সুপ্রভাত ডেস্ক »
রাজধানীসহ দেশজুড়ে মৃদু তাপপ্রবাহের কারণে অস্বস্তিকর গরমে ভোগান্তি নেমেছে জনজীবনে; দুপুরের পর তাপমাত্রা বেশি বাড়লে গত কয়েক দিনের তুলনায় বেশি কষ্টকর ছিল পরিস্থিতি। এদিকে সাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ায় উপকূলে ঝড়ো হাওয়ার শঙ্কায় বন্দরগুলোতে তিন নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ময়মনসিংহে ৩৭.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন রাজধানীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে এরচেয়ে অনেক বেশি গরম অনুভূত হয়েছে বলে মনে করছেন নগরবাসী।
আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান বলেন, এখন দেশজুড়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রাও বাড়ছে। অগাস্টের মাঝামাঝি বৃষ্টি কম থাকায় এমন গরম আবহাওয়া বিরাজ করছে। দুয়েকদিন পর বৃষ্টি হওয়ার আভাস রয়েছে।
বিরাজমান তাপপ্রবাহ শুক্রবারও অব্যাহত থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, ধীরে ধীরে বৃষ্টির প্রবণতা বাড়লে তাপপ্রবাহ কমবে।
চলতি মৌসুমে বর্ষায়ও অস্বস্তিকর গরমের রেশ ছিল। তুলনামুলক কম বৃষ্টি থাকায় জুলাইয়ে দীর্ঘ সময় তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। আবহাওয়ার এমন পরিস্থিতির রমধ্যে শুরু হওয়া ভাদ্র মাসেও বেশ গরম বিরাজ করছে সর্বত্র।
আবহাওয়াবিদ হাফিজুর জানান, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে নি¤œচাপে রূপ নিতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য মতে, লঘুচাপের প্রভাবে গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালা সৃষ্টি হওয়ায় দেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেজন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায়, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে।
গত জুলাইয়েও দীর্ঘদিন টানা তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। এসময় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠেছিল রাজশাহী ও সৈয়দপুরে।
চলতি মাসে বিচ্ছিন্নভাবে মৃদু তাপপ্রবাহ (সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬-৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বয়ে যেতে পারে বলেও আভাস দিয়েছিল অধিদপ্তর।
থার্মোমিটারের পারদ যদি ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠে আবহাওয়াবিদরা তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলেন। উষ্ণতা বেড়ে ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তাকে বলা হয় মাঝারি তাপপ্রবাহ। আর তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেলে তীব্র তাপপ্রবাহ ধরা হয়।
বুধবার গোপালগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ জেলাসহ রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ ও খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ শুরু হয়। ওইদিন সৈয়দপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এ বছর এপ্রিলে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠেছিল রাজশাহীতে।
২০২১ সালেও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল যশোরে ৪১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস; ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এর আগে ২০১৪ সালে চুয়াডাঙ্গায় ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল। একই বছর ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও ৪০ ডিগ্রিতে উঠেছিল।