আজিজুল কদির :
করোনাভাইরাসের এ সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও নিরাপদ দূরত্ব বাজায় রেখে কীভাবে পশুর হাট বসবে, একথা মাথায় রেখে কেউ-কেউ অনলাইনে সেরে নিচ্ছেন পশু কেনাবেচা। অনলাইনে (ফেসবুক) জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। এবার নগরীতে শতাধিক খামারি অনলাইনেই কোরবানির পশু বিক্রি করছেন।
খামারিরা ফেসবুক ভিত্তিক বিভিন্ন পেজ ও গ্রুপে পশুর ছবি পোস্ট করেন, সঙ্গে ওজন ও দামও লিখে দেন। তারপর ক্রেতাদের পছন্দ হলে মুঠোফোনে কথা বলে সরাসরি খামারে এসে পছন্দের গরু কিনছেন। অনলাইনের এই হাটে কোনও ঝক্কিঝামেলা নেই। কিছু মৌসুমী ব্যবসায়ীও এবার হাটে গরু আনার পাশাপাশি অনলাইনে গরু বিক্রি করছেন।
করোনাভাইরাসের কারণে এবার হাটে কোরবানি দাতাদের আগ্রহ কম থাকায় ব্যবসায়ীরা অনলাইন প্লাটফর্মে ঝুঁকছেন। করোনার কারণে এবার ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলোর পাশাপাশি অনেক খামারি, ফার্ম বিশেষ করে ফেসবুকে পেজ খুলে গরু বিক্রির তথ্য প্রকাশ করছে, বিজ্ঞাপনও দিচ্ছে।
আর তেমনি একটা প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল মিট যারা শুরু থেকে হালাল মাংসের পাশাপাশি স্টেরয়েড, এফএমডি-৬, এনথ্রাক্স ও গ্রোথ হরমোনমুক্ত সম্পূর্ণ নিরাপদ ও সুস্থ গরু বিক্রি করে আসছে। এমনকি হালাল কোরবানি ও বিশ্বমানের নিরাপদ খাদ্য নীতিমালা অনুযায়ী মাংস প্রসেসিং এবং ডোর স্টেপ ডেলিভারির সুব্যবস্থা আছে বলে সুপ্রভাতকে জানান বেঙ্গল মিটের জিইসি মোড় শাখার ইনচার্জ মো. শফিকুল ইসলাম।
তিনি আরো জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে হাটে গিয়ে গরু কেনায় যে স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে, সে কথা মাথায় রেখেই সাজানো হয়েছে এবারের প্লাটফর্মটি। পাশাপাশি উন্মুক্ত স্থানে কোরবানি ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে প্রসেসিংয়ের চিন্তামুক্ত থাকতে ক্রেতারা গ্রহণ করতে পারবেন পরিপূর্ণ প্রসেসিং সেবাও।
ফলে গরু বাছাই থেকে পেমেন্ট সব কিছুর ব্যবস্থাই থাকছে অনলাইন কোরবানির হাটে।
ফলে দেশের বাইরে অবস্থানরত বাঙালিরাও প্রিয়জনের জন্য অর্ডার করতে পারবেন কোরবানির গরু। আর বাছাইকৃত গরু কিংবা প্রসেসিং সেবায় প্রস্তুতকৃত মাংস পৌঁছে যাবে গ্রাহকের ঠিকানায়। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে এ সার্ভিস ঈদের দ্বিতীয় দিন হতে ঢাকা সিটি এবং ঈদের ষষ্ঠ দিন হতে সিলেট ও চট্টগ্রাম সিটির গ্রাহকরা পাবেন।
এদিকে পশুর হাটে ক্রেতার আনাগোনা কম হলেও অনলাইনে কোরবানির পশু বেচা-কেনা করছেন ডেইরি ফার্মের মালিকরা। নগরীর ও জেলার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে তোলা খামারিরা তাদের পশু অনলাইনে বিক্রি করছেন। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে ক্রেতারাও ঝুঁকছেন অনলাইনে। ফেসবুক পেজ অথবা অনলাইনে গরু দেখে ক্রেতারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে খামারে যাচ্ছেন। এরপর গরু কিনে বাসায় ফিরছেন।
নগরীর বাকলিয়া এলাকার হাজী আনোয়ার ডেইরি ফার্মের মালিক মো. ইমরান সুপ্রভাতকে জানান, আমার খামারে ৪০টির মতো গরু ছিল। ইতোমধ্যে ১৭টির মতো গরু বিক্রি করেছি অনলাইনে। মূলত: ফেসবুকে পোস্ট দেখে গরু কিনছেন ক্রেতারা। এখন আমার খামারে ৩২ মণ মাংসের একটি ষাঁড় আছে। যার নাম বড় মিয়া। অনলাইনে এটি পোস্ট করার পর খুব সাড়া পাচ্ছি। ইতোমধ্যে ষাঁড়টির দাম সাত লাখ উঠেছে। উপযুক্ত দাম পেলে গরুটি বিক্রি করে দেবো।
নগরীর আন্দরকিল্লার বাসিন্দা ব্যবসায়ী মো. আলাউদ্দিন জানান, প্রত্যেক বছর পশুর হাটে গিয়ে কোরবানির গরু কিনতাম।
এবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি হাটে না গিয়ে অনলাইনে গরু কিনবো। করোনাভাইরাসের কারণেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অনলাইনে একটি গরু ঠিক করেছি। ফার্মের অনলাইনের বর্ণনার সঙ্গে বাস্তবে মিল থাকলে কিনে নিয়ে আসব।