ছড়ার দেশ ছবির দেশ
অপু বড়ুয়া
দেশটা আমার ছড়ার দেশ
ছন্দ দিয়ে গড়ার দেশ।
পাখির গানে নদীর টানে
ছন্দ জাগায় প্রাণে প্রাণে।
বাঁশির সুরে মনটা হারায়
ছন্দ আসে মেঘের ধারায়।
দেশটা আমার ছবির দেশ
সাধক বাউল কবির দেশ।
দৃষ্টিজুড়ে সাগর বন
সৃষ্টিসুখে নাচে মন।
দূরের পাহাড় ডাকলে, আয়-
ডানপিটেরা হাত বাড়ায়।
হাওড়-বাওর ঝরনা- ঝিল
পাখনা মেলে শঙ্খচিল।
নেই তো কোনো রূপের শেষ
কোথায় আছে এমন দেশ।
নবান্নের আমেজ
নুশরাত রুমু
অগ্রহায়ণ এসে গেলো
ব্যস্ত কৃষক যারা
আমন ধানের সুগন্ধিতে
মনটা মাতোয়ারা।
ধান শুকিয়ে বেচতে গিয়ে
চড়া দামই হাঁকায়
ঋণের টাকা শোধ হবে আজ
ফসল বেচার টাকায়।
নতুন চালের পায়েস হবে
হবে পিঠা পুলি
নবান্নেরই ভোজ খাওয়াবে
হৃদয়টাকে খুলি।
আরও হবে মুড়িমুড়কি
আমন ধানের খই
মা ডেকে যায় জোর গলাতে
খোকা খুকি কই?
জবা
মাসুম মোরশেদ
সূর্য করে উঠি উঠি
ফুলটা দেখি ফুটি ফুটি
শিশির বিন্দু গায়
কিচিমিচি পাখি ডাকে
ফুলের বাগিচায়।
লাল টুকটুক বধু সেজে
বেরিয়ে আসে রঙিন লেজে
মনটা ভরে যায়
মৌমাছিরা মধু খেয়ে
গুনগুন গান গায়।
স্বাধীন দেশে স্বাধীন তুমি
কাসেম আলী রানা
তোতা পাখি, তোতা পাখি
কোথায় তোমার ঘর,
দুধের মাঝে তেঁতুল বিচি
জমছে নরম সর।
দুধের সরে বিড়াল বেজার
দাদু পড়ছে কোট,
তোমার বাসায় যাবো আমরা
রঙিন করো ঠোঁট।।
দাদু তোমায় আদর দিবে
খোকা দিবে খই,
নতুন ধানের ঘ্রাণে ঘ্রাণে
দেবে পড়ার বই।
স্বাধীন দেশে স্বাধীন তুমি
গাইবে দেশের গান,
তোমার সাথে সুর মেলাবে
মুক্তিযোদ্ধার প্রাণ।
দুষ্ট বিড়াল
নকুল শর্ম্মা
কুকুর বলে দুষ্ট বিড়াল তোর কপালে ছাই,
তিনটে বেলা মাংস ভাতে পেটটা পুরে খাই।
চুরি করে খাস বলে তুই গিন্নি মারে ঝাঁটা,
ভাগ্যের ফলে অনেক কষ্টে জোটে মাছের কাঁটা।
রাজার মতন থাকি আমি প্রভুর খেয়াল রাখি,
তোর কেবলই চুরির ধান্দা সকল কাজেই ফাঁকি।
ইঁদুর ধরে খেতে পারিস করতে পারিস কাজ,
আলসে হয়ে থাকিস বলে তোর মাথাতে বাজ।
বিড়াল তখন রেগে বলে করিসনে আর বড়াই,
আমি হলাম বাঘের মাসি এসব কী আর ডরাই।
কুকুর বলে আর বলিসনে তুই যে বাঘের মাসি,
এসব কথা শুনলে মুখে পায় যে শুধু হাসি।
করিসনে আর বাড়াবাড়ি কাজে লাগা হাত,
তবেই কিন্তু পেতে পারিস পেট পুরে দুধভাত।
গল্প অত:পর
সুবর্ণা দাশ মুনমুন
লজ্জাবতী ডাইনে রেখে মটরশুঁটি বাঁয়
ডাকলো দুপুর, দস্যি মেয়ের গল্প শুনি আয়।
শ্যাওলা পানা, বকের ছানা, মেঘের কথা শুনে
বেতস ঝোঁপে দস্যি মেয়ে ইচ্ছে রাখে গুনে।
দুপুর যখন লোকের চোখে
ভাত ঘুমে দেয় ডুব
আম, পেয়ারা, পাখির ছানা পাড়ছে সে টাপটুপ।
মা বলে ও ধেড়ে মেয়ে, ঘর-কন্নায় মন দে
এমন করেই কাটবে কি দিন বন ছাতিমের গন্ধে?
ছেলে-বুড়ো মন্দ বলে দুচোখ ঠাঁটায় লোকে
মেয়েরা যে গন্ধচাঁপা এই সমাজের চোখে।
চোখের পাতায় মেঘ নেমে আয়
মন ভালো নেই মন
মেয়ের দুখে কাঁদছে দূরের কাঁঠাল চাঁপার বন।
ডাহুক মেয়ে, তোদেরও কি সমাজ খানা অমন
উপড়ে ডানা করিস মেয়ের ইচ্ছেগুলো দমন?
মেঘ, পাখি, ফুল পর হল তার,
বর এসেছে বর
শেষ হলো এক দস্যি মেয়ের গল্প অত:পর।