া হবে।
নিজ দেশের টিকাদান কর্মসূচির জন্য এরইমধ্যে টিকার যে মজুদ গড়ে তোলা হয়েছে সেখান থেকেই ব্রিটিশ ডোজগুলো বিতরণ করা হবে এবং এগুলো অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার-বায়োএনটেক, জ্যানসেন, মডার্না ও অন্যান্য সরবরাহ থেকে এসেছে।
সূত্র : বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম