সুপ্রভাত ডেস্ক »
কক্সবাজারের টেকনাফে মানবপাচারের একটি বড় পরিকল্পনা নস্যাৎ করার দাবি করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
শনিবার (৪ অক্টোবর) টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) এর একটি বিশেষ দল শাহপরীরদ্বীপের মিস্ত্রিপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাচারচক্রের ৬ সক্রিয় সদস্যকে আটক করে। এ সময় আরও চারজন পাচারকারী পালিয়ে যায়।
রোববার (৫ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১২টার কিছু পরে বিজিবির পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আটক ব্যক্তিরা মিয়ানমার থেকে কিছু মানুষকে সাগরপথে এনে টেকনাফের মিস্ত্রিপাড়ায় স্থানীয় এক প্রবাসীর স্ত্রী মোছা. শামসুন্নাহারের বাড়িতে লুকিয়ে রেখেছিল। পরে তাদের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমানের নেতৃত্বে ওই বাড়ি ঘেরাও করা হয়।
বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে পাচারচক্রের দুজন পেছনের দিক দিয়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে বিজিবি সদস্যরা বাড়িতে প্রবেশ করে প্লাস্টিকের ছাউনি দেওয়া একটি ঘর থেকে শামসুন্নাহারসহ ছয়জনকে আটক করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শামসুন্নাহার বিজিবিকে জানান, টাকার বিনিময়ে পাচার হওয়া লোকজনকে তিনি নিজের বাড়িতে আশ্রয় দিতেন। অন্য আটক সদস্যরাও স্বীকার করেন, তারা মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে লোকজন এনে টেকনাফ ও উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পে পৌঁছে দিতেন এবং মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তাদের জন্য জাল এফডিএমএন (Forcibly Displaced Myanmar Nationals) কার্ড সংগ্রহে সহায়তা করতেন।
আটক ব্যক্তিরা হলেন- টেকনাফের সারবাং ইউনিয়নের মিস্ত্রিপাড়ার মোছাঃ শামসুন্নাহার (৩৫), উখিয়ার ২০ নম্বর বালুখালী ক্যাম্পের হোসনে আরা (৩১), মোহাম্মদ ইসমাইল (৫০), ১৫ নম্বর জামতলি ক্যাম্পের হারুন (৩৫), ২৬ নম্বর শালবাগান ক্যাম্পের নুরুন্নিসা (৪৯) এবং ইউসুফ আলী (৪৭)।
পলাতকদের মধ্যে রয়েছেন কালু মিয়া (৩৫), হাশেম মোল্লা (২৫) ও অজ্ঞাতনামা আরও দুজন।
বিজিবি আটককৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে টেকনাফ থানায় হস্তান্তর করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
অভিযান সম্পর্কে লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান ঢাকা পোস্টকে মুঠোফোনে বলেন, মানব পাচার ও মাদকের বিরুদ্ধে বিজিবি সবসময় জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে। আজকের অভিযান তারই ধারাবাহিক সাফল্য। দেশের নিরাপত্তা ও মানুষের জীবন রক্ষায় এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।