একটি আকাশ
দীপক বড়ুয়া
পৃথিবীতে একটি আকাশ
আকাশ জুড়ে লক্ষ তারার মেলায়,
তারার আদর তুল বিছানায়
চকচকে চাঁদ ব্যস্ত লুডু খেলায়।
খেলার সাথী ধ্রুব তারা
ছক্কা তোলে যেই,
একবার নয় তিন ছক্কায়
চাঁদ হারালো খেই!
পরের চালে চাঁদ তুলল দুই
ধ্রুবতারা খেলছে খেলা শুই,
ধ্রুব কাটে চাঁদের পাক্কা গুটি
ইচ্ছে চাঁদের ধরবে ধ্রুবের টুটি?
চাঁদে বলে, না না না
খেলছি খেলা দু‘জন,
নীল আকাশে
বন্ধু সাথী সুজন!
হারজিতটা খেলায়
থাকে জানি,
আমরা ছিলাম বলেইতো আজ
গর্বেই আসমানী!
সোনার বাংলাদেশ
রফিকুল ইসলাম সুফিয়ান
একটি ছবি আঁকছে খুকু
রংতুলিতে মাখছে খুকু
হাজার রকম রং
দেখবে যদি সেই ছবিটার ঢঙ
আকাশ নামে দিঘির জলে
সূর্য নামে সন্ধ্যা হলে
তারার ফুলে নাচে ঢেউয়ের দল,
নাও বেয়ে যায় খেয়ার মাঝি
ছলাৎ ছলাৎ ছল,
আঁকছে খুকু কোন ছবিটা বল্?
শিউলি ভোরে ফুল কুড়ানো
চোখ জুড়ানো
পুবাকাশে টকটকে টিপ লাল,
রাঙিয়ে হাসে কৃষ্ণচূড়ার ডাল।
রংধনু রং সাতটি বাহার
ঝর্না-সাগর-নদী-পাহাড়
দিগন্তে নীল ছুঁইয়ে দিয়ে হাসে,
মেঘের সাথে ভাসে।
সেই ছবিটা আঁকছে খুকু
সেই ছবিটা আঁকছে পড়ার ফাঁকে,
যেই ছবিটা মাঠ পেরিয়ে
ঘাট পেরিয়ে
হাজার নদীর বাঁকে,
হৃদয় জুড়ে চোখের তারায় থাকে।
আঁকছে খুকু আঁকছে খুকু
হয় না আঁকা শেষ,
আঁকছে খুকু রক্তে লেখা
সোনার বাংলাদেশ।
দারুণ পরিবেশ
অভিজিত বড়ুয়া বিভু
চারপাশে সরষে হাসে
গন্ধে ভরা মাঠ,
রূপে-গুণে এ যেন এক
হলদে সোনার হাট।
ছোট্ট যত শিশু কিশোর
হাঁটছে সরষে ক্ষেতে,
তাদের সাথে মৌমাছি দল
আছে খেলায় মেতে।
সূর্যি মামার রোদ আদরে
খুশির তো নাই শেষ,
এক কথাতে মনটি রাঙায়
দারুণ পরিবেশ।
নদীর ছড়া
আহসানুল হক
বাংলাদেশের নদ- নদীর নাম
কী যে মায়াবতী
কর্ণফুলী-ধলেশ্বরী
সুরমা, মধুমতী !
আত্রাই-গড়াই, আড়িয়াল খাঁ
তিস্তা-ব্রহ্মপুত্র
নামগুলো সব কেমনে এলো
খুঁজছি যে তার সুত্র !
সন্ধ্যা নদীর পাড়ে বুঝি
সন্ধ্যা রোজই নামে
হালদা নদী যায় মুড়িয়ে
শীত কুয়াশার খামে !
কীর্তনখোলা,ধানসিঁড়িও
বইছে ছলোছলো
মধুকবির কপোতাক্ষ
যায় কি ভোলা বলো ?
নদী নিয়ে কাব্যগাথা
আছে উপখ্যানও
উথাল-পাতাল করে আমায়
পদ্মা নদীর গানও !
হেমন্তে শীতের আমেজ
জহিরুল হক বিদ্যুৎ
হাড়কাঁপুনি শীতের আভাস
পাচ্ছি আগে-ভাগে,
এবার বুঝি বাঘ পালাবেই
হিম কুয়াশার মাঘে।
সূর্যটা ঠিক ডিমের কোমল
কুসুম রঙেই হাসে,
একটু বেলা পড়ে গেলেই
আঁধার নেমে আসে।
প্রভাতবেলা গাঁও-গেরামে
খেজুর রসের আশে,
ছেলেমেয়েরা ভিড় করে সব
খেজুরগাছের পাশে।
চিয়া-চিউচিউ চিয়া-চিউচিউ
কুটুমপাখি ডাকে,
কুটুম আসবে খবর পেয়েই
ব্যস্ত দেখছি মাকে।
উড়াল পাখি
মোশতাক আহমেদ
স্বপ্নদীঘল রাতের শেষে ডাকে ভোরের পাখি
পাখির ডাকে ঘুমিয়ে থাকা রাত পোহাল নাকি?
বিলের মাঠে যাচ্ছে চাষি দূরের বিজন গাঁয়ে
ভোরের শিশু ইসকুলে যায় দৃপ্ত পায়ে পায়ে।
ঘুম ভাঙলে মন হয়ে যায় পদ্মকুসুম কলি
বাঁশির সুরে মুগ্ধতা আজ ভোরের গীতাঞ্জলি।
ঝাঁক ফড়িঙের সঙে দুটো প্রজাপতির ছানা
মিঠেল রোদের ফুল বাগানে রোজ দিয়ে যায় হানা-
কাগজি লেবুর সুবাস শুঁকে পাখির কলতানে
উদাস এ মন নেচে ওঠে পরাণমাঝির গানে।
মাঠ ছাড়িয়ে ঘাট ছাড়িয়ে ভাসিয়ে পবনতরী
চোখের পাতায় কাজল আঁকে মেঘমালা সুন্দরী।
মেঘের ফাঁকে উড়ে উড়ে পেরিয়ে শহর-পাড়া
মনটা আমার উড়াল পাখি মুক্ত বাঁধনহারা।