জনবল সংকটের কারণে কাজের গতি বাড়ছে না চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের। বিশেষ করে পরিচ্ছন্নতা, রাজস্ব, সচিবালয়, স্বাস্থ্য, প্রকৌশল ও শিক্ষা বিভাগ ভুগছে ব্যাপক জনবল সংকটে।
৯৬০৪ জনের প্রয়োজন থাকলেও এর বিপরীতে রয়েছে স্থায়ী ২ হাজার ৬৩৫ জন ও অস্থায়ী ৬ হাজার ১৩৫ জন। জনবল সংকট কমাতে ২০২০ সালে একবার এবং ২০২১ সালে দু’বার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলেও নিয়োগ দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে চাকরির বয়স শেষে অবসর, মৃত্যু ও স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে দেওয়ার কারণে মোট শূন্য পদ সৃষ্টি হয়েছে ১ হাজার ৫৬৯ জন।
অথচ বর্তমানে চসিক নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি আড়াই হাজার কোটি টাকার এয়ারপোর্ট রোডসহ বিভিন্ন সড়কগুলো উন্নয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্প এবং ২৬৭ কোটি টাকার কোভিড প্রকল্পের মতো বড়ো প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে । প্রকল্প দুটিতে প্রায় ১ হাজার ৫০০টি স্কিম চলমান রয়েছে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অর্থ সংকটের পাশাপাশি জনবল সংকট নিয়ে সংস্থার অসহায়ত্ব তুলে ধরতে শেষ পর্যন্ত সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন চসিকের সচিব খালেদ মাহমুদ। তিনি সুপ্রভাতকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে জনবল সংকট নিয়ে যে সমস্যা, সেটি দীর্ঘদিনের। এ সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য আমরা বেশ কয়েকবার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি। বৈঠকও করেছি। কিন্তু কোনো ফল পাইনি। তিনবার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পরও আমরা লোকবল নিতে পারিনি। এর একমাত্র কারণ হলো অস্থায়ী নিয়োগ পেয়ে যারা সিটি করপোরেশনে কাজ করছেন, তারাই আন্দোলন করে নিয়োগ প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করছেন। তাই আমরা জনবল সংকট থেকে মুক্ত হতে পারছি না।’
এই জটিলতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অস্থায়ীভাবে যারা কাজ করছেন, তাদের নিয়োগপত্রে স্পষ্টভাবে লেখা আছে- নো ওয়ার্ক, নো পে (কাজ নাই, মজুরি নাই)। নিয়োগ সম্পূর্ণ অস্থায়ী ভিত্তিতে হবে এবং কোন কারণ না দেখিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন চাইলে তাদের অস্থায়ী নিয়োগ বাতিল করবে। কিন্তু সিটি করপোরেশনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর পরই তারা আন্দোলন করে এবং শ্রম আদালতে মামলা করে। তাই নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল হয়ে যায়।’
এই সংকট উত্তরণে একটি স্থায়ী সমাধান বের করা দরকার। এভাবে তো একটি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না। স্থায়ী নিয়োগের ক্ষেত্রে অস্থায়ীদের মধ্য থেকে যোগ্যতা অনুসারে নিয়োগ দেওয়া যায় কিনা সেটাও বিবেচনা করা দরকার। কারণ এতদিন একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করার পর বেকার হয়ে যাওয়া কতটা মানবিক হবে তা-ও ভাবতে হবে। অন্যদিকে বছরের পর বছর প্রস্তাব ঝুলিয়ে রাখলে প্রতিষ্ঠানটি কাজ করবে কীভাবে সেটাও বিবেচনা করতে হবে মন্ত্রণালয়কে। এ প্রসঙ্গে সচিব বলেন, ‘আমরা মন্ত্রণালয়েও এ নিয়ে কথা বলেছি। কারণ তাদের কারণে শুধু চতুর্থ শ্রেণিতে নয়, বিভিন্ন পদে লোকবলের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। যা পরবর্তীতে আরও তীব্র হতে পারে।’
এখন মন্ত্রণালয় তৎপর হয় কিনা তা দেখার অপেক্ষায় থাকল চট্টগ্রাম নগরবাসী।
এ মুহূর্তের সংবাদ