বাসস :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলা ও ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আজ বাংলাদেশে গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশন (জিসিএ)’র দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক অফিস উদ্বোধন করেন। তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন একটি বৈশ্বিক সমস্যা। তাই আমি জলবায়ুর ঝুঁকি মোকাবেলার পাশাপাশি এ বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য প্রতিশ্রুত চাঁদার পরিমাণ বাড়াতে সকল দেশের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং জিসিএ’র সভাপতি ও সাবেক জাতিসংঘ মহাসচিব বান-কি-মুন যৌথভাবে বাংলাদেশে জিসিএ’র আঞ্চলিক অফিস ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেন। ঢাকায় আঞ্চলিক শাখার এই উদ্বোধন বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর প্রতি উৎসর্গ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন যে এই অফিস এই অঞ্চলে ‘সেন্টার অব এক্সেলেন্স’ এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় অভিযোজন সমস্যা সমাধানের সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি যে এই অফিসটি বাংলাদেশ ও এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশের সর্বোত্তম অভিযোজন সমস্যার সমাধান চর্চা করবে এবং এর মাধ্যমে দেশগুলো পরস্পরকে সহায়তা করবে। এ অঞ্চলের অভিযোজন সমাধান ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের সাথে খাপ খাওয়ানোর উপায় বের করতে এটা হবে একটি সেন্টার অব এক্সেলেন্স।’
ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্চ রুট এবং জিসিএ’র সভাপতি ও জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান-কি-মুন এই ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে অংশ নেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন রোটারড্যামের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্রফেসর ড. প্যাট্রিক ভি. ভার্কুজেন।
বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী এএইচএম মুস্তফা কামাল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন এবং পরিবেন, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন এবং ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, মালদ্বীপ ও ভুটানসহ দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরাও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
শেখ হাসিনা এও আশা করেন যে জিসিএ ঢাকা অফিস আগামী দুই বছরের জন্য ইউএনএফসিসিসি প্রক্রিয়াধীন জলবায়ু ভিত্তিক দুটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সংস্থা ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম ও ভালনারেবল-২০’র সভাপতির পদ লাভে আমাদের সাহায্য করবে। প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘ মেয়াদে ডেল্টা কোয়ালিশনকে সহায়তার উপায় বের করতে জিসিএ’র প্রতি আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা করোনাভাইরাসের অভিঘাত মোকাবেলায়ও দেশগুলোর মধ্যে বৃহত্তর সহযোগিতার আহ্বান জানান।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবেলায় দেশগুলোর মধ্যে বৃহত্তর সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। আমাদের এই উদ্ভুত পরিস্থিতিতে এবং ভবিষ্যতে যে কোন বিপর্যয়ে পরস্পরকে দূরে না রেখে ঐক্যবদ্ধভাবে এই পরিস্থিতির মোকাবেলা করা অত্যন্ত জরুরি।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ এশিয়া ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, খরা, আকস্মিক বড় ধরনের বন্যা, ভূমিধস ও তুষারধসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে। পরিস্থিতি এতোটাই শোচনীয় যে তাপমাত্রা যদি আর মাত্র ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসও বৃদ্ধি পায়, তবে বাংলাদেশ ও তৎসংলগ্ন অঞ্চলে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসবে। তিনি বলেন, ‘এছাড়া আমাদের নারী, শিশু, বয়স্ক মানুষের ঝুঁকির কথা ভুলে যাওয়া উচিৎ নয়।’